গ্রেফতার আতঙ্কে এখন পুরুষ শূন্য ঠাকুরগাঁওয়ের রানীশংকৈল উপজেলার ভাংবাড়ি মহেশপুর পুরো গ্রাম। নির্বাচনী সহিংসতার ঘটনায় অজ্ঞাতদের নামে মামলা হওয়ার পর গ্রামের অধিকাংশ পুরুষ বাড়ি ছেড়েছেন। তবে, পুলিশ বলছে, অকারণে কাউকে হয়রানি করা হচ্ছে না।
জনমানবহীন শুনশান পুরো এলাকা। কোন গাড়ি দেখলেই পালিয়ে যাচ্ছেন নারী ও শিশুরা। মঙ্গলবার ((২ আগষ্ট) সকালে সরেজমিনে গেলে এমন চিত্রটি দেখা যায় উপজেলার ভাংবাড়ী মহেশপুর গ্রামের।
ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে পরবর্তী সহিংসতার ঘটনায় ভোটকেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসার ও দুই সহকারী পুলিশ উপ-পরিদর্শক (এএসআই) বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা প্রায় ৮শ’ জনের বিরুদ্ধে থানায় পৃথক তিনটি মামলা করে।
এরপর থেকেই গ্রেফতার আতঙ্কে ভাংবাড়ি মহেশপুর গ্রাম পুরুষ শূন্য হয়ে যায়। বাড়িতে আয় রোজগারের কোন মানুষ না থাকায় বিপাকে পড়েছেন গৃহবধূরা। আতঙ্কে দিন কাটছে তাদের। গ্রেফতার আতঙ্কে রয়েছে ওই এলাকার পরিবারগুলো।
তবে, কোন নির্দোষ মানুষকে হয়রারি করা হবে না বলে আশ্বাস দিলেন রানীশংকৈল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকতা (ওসি) এসএম জাহিদ ইকবাল।
এদিকে, ঘটনার তদন্তে কাজ শুরু করেছে জেলা প্রশাসনের তদন্ত কমিটি।
উপজেলার মীরডাঙ্গী আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাসিন্দা মো. বাদশাহ মিয়ার ৯ মাস বয়সী মেয়ে সুরাইয়া মায়ের কোলে থাকা অবস্থায় মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যায়। এ ঘটনায় ভাংবাড়ি ভিএফ নিম্নমাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের প্রিসাইডিং কর্মকর্তা মো. খতিবর রহমান একটি মামলা করেছেন। এতে অজ্ঞাতনামা ৩০০ থেকে ৩৫০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
প্রিসাইডিং কর্মকর্তা খতিবর রহমান বলেন, ইউপি সদস্য পদে পরাজিত প্রার্থীর সমর্থকেরা তাঁদের ওপর হামলা করেছিলেন। তবে তাঁদের পরিচয় জানা যায়নি বলে এজাহারে কারও নাম উল্লেখ করা হয়নি।
ওই দিন (২৭ জুলাই) রাতে ভোট গ্রহণের দায়িত্ব শেষে ফেরার সময় মীরডাঙ্গী বাজারের ১০০ গজ দক্ষিণে পুলিশের ওপর হামলা হয়। এ ঘটনায় ঠাকুরগাঁও সদর থানার এএসআই বিলাশ চন্দ্র রায় একটি মামলা করেন। মামলায় ১৫০ থেকে ২০০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে।
শিশু সুরাইয়ার মৃত্যুর ঘটনায় ওইদিন তাৎক্ষণিকভাবে লাশ নিয়ে বিক্ষোভ করেন স্থানীয় লোকজন। ওই সময় তাঁরা রানীশংকৈল আঞ্চলিক মহাসড়ক অবরোধ করেন ও রানীশংকৈল থানা ঘোরাও করে রাখেন। পুলিশ কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করে তাঁদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়।
এ ঘটনায় রানীশংকৈল থানার এএসআই আহাদুল জামান বাদী হয়ে একটি মামলা করেন। ওই মামলায় অজ্ঞাতনামা ২০০ থেকে ২৫০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
এদিকে মামলার কথা শুনে অনেকেই গ্রেপ্তার আতঙ্কে এলাকা ছেড়েছেন। হাতে গোনা কয়েকটি দোকান ছাড়া গ্রামের প্রায় সব দোকান বন্ধ রয়েছে। নির্বাচনে পরাজিত ইউপি সদস্য প্রার্থী খালেদুর রহমানের মুঠোফোন বন্ধ থাকায় তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। তবে তাঁর প্রতিবেশী এক নারী জানিয়েছেন, তাঁরা এলাকা ছেড়ে চলে গেছেন। তবে কোথায় গেছেন, তা তাঁরা জানাননি।
অজ্ঞাতনামা মামলার কথা শুনে অধিকাংশ পুরুষ ছেড়েছেন ঘরবাড়ি। গ্রেফতার আতঙ্কে সময় পার করছে বাড়ির নারী ও শিশুরা। থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে পুরো গ্রামে।
মীরডাঙ্গী গ্রামের বাসিন্দা মনসুরা বেগম বলেন, আমরা শুনেছি ৭'শ-আটশ মানুষের নামে মামলা হয়েছে। যেহেতু নাম উল্লেখ করে মামলা হয়নি সে কারণে ভয়ে ভয়ে সময় পার করছি আমরা। আমার স্বামীকে আমি বাড়িতে থাকতে দিচ্ছি না। বলা যায় না কাকে কখন ধরে নিয়ে যায়।
আরেক বাসিন্দা সুরাইয়া আক্তার বলেন, আমার ছোট তিনটা সন্তান আর স্বামী নিয়ে সংসার। মামলা আর গ্রেফতারের ভয়ে স্বামী বাড়িতে থাকছেন না। আমরা নির্বাচনের ঘটনার দিন ছিলাম না। ভোট দিয়ে আমরা চলে এসেছি। এখন মামলা হয়েছে অনেক জনের নামে। এ নিয়ে আমরা অনেক ভয়ে আছি।
স্থানীয় বাসিন্দা রফিকুল বলেন, আমরা দিনমজুর মানুষ। দিন আনি দিনে খাই। একদিন কাজ না করলে- না খেয়ে থাকতে হয়। এখন অনেকজনের নামে অজ্ঞাতনামা মামলা হয়েছে। আমি নিজেই অনেক ভয়ে আছি। কাকে কখন তুলে নিয়ে যায় বলা যায় না। আমরা এর সুষ্ঠু সমাধান চাই।
উপজেলার মীরডাঙ্গী আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাসিন্দা মো. বাদশাহ মিয়ার ৯ মাস বয়সী মেয়ে সুরাইয়া মায়ের কোলে থাকা অবস্থায় মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যায়। এ ঘটনায় ভাংবাড়ি ভিএফ নিম্নমাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের প্রিসাইডিং কর্মকর্তা মো. খতিবর রহমান একটি মামলা করেছেন। এতে অজ্ঞাতনামা ৩০০ থেকে ৩৫০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
প্রিসাইডিং কর্মকর্তা খতিবর রহমান বলেন, ইউপি সদস্য পদে পরাজিত প্রার্থীর সমর্থকেরা তাঁদের ওপর হামলা করেছিলেন। তবে তাঁদের পরিচয় জানা যায়নি বলে এজাহারে কারও নাম উল্লেখ করা হয়নি।
ওই দিন রাতে ভোট গ্রহণের দায়িত্ব শেষে ফেরার সময় মীরডাঙ্গী বাজারের ১৫০ গজ দক্ষিণে পুলিশের ওপর হামলা হয়। এ ঘটনায় ঠাকুরগাঁও সদর থানার এএসআই বিলাশ চন্দ্র রায় একটি মামলা করেন। মামলায় ১৫০ থেকে ২০০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে।
শিশু সুরাইয়ার মৃত্যুর ঘটনায় ওইদিন তাৎক্ষণিকভাবে লাশ নিয়ে বিক্ষোভ করেন স্থানীয় লোকজন। ওই সময় তাঁরা রানীশংকৈল আঞ্চলিক মহাসড়ক অবরোধ করেন ও রানীশংকৈল থানা ঘোরাও করে রাখেন। পুলিশ কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করে তাঁদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়।
উপজেলার বাচোর ইউনিয়নে পরে রাত সাড়ে দশটার দিকে আঞ্চলিক মহাসড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়। এ ঘটনায় রানীশংকৈল থানার এএসআই আহাদুল জামান বাদী হয়ে একটি মামলা করেন। ওই মামলায় অজ্ঞাতনামা ২০০ থেকে ২৫০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
এদিকে মামলার কথা শুনে অনেকেই গ্রেপ্তার আতঙ্কে এলাকা ছেড়েছেন। হাতে গোনা কয়েকটি দোকান ছাড়া গ্রামের প্রায় সব দোকান বন্ধ রয়েছে। নির্বাচনে পরাজিত ইউপি সদস্য প্রার্থী খালেদুর রহমানের মুঠোফোন বন্ধ থাকায় তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। তবে তাঁর প্রতিবেশী এক নারী জানিয়েছেন, তাঁরা এলাকা ছেড়ে চলে গেছেন। তবে কোথায় গেছেন, তা তাঁরা জানাননি।
রাণীশংকৈল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম জাহিদ ইকবাল বলেন, তিনটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এতে আসামি করা হয়েছে অজ্ঞাতনামা ৮ শ’। তবে আমি বলে দিয়েছি, কোনো সাধারণ মানুষ এতে হয়রানি হবে না। অতএব কেউ ভয় পাবেন না। শুধুমাত্র দোষীদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনা হবে।
প্রসঙ্গত, রাণীশংকৈল উপজেলার তিনটি ইউনিয়নে ভোট অনুষ্ঠিত হয়। ভোটগ্রহণ শেষে ফলাফল ঘোষণাকে কেন্দ্র করে বাচোর ইউনিয়নের ভাংবাড়ি ভি.এফ নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রে সংঘর্ষ শুরু হয়। এসময় পুলিশের গুলিতে নিহত হয় এক শিশু। সেদিনের সেই ঘটনায় পুলিশ ও প্রিসাইডিং অফিসার বাদী হয়ে তিনটি মামলা করে। মামলাগুলোয় ৬শ’ জনকে অজ্ঞাতনামা করে মামলা করা হয়।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: