১১ ডিসেম্বর ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ উপজেলা হানাদারমুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনেই পাক হানাদার বাহিনীকে বিতাড়িত করে আশুগঞ্জকে শত্রুমুক্ত করে মুক্তিবাহিনী ও ভারতীয় মিত্রবাহিনীর সদস্যরা।
১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় তৎকালীন লে. কর্নেল কে.এম. সফিউল্লাহ, লে. মো. হেলাল মোর্শেদ খান, মেজর আইন উদ্দিন ও মেজর নাসির প্রমুখ বীর সেনানীর সুসংগঠিত নেতৃত্ব সর্বস্তরের বীর জনতা পাক হানাদারদের হাত থেকে আশুগঞ্জকে মুক্ত করেছিলেন।
আশুগঞ্জকে মুক্ত করতে গিয়ে সেদিন পাক হানাদারদের সঙ্গে সম্মুখযুদ্ধে শহীদ হয়েছিলেন সুবেদার মেজর সিরাজুল ইসলাম, ল্যান্স নায়েক আব্দুল হাই, সিপাহী কফিল উদ্দিন, মুক্তিযোদ্ধা আবু তাহেরসহ আরও অনেকে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অধিকাংশ এলাকা শত্রুমুক্ত হওয়ার পর একাত্তরের ৮ ডিসেম্বর ভারতীয় মিত্র বাহিনী বর্তমান আশুগঞ্জ উপজেলার তালশহর গ্রাম দিয়ে আশুগঞ্জ সদরে প্রবেশ করে। সর্বশেষ যুদ্ধ সংগঠিত হয় আশুগঞ্জ উপজেলার সোহাগপুরে। ৩ দিন তুমুল যুদ্ধে অর্ধ সহস্রাধিক মিত্রবাহিনী ও পাকবাহিনীর সদস্য নিহত হয়। সোহাগপুরের ভয়াবহ যুদ্ধে মিত্রবাহিনীর তিনটি ট্যাংক ধ্বংস হয়।
শেষ পর্যন্ত মুক্তিবাহিনী ও মিত্রবাহিনীর ভয়াবহ আক্রমণে টিকতে না পেরে ১০ ডিসেম্বর দুপুরের পর থেকে আশুগঞ্জ থেকে পালাতে শুরু করে পাক সেনারা। আত্মরক্ষার জন্য পাকবাহিনী আশুগঞ্জ থেকে পালিয়ে ভৈরব যাওয়ার সময় মেঘনা নদীর উপর রেল সেতুটির একাংশ ডিনামাইট দিয়ে ধ্বংস করে দেয়। এতে সেতুটির দুটি স্প্যান ভেঙে নদীতে পড়ে যায়। ১১ ডিসেম্বর আশুগঞ্জ উপজেলা সম্পূর্ণ শত্রুমুক্ত হয়।
প্রতিবছরের মতো এবারও দিবসটি পালন উপলক্ষে আশুগঞ্জ উপজেলা মুক্ত দিবস উদযাপন কমিটি ১১ ডিসেম্বর দিনব্যাপী বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। কর্মসূচির মধ্যে সকালে র্যালি, বিকালে আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান রয়েছে।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: