বিগত ৩ বছরে দেশের অন্যতম বিদ্যাপিঠ হিসেবে পরিণত হয়েছে ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ। আর এ সাফল্যের পিছনে রয়েছে একজন দক্ষ ও মানবিক অধ্যক্ষ ডা: মোস্তাফিজুর রহমান। তিনি ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজে যোগদান করেন অধ্যক্ষ হিসেবে ২০২০ ইং সালের ৩০ শে জুন।
মেডিকেল কলেজ সুত্রে জানা যায়, অধ্যক্ষ ডা: মো মোস্তাফিজুর রহমানের যোগদানের পর থেকে উক্ত মেডিকেল কলেজের র্যাংকিং, ক্যাম্পাস, প্রশাসনিক পরিবর্তন সহ বিভিন্ন উন্নয়ন সাধিত হয়৷
এ ব্যাপারে ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজের ছাত্র ছাত্রী, কর্মকর্তা - কর্মচারিদের সাথে প্রতিবেদকের কথা হলে তারা বর্ণনা করেন।
তারা জানান, তার উল্লেখযোগ্য সাফল্য: বাষির্ক কর্ম সম্পাদন চুক্তি (এপিএ) ২০২২-২৩ ইং র্যাংকিং এ প্রথম স্থান অর্জন, শ্রেষ্ঠ মেডিকেল শিক্ষকদের মধ্যে ২য় ও ৩য় স্থান অর্জন, পেশাগত পরীক্ষায় ১৭ জন শিক্ষার্থীর অনার্স মার্ক অর্জন, পোষ্ট গ্রাজুয়েট ডিপ্লোমা (ডিজিও ও অর্থোপেডিক্স) পরীক্ষায় শতভাগ পাশ, গবেষণা: বিগত ১৪ বছরে ১০১ (একশত এক) টি গবেষণা সম্পন্ন হয়েছে এবং তা খবর আকারে প্রকাশিত হয়েছে। চলতি বছরে বছর ফিজওলোজী এবং কমিউনিটি মেডিসিনে শতভাগ পাশ,স্থায়ী ক্যাম্পাসে স্থানান্তর: (১লা জুলাই) ২০১৭তারিখে ১৭ একর জায়গা জুড়ে স্থায়ী নিজস্ব ক্যাম্পাসে স্থানান্তর হয়।
এছাড়া আসন সংখ্যা বৃদ্ধি, কলেজ স্থাপনের বছর ৫০ জন শিক্ষার্থী ভর্তির আসন থেকে ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পেয়ে বর্তমানে প্রতি বছর ১৮০ জন ছাত্র-ছাত্রী এমবিবিএস কোর্সে ভর্তি হয়। চলতি বছর থেকে ২০০ জন ছাত্র ছাত্রী ভর্তি হবেন।
তারা আরো জানান, পোষ্টগ্রাজুয়েশন কোর্স চালু : ২০১৬ সালের১৬ জুলাই ডি.অর্থো এবং তারপরে জুলাই/২০২০ সালে ডিজিও কোর্স চালু হয় ।
তার দায়িত্বরত অবস্থায় ০৪.০৪.২০২১ ইং এ ফরিদপুর মেডিকেল কলেজের নাম পরিবর্তন হয়ে “বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ, ফরিদপুর” করা হয় ।
স্বীকৃতি : পোষ্ট গ্রাজুয়েট ডিগ্রী সমূহ ও বিভিন্ন বিষয়ে পোষ্ট গ্রাজুয়েট ট্রেনিং বিসিপিএস ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও বিএসএমএমইউ কর্তৃক স্বীকৃত।
কোভিড ১৯ কালীন কাযর্ক্রম : নিরবছিন্ন শিক্ষা কাযর্ক্রম পরিচালনার স্বার্থে ২টি স্বয়ংসম্পূর্ন ই-ক্লাসরুম চালুকরন, প্রত্যেক বিভাগের নিজস্ব জুম আইডিতে ক্লাস ও পরীক্ষা গ্রহন এবং করোনা ল্যাব স্থাপন করে বৃহত্তর ফরিদপুরে করোনা রোগ সনাক্তকরন সুবিধা প্রদান করা হয় ।
কলেজ ক্যাম্পাসের সৌন্দর্য বর্ধন : সম্পুর্ন কলেজ ক্যাম্পাসকে ফুলবাগান ও বৃক্ষ সুশোভিত করে দৃষ্টি নন্দন করা হয়।
শেখ রাসেল রিজিওনাল ট্রেনিং সেন্টার ফর মেটার্নাল এন্ড নিওবন হেলথ স্থাপনের মাধ্যমে পদ্মার এ পারে মা ও শিশু বিষয়ক ট্রেনিং এর সুবিধা প্রদান করা হয় ।
এন্টির-র্যাগিং কার্যক্রম : গত ৩ বছর যাবত এন্টির- র্যাগিং বিরোধী কার্যক্রম গ্রহন করা হয় এবং ছাত্র –ছাত্রীদের মানসিক স্বাস্থ্য উন্নয়নে বিভিন্ন সেশন ও কার্যক্রম পরিচালনা করা হয় ।
বিভিন্ন স্থাপনা: মুজিব পুষ্প কানন, বঙ্গবন্ধু কর্ণার, বোন্স লাইব্রেরী, সমস্ত ক্যাম্পাস সিসি ক্যামেরার আওতাভূক্ত করণ ও আলেকিত করণ, একাডেমিক ভবন, ছাত্রাবাস ও ছাত্রীনিবাস সহ সমস্ত ক্যাম্পাস উচ্চগতি সম্পন্ন Wifi নেটওয়ার্কের আওতাভূক্ত করণ, পিসিআর ল্যাব চালু করণ, উন্নতমানের মাইক্রোবায়োলজী ল্যাব স্থাপন, সার্ভিস ল্যাব চালুকরণ এবং রোগীদের বিভিন্ন পরীক্ষা নিরীক্ষা সম্পন্নকরণ, আধুনিক ট্রেনিংরুম স্থাপন, ই-লাইব্রেরী ও সিমুলেশন ল্যাব স্থাপন এর মাধ্যমে পাঠদান ও শিক্ষা সহজীকরণ এবং বর্জ্য ব্যবস্থাপনা আধুনিকীকরণ।
সক্ষমতা বৃদ্ধি: শিক্ষকদের রিসার্চ মেথডোলজি এবং টিচিং মেথডোলজির উপর নিয়মিত ওয়ার্কশপ, কম্পিউটার প্রশিক্ষণ, ডি-নথি, পিপিআর ইত্যাদি প্রশিক্ষণ আয়োজন। কলেজের নিজস্ব bsmmc apps এর মাধ্যমে ছাত্র ছাত্রীদের ক্লাসে হাজিরা প্রদান এবং আইটেম, কার্ড ফাইনাল, টার্ম ফাইনাল ও এসেসমেন্ট পরীক্ষা নেওয়া হয় এবং রেকর্ড সংরক্ষণ করা হয়।
অন্যান্য : প্রতিষ্ঠানের ওয়েব সাইট তৈরী, কলেজের নিজস্ব অ্যাপ্স তৈরীকরণ যার সাহায্যে শিক্ষার্থীদের লেকচার, ওয়ার্ড (ব্যবহারিক) এবং টিউটোরিয়াল ক্লাসের হাজিরা পর্যবেক্ষন , প্রত্যেক বিভাগের নিজস্ব ই-মেইল আইডি তৈরী, প্রত্যেক শিক্ষার্থীর ইউনিক ই-মেইল আইডি তৈরী, লাইব্রেরীতে কম্পিউটার, প্রিন্টার ফটোকপিএবং স্ক্যানার ব্যবহারের সুযোগ, নিয়মিত জার্নাল প্রকাশনা, বৃক্ষরোপন কর্মসূচী ও ফুলের বাগান তৈরী, শিক্ষার্থীদের মানসিক এবং শারীরিক বিকাশের জন্য ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক সপ্তাহ আয়োজন, স্মরণিকা প্রকাশ। এমনকি ই-লাইব্রেরী চালুর অপেক্ষায় রয়েছে।
দৃষ্টিনন্দন মসজিদ, পুকুর সংস্কারকরণ এবং বিভিন্ন প্রজাতির মাছ চাষ, কৃষি খামার, সবজি বাগান, মৌমাছি চাষ, ৩০টি বিভিন্ন প্রজাতির পাখি পালন, আয়রন ও আর্সেনিক মুক্ত পানির ব্যবস্থা, ছাত্র ছাত্রীদের হোষ্টেলে অত্যাধুনিক জিমনেসিয়াম স্থাপন, দৃষ্টিনন্দন পানির ফোয়ারা এবং নিরাপত্তা প্রহরীদের জন্য সকল সুযোগ সুবিধা সম্বলিত গার্ডরুম স্থাপন।
ফরিদপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ এর অধ্যক্ষ ডা মো মোস্তাফিজুর রহমানের অবদানের বিষয় তুলে ধরে কলেজের ( নাক-কান-গলা ) বিভাগের প্রধান বিশেষজ্ঞ ডাঃ শফিকুর রহমান ও সার্জারি বিভাগের প্রধান ডাঃ রতন কুমার সাহা জানান , বর্তমান অধ্যক্ষ তিনি কলেজের উন্নয়ন , অবকাঠামোসহ দৃশ্যমান অনেক কাজ করেছেন এবং সব সময়ই ছাত্র- ছাত্রীদের প্রতি লেখাপড়া র জন্য সুদৃষ্টি রেখেছেন ।
ফরিদপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ এর প্রধান সহকারী সেলিম আব্দুর রব ও ষ্টোর ইনচার্জ অজয় কুমার জানান , অধ্যক্ষ স্যার আমাদের সব সময় সন্তানের মতো দেখেছেন। কলেজের যেকোন ব্যাপারে স্যারের সাথে আলাপ করলে উনি সাথে সাথে এর সমাধান করেছেন । উনি একজন উদার ও বড় মনের মানবিক ডাক্তার ।
ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ এর অধ্যক্ষ ডা: মো মোস্তাফিজুর রহমান জানান, দক্ষিন বঙ্গের জন্য এই মেডিকেল কলেজটি শ্রেষ্ঠ বিদ্যাপিঠ হিসেবে পরিনত হয়েছে, আশা করি এ সাফল্যের ধারা অব্যাহত থাকবে। আমি এ প্রতিষ্ঠানের সাফল্য কামনা করি।
এই বিভাগের অন্যান্য খবর
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: