নরসিংদী শহরের নাগরিয়াকান্দিতে একদল ডাকাতের ছুরিকাঘাতে যুবক নিহতের ২৪ ঘণ্টা পর আরও তিন দোকানে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। এ সময় এক দোকানের কর্মচারীকে লোহার রড দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর আহত করেন ডাকাতেরা।
আজ শনিবার (১৭জুলাই) ভোর চারটার দিকে শহরের চৌয়ালা ও শালিধা এলাকার তিনটি দোকানে এ ঘটনা ঘটে।
দোকানগুলো হলো চৌয়ালা এলাকার শাহাজালাল স্টোর এবং শালিধার মোমেন স্টোর ও রবিন ফার্মেসি।
আহত দোকান কর্মচারীর নাম সানি মিয়া (২১)। তিনি শাহাজালাল স্টোর নামের দোকানটিতে রাত্রিযাপন করতেন। ঘটনার রাতেও তিনি সেখানেই অবস্থান করছিলেন। সানির বাড়ি শহরের শালিধা এলাকায়।
সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা ও স্থানীয় লোকজনের বরাত দিয়ে পুলিশ জানিয়েছে, শনিবার ভোররাত চারটা ছয় মিনিটের দিকে একটি সাদা ট্রাক শাহাজালাল স্টোরের সামনে এসে থামে। ট্রাকে থাকা ডাকাত দলের কয়েকজন সদস্য শাহাজালাল স্টোরের তালা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করেন। দুজন দোকানের ভেতরে যান আর তিনজন বাইরে থাকেন। ভেতরে ঢুকেই ওই দুজন মিলে সানির মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন জায়গায় লোহার রড দিয়ে আঘাত করেন। সানি মাটিতে লুটিয়ে পড়লে তাঁরা পুরো দোকানের জিনিসপত্র তছনছ করে ক্যাশবাক্সে থাকা টাকা নিয়ে যান। এর ১০ মিনিটের মধ্যেই সড়কে পুলিশের টহল গাড়ির সাইরেনের শব্দ শুনে ডাকাতেরা দ্রুত পালিয়ে যান।
স্থানীয় লোকজন সানিকে উদ্ধার করে নরসিংদী সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে যান। সেখানে তাঁকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
শাহাজালাল স্টোরের মালিক শাহাজালাল ভূঁইয়া বলেন, ‘রাতে দোকানের ক্যাশবাক্সে বেশি টাকা রাখতাম না। সব মিলিয়ে পাঁচ-ছয় হাজার টাকা ছিল। তারা হয়তো ভেবেছিল বেশি টাকাপয়সা থাকবে। ওই টাকার জন্যই তারা দোকানটিতে ডাকাতি করতে এসেছিল।’
এর আগে পার্শ্ববর্তী শালিধা এলাকার রবিন ফার্মেসির চারটি তালা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করেন ডাকাতেরা। ওই ফার্মেসির ক্যাশবাক্স ভেঙে নগদ টাকা নিয়ে যান তাঁরা। পরে একই এলাকার মোমেন স্টোরে ঢুকলে স্টোরের মালিক মোমেন মিয়ার সঙ্গে তাঁদের হাতাহাতি হয়। মোমেনকে এলোপাতাড়ি মারধর করে ডাকাতেরা চলে যান।
স্থানীয় লোকজনের কাছ থেকে খবর পেয়ে ততক্ষণে নরসিংদী মডেল থানা-পুলিশ ও গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) সদস্যরা ঘটনাস্থলে আসেন। তাঁরা সিসিটিভি ফুটেজ পর্যবেক্ষণ করেন। এরই মধ্যে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) শাহেব আলী।
পৌরবাসীর পক্ষহতে কয়েকজন বলেন একটার পর একটা ডাকাতির ঘটনায় শহরজুড়ে আতঙ্ক বিরাজ করছে। বিষয়টি খুবই উদ্বেগজনক। ডাকাতির ঘটনার পুনরাবৃত্তি যেন আর না ঘটে, সে জন্য প্রশাসন ও পুলিশ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে, এটাই তাঁদের প্রত্যাশা।
নরসিংদী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সওগাতুল আলম জানান, তিনটি ঘটনাস্থলেই পুলিশ পাঠানো হয়। তাঁরা বিষয়টি তদন্ত করছেন। ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ফুটেজও পর্যবেক্ষণ করেছেন তাঁরা। তদন্তের পরই এ বিষয়ে বিস্তারিত বলা যাবে।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: