ঠাকুরগাঁওয়ের রানীশংকৈল উপজেলার ধর্মগড় মুক্তার বস্তি থেকে একটি মৃত নীলগাই উদ্ধার করেছে উপজেলা প্রশাসন। শুক্রবার (২ জুলাই) দুপুরে একটি নীলগাই দেখে স্থানীয়রা ধরার চেষ্টা করলে ছুটোছুটি করতে থাকে প্রাণীটি। এক সময় একটি বাড়িতে ডুকে জানালা দিয়ে লাফ দিয়ে পড়ে গিয়েই মারা যায় অত্যন্ত নিরীহ এ প্রাণীটি।
স্থানীয়রা জানান, নীলগাইটি কয়েক দিন ধরেই এলাকায় ঘুরাঘুরি করছিল। শুক্রবার দুপুরবেলা মুক্তার বস্তির আশপাশেই ছিল। স্থানীয়রা দেখে ধাওয়া করলে নীলগাইটি ছোটাছুটি করতে থাকে। একসময় গ্রামের হামিদুর নামে এক ব্যক্তির নির্মাণাধীন ঘরের জানালা দিয়ে লাফ দিয়ে ভেতরে পড়ে গিয়েই নীলগাইটি অচেতন হয়ে পড়ে। স্থানীয় পশু চিকিৎসক প্রাথমিক চিকিৎসা দিলেও সেটিকে বাঁচানো সম্ভব হয়নি। তিনি জানা প্রাণীটি ঘটনাস্থলেই মারা গেছে।
খবর পেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) প্রীতম সাহা ঘটনাস্থলে আসেন। তিনি মুঠোফোনে এ প্রতিবেদককে বলেন, নীলগাইটি সম্ভবত ধাওয়া খেয়ে আতঙ্কে স্ট্রোক করে মারা গেছে। আমরা উপজেলা প্রাণিসম্পদ ও বন বিভাগের সঙ্গে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব। প্রয়োজন হলে ময়নাতদন্ত করা হবে।
এর আগে গত ফেব্রুয়ারিতে বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা থেকে বিলুপ্তপ্রায় বন্যপ্রাণী নীলগাই উদ্ধার করে বিজিবি। ফসলের খেতে ছোটাছুটি করতে দেখে গ্রামবাসী অপরিচিত প্রাণীটিকে ধরে ফেলে এবং মাংস খাওয়ার জন্য জবাই করার প্রস্তুতি নেয়। বিজিবি সদস্যরা আহত অবস্থায় প্রাণীটিকে উদ্ধার করে কান্তিভিটা ক্যাম্পে নিয়ে যায়। পরে উপজেলা ভেটেরিনারি সার্জন গিয়ে সেটির চিকিৎসা দেয়।
এ ছাড়া ২০১৯ সালের জানুয়ারিতে নওগাঁর মান্দা উপজেলার জোতবাজার এলাকায় ধরা পড়েছিল আরেকটি একটি পুরুষ নীলগাই। সেটিকে প্রথমে রাজশাহীর বন্যপ্রাণী উদ্ধার ও পুনর্বাসন কেন্দ্রে নেওয়া হয়। পরে অবমুক্ত করা হয় দিনাজপুরের রামসাগর জাতীয় উদ্যানের মিনি চিড়িয়াখানায়।
এরও আগে ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরে ঠাকুরগাঁওয়ের রানীশংকৈল উপজেলার যদুয়ার গ্রামের পাশ থেকে একটি নীলগাই উদ্ধার করা হয়। বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে বয়ে যাওয়া কুলিক নদীর ধারে নীলগাইটি দেখতে পান স্থানীয় জেলেরা। পরে গ্রামবাসী সেটিকে আটক করে। খবর পেয়ে স্থানীয় প্রশাসন বন বিভাগের কর্মকর্তাদের সহযোগিতায় নীলগাইটিকে উদ্ধার করে দিনাজপুরের রামসাগর জাতীয় উদ্যানে নিয়ে যায়।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: