একাত্তরের রণাঙ্গনের বীর বিক্রম খেতাবপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শওকত আলী সরকার বীর বিক্রম ইন্তেকাল করেছেন। (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাহি রাজিউন)।
তাঁর মৃত্যুতে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন শোক জানিয়েছেন।
সোমবার (২২ আগস্ট) ভোর ৫টায় ঢাকায় ইন্তেকাল করেন তিনি। শওকত আলী সরকার দীর্ঘদিন ধরে লিভারের সমস্যায় ভুগছিলেন। তিনি ঢাকায় চিকিৎসাধীন ছিলেন। মৃত্যুকালে এই বীর মুক্তিযোদ্ধার বয়স হয়েছিল ৭৮ বছর।
শওকত আলী সরকারের জন্ম কুড়িগ্রাম জেলার চিলমারী উপজেলার রানীগঞ্জ ইউনিয়নের দক্ষিণ ওয়ারী গ্রামে। তার বাবার নাম ইজাব আলী সরকার এবং মায়ের নাম শরিতুজ নেছা। তার স্ত্রীর নাম খালেদা খানম। তাদের চার মেয়ে দুই ছেলে।
শওকত আলী সরকার ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে ১১ নং সেক্টরের সাবসেক্টর মাইনকারচরের অধীন কুড়িগ্রামের রৌমারী-চিলমারী অঞ্চলে সম্মুখ যুদ্ধে অংশ নেন। ওই সেক্টরের আবুল কাশেম চাঁদ কোম্পানির সেকেন্ড ইন কমান্ড ছিলেন। ৭১ সালের ১৩ নভেম্বর উলিপুরের হাতিয়া যুদ্ধে পায়ে গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হন। যুদ্ধকালীন বীরত্ব ও সাহসিকতার সঙ্গে পাক বাহিনীর বিরুদ্ধে সম্মুখ যুদ্ধ চালিয়েছিলেন। এজন্য পাকিস্তানি বাহিনীর কাছে তিনি ‘মোস্ট ওয়ান্টেড’ ছিলেন।
মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয় অবস্থানের কারণে পাক বাহিনী তার বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন চিলমারী থানায় মামলাকরেছিল বলে জেলার মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস থেকে জানা যায়। তার বীরত্বের জন্য বাংলাদেশ সরকার তাকে বীর বিক্রম খেতাবে ভূষিত করে।
শওকত আলী সরকার চিলমারী উপজেলা পরিষদের পাঁচ বারের নির্বাচিত চেয়ারম্যান ছিলেন। উপজেলা পরিষদ চালুর পর থেকেই তিনি চিলমারী উপজেলা পরিষদের নির্বাচিত চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। এছাড়া প্রায় ৩৫ বছর ধরে তিনি উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করে আসছেন।
শওকত আলী সরকারের মৃত্যুতে কুড়িগ্রাম জেলায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। জাতির এই সূর্য সন্তানের মৃত্যুতে শোক জানিয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, জেলা প্রশাসক, জেলা ও উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, চিলমারী ইউএনও,চিলমারী উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যানসহ রাজনীতিবীদ, সমাজকর্মী ও সাধারণ মানুষ।
তাঁর পরিবারের সূত্রে জানা যায়, আগামীকাল মঙ্গলবার সকাল ১১টায় শওকত আলী সরকারের মরদেহ চিলমারী উপজেলা স্কুল এন্ড কলেজ মাঠে আনা হবে। এখানে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হবে তাকে।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: