কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে বাতিসা মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ে এসএসসি পরীক্ষা-২০২৪ এর প্রতিটি প্রবেশপত্র ফি বাবদ ছাত্রীদের নিকট থেকে ৪০০-৫০০ টাকা করে আদায়ের অভিযোগ উঠেছে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। বিষয়টি নিয়ে ক্ষুব্ধ ছাত্রীদের একাংশের আন্দোলনের মুখে প্রধান শিক্ষক সহ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটি বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়েছেন বলে জানা গেছে।
বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের স্বেচ্ছাচারিতায় ছাত্রীদেও এসএসসি সেন্টার পরীক্ষায় অংশগ্রহণ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছিলো। ঘটনাটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হলে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার হস্তক্ষেপে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সাহনাজ বেগম ছাত্রীদের মাঝে বিনামূল্যে প্রবেশপত্র বিতরণ করতে বাধ্য হন। বুধবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে বিদ্যালয়ে সরেজমিনে গিয়ে বিষয়টির সত্যতা পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় সমগ্র উপজেলায় আলোচনা-সমালোচনার ঝড় বইছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক সচেতন অভিভাবক ও বিষয়টি নিয়ে ক্ষুব্ধ বিদ্যালয়ের এসএসসি পরীক্ষার্থীরা সাংবাদিকদের নিকট অভিযোগ করে বলেন, ‘ফরম পূরণ এর সময় সরকারি বিভিন্ন ফি ও কোচিং ফি সহ প্রত্যেক ছাত্রীর কাছ থেকে ৪ হাজার ৫০০ টাকা করে নিয়েছে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। ওই সময় প্রধান শিক্ষক ছাত্রীদেরকে আশ^স্ত করেছিলেন প্রবেশপত্র দেওয়ার সময় কোনো টাকা লাগবে না। এখন এসএসসি পরীক্ষার ঠিক একদিন আগে প্রবেশপত্র বিতরণকে কেন্দ্র করে ৪০০ টাকা নিচ্ছে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। আমরা টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করায় প্রধান শিক্ষক সহ বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির কয়েকজন সদস্য আমাদের সাথে খারাপ আচরণ করেন। পরে বিষয়টি স্থানীয় সাংবাদিক ও সচেতন অভিভাবকদের ম্যাধমে উপজেলা শিক্ষা অফিসারকে অবগত করা হলে তাঁর হস্তক্ষেপে বুধবার বিকালে প্রধান শিক্ষক ছাত্রীদের মাঝে বিনামূল্যে প্রবেশপত্র বিতরণ করেন।’
এ বিষয়ে বাতিসা মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সাহনাজ বেগম বলেন, ‘দশম শ্রেণির ছাত্রীরা এসএসসি পরীক্ষার আগ মুহুর্তে পিকনিকে যেতে চেয়েছিলো। এছাড়া তারা বিদ্যালয়ে র্যাগ-ডে পালন করতে চেয়েছিলো। অনুমতি না দেওয়ায় ছাত্রীরা বহিরাগত কতিপয় লোকের উসকানীতে প্রবেশপত্র বিতরণের ইস্যুকে সামনে এনে জটিল পরিস্থিতি তৈরী করেছে। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার নির্দেশে এ সংক্রান্ত সমস্যার সমাধান হয়েছে।’
বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান জিএম জাহিদ হোসেন টিপু বলেন, ‘এসএসসি পরীক্ষার্থীদের বিদায় উপলক্ষে বিদ্যালয়ে মিলাদ এর আয়োজন করা হয়। এতে অনেক টাকা ব্যয় হয়েছে। প্রবেশপত্র বাবদ ম্যানেজিং কমিটির মিটিংয়ে একটা অ্যামাউন্ট ধার্য্য করা হয়। অস্বচ্ছল ছাত্রীদের ফি মওকুফ করা হয়েছে। ছাত্রীরা বিষয়টি নিয়ে বাড়াবাড়ি করছে।’
এ বিষয়ে চৌদ্দগ্রাম উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এ. কে. এম মীর হোসেন বলেন, ‘প্রবেশপত্র ফি বাবদ কোনো টাকা নেওয়ার সুযোগ নেই। উপজেলার কোনো বিদ্যালয় প্রবেশপত্র ফি গ্রহণ করলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। বাতিসা মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের বিষয়ে কয়েকজন অভিভাবক অভিযোগ করার পর তাৎক্ষণিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে বিনামূল্যে প্রবেশপত্র বিতরণের নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে। এছাড়া কোনো ছাত্রীর নিকট থেকে ফি নেওয়া হলে তাদেরকে টাকা ফেরৎ দিতে বলা হয়েছে।’
এই বিভাগের অন্যান্য খবর
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: