ফরিদপুরের সালথায় গুজব রটিয়ে ১৫টি বসতবাড়িতে হামলা, ভাংচুর ও লুটপাট

ফরিদপুর প্রতিনিধি | ১১ এপ্রিল ২০২২, ০৬:৫০

সংগৃহীত

ফরিদপুরের সালথায় আমিনুল মিয়া নামে তরুন এক ভ্যানচালক হত্যার গুজব রটিয়ে প্রতিপক্ষের অন্তত ১৫টি বসত বাড়ি ও একটি ইটের ভাটায় হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাঙচুর-লুটপাট করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এতে দুই জন আহত হলে তাদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।  

শনিবার সন্ধ্যা থেকে রাত পর্যন্ত উপজেলার যদুনন্দী ইউনিয়নের খারদিয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করে। তবে ঘটনাটি নিয়ে রবিবার বিকাল পর্যন্ত ওই এলাকার দুটি পক্ষের মধ্যে ব্যাপক উত্তেজনা চলছিল। উভয় পক্ষের সমর্থকদের দেশীয় অস্ত্রসস্ত্র নিয়ে মুখোমুখি অবস্থানে থাকতে দেখা গেছে। 

প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজন জানান- খারদিয়া বাজারের মোড়ে শনিবার সন্ধ্যায় ভ্যান রাখা নিয়ে যদুনন্দী ইউপি চেয়ারম্যান রফিক মোল্যার সমর্থক ভ্যানচালক আমিনুল মিয়ার (২২) সাথে ওই ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক আলমগীর মিয়ার সমর্থক ভ্যানচালক সাজ্জাদ শেখের (২৫) কথাকাটাকাটি হয়। বিষয়টি জানাজানি হলে আলমগীর মিয়ার সমর্থকরা বাজারে জড়ো হয়ে ভ্যানচালক আমিনুলকে পিটিয়ে তার পা ভেঙ্গে দেয়। 

অপরদিকে একই সময় রফিকের সমর্থকরা অপর ভ্যানচালক সাজ্জাদকেও কুপিয়ে জখম করে। পাল্টাপাল্টি হামলায় আহত দুই জনকেই স্থানীয়রা উদ্ধার করে ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। 

এরপর রাত ৮টার দিকে আমিনুল হাসপাতালে মারা গেছে বলে এলাকায় ভুয়া খবর ছড়িয়ে পড়লে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। একপর্যায় আ.লীগ নেতা আলমগীরের সমর্থকরা এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যায়। পরে চেয়ারম্যান রফিকের শতাধিক সমর্থক দেশীয় অস্ত্রসস্ত্র নিয়ে আলমগীরের সমর্থক টিপু শেখের ৩টি, ইরাদত মোল্যার ২টি, আকরাম মোল্যার ১টি, শাহাদত মোল্যার ২টি, ইশারত মোল্যার ৩টি, মজনু শিকদারের ১টি, কিরামত আলীর ১টি ও সালাউদ্দীনের ১টি বসতঘরে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাঙচুর-লুটপাট করে। পরে আলমগীরের ইট ভাটাও ব্যাপক ভাঙচুর করে তারা।   

যদুনন্দী ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারন সম্পাদক মো. আলমগীর মিয়া বলেন- ঘটনার দিন সন্ধ্যায় বাজারে ভ্যান রাখা নিয়ে আমার সমর্থক সাজ্জাদের সাথে রফিকের সমর্থক আমিনুলের মারামারি হয়। এতে দুই জনই আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর রাত ৮টার দিকে রফিকের সমর্থকরা আমিনুলের মৃত্যুর গুজব ছড়িয়ে আমার নিরীহ সমর্থকদের বাড়িতে গিয়ে ব্যাপক ভাঙচুর ও লুটপাট চালায়। তারা ঘরের ভিতরে ঢুকে নারীদের সাথেও খারাপ আচরণ করে। আমার ইট ভাটায়ও হামলা-ভাঙচুর চালিয়ে ব্যাপক ক্ষতি করে। 

যদুনন্দী ইউপি চেয়ারম্যান রফিক মোল্যা বলেন- এটি একটি দুর্ঘটনা। আমিনুল নামে আমার এক লোক হামলায় মারা যাওয়ার খবরে ভাঙচুরের ঘটনাটি ঘটেছে। বিষয়টি খুবই দু:খজনক। এ ঘটনার যারা জড়িত তাদের বিচার আমিও চাই।

ফরিদপুরের সহকারী পুলিশ সুপার (নগরকান্দা-সালথা সার্কেল) মো. সুমিনুর রহমান বলেন- খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। ওই এলাকায় ফের সংঘর্ষের আশঙ্কা থাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। পরিবেশ স্বাভাবিক হওয়ার আগ পর্যন্ত পুলিশ মোতায়েন থাকবে।

 

 


আপনার মূল্যবান মতামত দিন: