খাগড়াছড়িতে দূর্বৃত্তের গুলিতে নিহতদের বিচারের দাবিতে জাবিতে বিক্ষোভ 

জাবি প্রতিনিধি | ১২ ডিসেম্বর ২০২৩, ১৯:০১

খাগড়াছড়িতে দূর্বৃত্তের গুলিতে নিহতদের বিচারের দাবিতে জাবিতে বিক্ষোভ 
খাগড়াছড়ির পানছড়িতে দুর্বৃত্তের গুলিতে নিহত ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্টের (ইউপিডিএফ) চার নেতা-কর্মী হত্যার বিচার দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেছে শিক্ষার্থীরা।
 
মঙ্গলবার  দুপুর আড়াইটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনারের পাদদেশে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। মানববন্ধন শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল শহীদ মিনার থেকে শুরু হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে গিয়ে শেষ হয়।
 
মানববন্ধনে বক্তারা পাহাড়ে চারজন হত্যার বিচারের পাশাপাশি নিখোঁজ তিনজনকে দ্রুত ফেরত দেওয়ার দাবি জানান।
 
এসময় ছাত্র ইউনিয়নের যগ্ম আহ্বায়ক হাসিব জামানের সঞ্চালনায় সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট জাবি শাখার সংগঠক সোহাগী সামিয়া বলেন, "পাহাড়ি এলাকার মানুষদের জায়গা-জমি দফল করে ক্ষমতাসীন পিশাচরা সেখানে পর্যটন শিল্প গড়ে তুলছে। তাদের সুস্থ্য বাসস্থান নেই, স্কুল-কলেজ নেই, হাসপাতাল নেই অথচ প্রশাসনের সেদিকে নজর নেই। প্রশাসনের নজর সমতলের মানুষ নিয়ে পাহাড়ি এলাকা কীভাবে দখল করা যায় সেদিকে। ১৯৯৭ সালে পার্বত্য চট্রগ্রাম শান্তি চুক্তি হয়েছিল কিন্তু পাহাড়ি মানুষদের শান্তি ফিরে আসেনি। গতকাল চারজনকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। অবিলম্বে এই হত্যার বিচার করতে হবে।"
 
মানববন্ধনে ছাত্র ইউনিয়ন জাবি সংসদের আহ্বায়ক আলিফ মাহমুদ বলেন, "গতকালের হত্যাকান্ডের এই ঘটনা বাংলাদেশের আইন ও বিচার ব্যবস্থাকে প্রশ্নবিদ্ধ  করে। পাহাড়ি এলাকার মানুষেরা প্রতিনিয়ত তাদের মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। আদিবাসীদের উপর আক্রমন কেবল সেই ১৯৮০ সালের ২৫ই মার্চ কলমপতি গণহত্যার মধ্য সীমাবদ্ধ থাকেনি। কলমপতি গণহত্যার পর ক্রমানুসারে আরো অনেক গণহত্যা চালিয়েছিলো সেনাবাহিনী এবং সেটেলার বাঙালীরা। ১৯৯৭ সালে তাদের সুরক্ষার জন্য যে শান্তি চুক্তি করা হয়েছিল সেই চুক্তির বাস্তবায়ন আমরা লক্ষ্য করিনি। এই হত্যাকান্ডের দ্রুত বিচার করতে হবে। এই ঘটনায় নিখোঁজ ব্যক্তিদের দ্রুত খুঁজে বের করতে হবে। ঐ এলাকার মানুষদের মৌলিক অধিকার বাস্তবায়ন করতে হবে।"
 
সমাপনী বক্তব্যে নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগের শিক্ষার্থী  কনোজ কান্তি রায় বলেন, "গতকাল রাতে এমন কয়েকজন মানুষের উপর হামলা করা হয়েছে যারা মানুষের অধিকার আদায়ের কথা বলে।  তাদের উপর নিষ্ঠুর হত্যাকান্ড চালানো হয়েছে। তারা তাদের জাতীয়তা রক্ষার জন্য লড়াই করছিল। কিন্তু তাদেরকে হত্যা করা হলো। প্রতিনিয়ত পাহাড়ি মানুষ রাতের আধারে হারিয়ে যাচ্ছে। গতকালের এই ঘটনার দায় পুরোটাই প্রশাসনের। এদেশের আদিবাসিদের মুক্তির জন্য, পাহাড়ি মানুষের মুক্তির জন্য সেনা শাসন অপসারণ করতে হবে। তাদের উপর নির্মম হত্যাকান্ড বন্ধ করতে হবে।"
 
সেমবার রাতে খাগড়াছড়ির পানছড়িতে দুর্বৃত্তের গুলিতে ৪ জনকে গুলি করে হত্যার খবর পাওয়া গেছে। নিহত ব্যক্তিরা হলেন, গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি বিপুল চাকমা, গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের খাগড়াছড়ি জেলা সহসভাপতি লিটন চাকমা, পিসিপির কেন্দ্রীয় সহসভাপতি সুনীল ত্রিপুরা ও ইউপিডিএফের সদস্য রুহিনসা ত্রিপুরা। 
 
এ ছাড়া পিসিপির সাবেক কেন্দ্রীয় সদস্য হরি কমল ত্রিপুরা ও নীতিদত্ত চাকমা নামের দুজন নিখোঁজ আছেন। 


আপনার মূল্যবান মতামত দিন: