এক লাখ বিশ হাজার টাকার চেক জাল করে ১১লাখ ২০ হাজার টাকা উত্তোলনের অভিযোগ উঠেছে রবিউল ইসলাম (২৪) নামে এক দিনমজুরের বিরুদ্ধে। ব্যাংকে ১১ লাখ ২০হাজার টাকা না পেয়ে চেক ডিজঅনার করে আদালতে মামলা করে ওই শ্রমিক। অভিযুক্ত রবিউল ইসলাম ঠাকুরগাঁও ভুল্লী থানার বালিয়া ইউনিয়নের বগুলাডাঙ্গী এলাকার মোতালেবের ছেলে। আর ভুক্তভোগী সদরের সালন্দর এলাকার বীরমুক্তিযোদ্ধা সমারু বর্মণের মেয়ে স্কুল শিক্ষক মমতা রাণী। তবে গত ডিসেম্বরে চেকবই নিখোঁজে সদর থানায় সাধারণ ডায়রী করেন মমতা রাণী।
জানা গেছে, মমতা রাণীর স্বামী কালিদাস চলতি বছরের ৬জুন একই এলাকার বজলুর রশিদের ছেলে আল মামুমের কাছে ১লাখ ২০হাজার টাকা হাওলাত নেন। এ সময় কালিদাস তার স্ত্রীর অগ্রণী ব্যাংক মুন্সিহাট শাখা ঠাকুরগাঁও (হিসাব নাম্বার-০২০০০১২০০৪৯৯৪) এর পাতায় ১লাখ ২০হাজার টাকা অঙ্কে লিখে একটি চেক দেয় তাকে। পরবর্তীতে মামুন তার আতœীয় রবিউলকে চেকটি দেয়। পরে রবিউল জালিয়াতির মাধ্যমে চেকে ১লাখ ২০হাজারের স্থলে ১১লাখ ২০হাজার ও ৬তারিখের স্থলে ১৬তারিখ বসিয়ে ব্যাংকে টাকা উত্তোলন করতে যায়। ব্যাংকে ১১লাখ টাকা না থাকায় গত ৮ আগস্ট চেকটি ডিজঅনার করে। কোন নোটিশ ছাড়াই গত ২৫সেপ্টেম্বরে ঠাকুরগাঁও বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আমলী আদালতে বাদী হয়ে মমতা রানীর বিরুদ্ধে চেক জালিয়াতি ও প্রতারণার অভিযোগ তুলে মামলা করেন রবিউল।
ভুক্তভোগী মমতা রাণী বলেন,গতবছরের নভেম্বরে অগ্রণী ব্যাংক মুন্সিহাট শাখা ঠাকুরগাঁও ০২০০০১২০০৪৯৯৪ হিসাব নাম্বারের একটি চেকবই হারিয়ে যায়। পরে সদর থানায় একটি সাধারণ ডায়রী করি। একদিন আল মামুন বলল আমার স্বামী তার কাছে ১লাখ ২০হাজার টাকা হাওলাত নিয়েছে। পরবর্তীতে গত এপ্রিলে স্থানীয় এক পত্রিকা অফিসে কয়েকজনের উপস্থিতিতে ৭০হাজার টাকা মামুনকে দিয়ে বাকি টাকা পরিশোধের আরো সময় চাই। এরইমধ্যে মামুনের ভাই জনি আমার স্কুলে এসে আমাকে একথ্য ভাষায় গালিগালাজ ও হুমকি দেয়। তারা প্রায় আমাকে হুমকি-ধামকি দিতে থাকে। একদিন মামুনের ভাই জনিসহ ১২জন আমার পথরোধ করে ভয় দেখিয়ে তাদের গাড়িতে তোলার চেস্টা করে। এ সময় আমার চিৎকারে লোকজন ছুটে আসলে তারা পালিয়ে যায়। এব্যাপারে ভুল্লী থানায় একটি অভিযোগও করেছি আমি।
তিনি আরো বলেন, আমার স্বামী পলাতক থাকায় তার সাথে কোন যোগাযোগ হয় না। আমার চেক আল মামুনকে দিয়েছে তাও আমি জানি না। বর্তমানে আমি শিশু সন্তান ও বৃদ্ধা মাকে নিয়ে আতঙ্কে দিন পার করছি। আমার নামে যে রবিউল মামলা করেছে তা মিথ্যা ও বানোয়াট আমি তাকে চিনি না। আমি এর সুষ্ঠু বিচার দাবী করছি বিজ্ঞ আদালতের কাছে।
অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে আল মামুন জানান, মমতা রানীর স্বামী আমার কাছ থেকে ১লাখ ২০হাজার টাকা হাওলাত নেন। তাকে না পেয়ে তার স্ত্রীর সাথে যোগাযোগ করলে কয়েক দফায় আমাকে টাকা দেয়। তবে তার স্বামী আমাকে কোন চেক দেয়নি। আমার সাথে স্ট্যাম্পে লেখাপড়া হয়।
আর রবিউল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, আমি মমতার কাছে ১১ লাখ ২০ হাজার টাকা পাই। টাকা না পেয়ে আদালতে মামলা করেছি।
এ বিষয়ে ভুল্লী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ দুলাল উদ্দীন জানান, চেক জালিয়াতির অভিযোগে আদালতে মামলা চলমান। তা ছাড়া আমি নতুন। তবে শুনেছি মমতা রাণীকে একদল যুবক আটক করেছিলো। তিনি থানায় একটি লিখিত অভিযোগও দিয়েছেন।
এই বিভাগের অন্যান্য খবর
জনপ্রিয় খবর
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: