বীরাঙ্গনা স্বীকৃতি পেলেন সোহাগপুর বিধবাপল্লীর আরো ৬ নারী

নালিতাবাড়ী (শেরপুর) প্রতিনিধি | ১৯ নভেম্বর ২০২৩, ১৬:২৭

বীরাঙ্গনা স্বীকৃতি পেলেন সোহাগপুর বিধবাপল্লীর আরো ৬ নারী

শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার সোহাগপুর বিধবাপল্লীর আরো ৬ নারী পেলেন নারী মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে (বীরাঙ্গনা) স্বীকৃতি। এর আগে গ্রামটির ১৪ জন নারী এ স্বীকৃতি পেয়েছেন। এই নিয়ে ওই গ্রামের ৩০ জন নারী মুক্তিযোদ্ধা (বীরাঙ্গনা) স্বীকৃতি পেলেন। সম্প্রতি মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রকাশিত ভিন্ন ভিন্ন গেজেটে এ তথ্য জানা গেছে।

জানা যায়, জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের ৮৬ তম সভার সিদ্ধান্ত মোতাবেক মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় সারাদেশের ৩৮ জনের নাম উল্লেখ করে নারী মুক্তিযোদ্ধা (বীরাঙ্গনা) স্বীকৃতির গেজেট প্রকাশ করে। এতে নালিতাবাড়ীর ৬ জন হলেন সোহাগপুর গ্রামের ঝর্ণা দিও, সমিলা রাকসাম, মালতি রাকসাম, মোছা. হাজেরা, মোছা. লাকজান ও কেরেঙ্গাপাড়া গ্রামের মোছা. ছাহেরা খাতুন।

উল্লেখ্য, ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে ২৫ জুলাই উপজেলার কাকরকান্দি ইউনিয়নের সোহাগপুর গ্রামে নৃশংস গণহত্যা চালায় পাক হানাদার বাহিনী ও রাজাকার আলবদররা। সেদিন তাদের দুইঘন্টার তান্ডবে ১৮৭ জন পুরুষ গুলিতে নিহত হন। খুঁজে খুঁজে গ্রামের সকল পুরুষদেরকে হত্যা করা হয়। সেই থেকে গ্রামটি বিধবাপল্লী নামে পরিচিতি লাভ করে। মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের জঘন্যতম এবং নৃশংসতম ওই গণহত্যায় সোহাগপুর গ্রামের ৬২ জন মহিলা বিধবা হন এবং তাঁদের অনেককেই শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করা হয়। স্বাধীনতা পরবর্তী সময়েও ওই গ্রামের ৫৬ জন বিধবা বেঁচেছিলেন। বর্তমানে তাঁদের মধ্যে বেঁচে আছেন ২২ জন বিধবা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইতিমধ্যেই ২৯ জন বিধবার প্রত্যেকের জন্য ১১ লাখ টাকা করে মোট ৩ কোটি ১৯ লাখ টাকা ব্যায়ে ২৯ টি পাকা বাড়ি করে দিয়েছেন।

২০১৫ সালে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সহযোগিতায় সোহাগপুরে “বীর কন্যা প্রাথমিক বিদ্যালয়” প্রতিষ্ঠা করা হয়। শহীদদের স্মরণে গ্রামটিতে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে “শহীদ মুক্তিযোদ্ধা কলেজ”।

বিধবাপল্লীর রাস্তটিও পাকা করা হয়েছে। শহীদদের স্মরণে স্মৃতিসৌধ “সৌরজায়া” স্থাপন করা হয়েছে। সুদীর্ঘ ৫০ বছর পর তাঁদের জন্যে জেলার পুলিশ সদস্যরা তাদের বেতনের টাকায় বিধবাদের কিনে দিয়েছেন জমি।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: