সোমবার বিকালে একজন ম্যাজিস্ট্রেট ও ধানমণ্ডি থানার একজন পরিদর্শকের উপস্থিতিতে ইভ্যালির ধানমণ্ডি কার্যালয়ে থাকা দুটি লকার বৈদ্যুতিক যন্ত্রের সাহায্যে কেটে ভেঙে ফেলা হয়েছিলো। তবে হাতেগোনা টাকা দেখে নিরাশ হতে হল এই ই কমার্স প্রতিষ্ঠানটি পরিচালনায় হাই কোর্ট কর্তৃক গঠিত পরিচালনা পর্ষদ। পরে সেখানে পাওয়া যায় কিছু ব্যাংকের চেক এবং নগদ আড়াই হাজার টাকা।
ইভ্যালির পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক সাংবাদিকদের বলেন, “উপরেরটিতে আছে মিডল্যান্ড ব্যাংক ও সিটি ব্যাংকের কিছু চেক বই। নিচেরটিতে পেয়েছি ২৫৪০ টাকা। অনেকগুলো চেক বই পেয়েছি স্বাক্ষর করা। কতগুলো ইনভেলাপে টাকা ছিল, সেটা প্রমাণিত। কিন্তু সেগুলো ছিঁড়ে টাকাগুলো নিয়ে গেছে। এরকম বেশ কিছু ইনভেলপ পাওয়া গেছে।”
তিনি বলেন, “আমরা হতাশ। কারণ আমরা আশা করেছিলাম টাকা থাকবে। নইলে সিন্দুক কেন? দৈনন্দিন কাজ করার জন্য টাকা লাগে।”
ইভ্যালিকে দেউলিয়া ঘোষণা না করে এটিকে বাঁচিয়ে রাখার প্রচেষ্টা চলছে জানিয়ে অবসরপ্রাপ্ত এই বিচারপতি বলেন, “আমরা হাই কোর্ট কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত বোর্ড। এই কোম্পানিকে দেউলিয়াত্বের দিকে নিয়ে যাওয়ার নির্দেশনা ছিল। আইন হলো যখন কোনো কোম্পানি দেউলিয়া হয়ে যায়। তখন সম্পদ ও দায়-দেনার মধ্যে সামঞ্জস্য করতে হয়। তারপর পাওনাদারদের মধ্যে প্রপোরশনেটলি টাকা ফেরত দিতে হয়। আমরা হাই কোর্টে বলেছি, যদি কোম্পানিটি বাঁচিয়ে রাখা যায়, তাহলে উত্তম। আমরা এখনও আমাদের সেই নীতিতে রয়েছে।”
তবে এজন্য সময় চেয়ে তিনি বলেন, “এখন অডিট করা অতি প্রয়োজন। কমপক্ষে ছয়মাস লাগবে অডিট শুরু করে শেষ করতে। কারণ ট্রানজেকশনটা দেখতে হবে অডিটে। ট্রানজেকশন কত হয়েছে সেটা অডিটে দেখা হয়। ইভ্যালিতে হিউজ এমাউন্টের অডিট হয়েছে। হাজার হাজার কাগজ এখানে ওখানে ছিটিয়ে আছে। এগুলো ছাড়া অডিট সম্ভব নয়।
তিনি বলেন, “অডিটের জন্য হাই কোর্ট যে নাম দিয়েছে, তারা অনেক বেশি পয়সা চাচ্ছেন। হাই কোর্ট এখন নতুন নির্দেশনা দিয়েছে। আলাপ চলছে, নতুন অডিটর নিয়োগের বিষয়ে। অডিট না করলে ইভ্যালির পাওনাদার ও অ্যাসেটের বিষয়টি বোঝা যাবেনা। আমরা চেষ্টা করছি কত কম দামে অডিটর নিয়োগ দেওয়া যায় সেটা।”
নতুন করে সিটি ব্যাংক ও সাউথইস্ট ব্যাংকে ইভ্যালির ২ কোটি ৩৫ লাখ টাকার সন্ধান পাওয়া গেছে জানিয়ে বিচারপতি শামসুদ্দিন বলেন, “গত সপ্তাহে খবর পাওয়ার পর আমরা এখনও এই টাকা উত্তোলন করিনি। অনুমোদন পাওয়া গেছে। এই টাকা উত্তোলন করা হবে।”
তবে দেনাও থাকার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, “সার্ভার বন্ধ হয়ে আছে। এই সার্ভারের চালক অ্যামাজন ডটকম। তারা আমাদের কাছে ৬ কোটি টাকা পায়। এই টাকা না দিলে সার্ভার চালু করবে না। অ্যামাজন বলেছে, ইউএস এম্বাসিতে কোম্পানির বর্তমান এমডির পরিচয় দিতে। আমরা সিঙ্গাপুরের সঙ্গে যোগাযোগ করছি।”
প্রতারিত গ্রাহকদের অর্থ ফেরতের বিষয়ে তিনি বলেন, “গেটওয়েতে কত টাকা আছে আমরা জানি না। পাঁচটা গেটওয়েতে আছে ২৬ কোটি টাকার মতো। সেই টাকাটা পেলে কাস্টমার কিছু টাকা ফেরত পাবে।”
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: