বিবেক প্রশ্নবিদ্ধ!

সময় ট্রিবিউন | ১০ ডিসেম্বর ২০২১, ০৪:০২

ছবিঃ সংগৃহীত

একটি জাতির রুচি, সংস্কৃতি ও মূল্যবোধ বিকাশের ক্ষেত্রে প্রাতিষ্ঠানিক ও অপ্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা কার্যক্রম, ধর্ম চর্চা, সাহিত্য, সাংস্কৃতিক চর্চা, নাটক, চলচিত্র ও রাজনীতির চর্চা ইত্যাদি উপাদান সবিশেষ ভুমিকা পালন করে। বাঙালির মানস গঠনেও সময়ে সময়ে উক্ত উপাদানগুলি প্রধান ভুমিকা পালন করে এসেছে। আমাদের মহান ভাষা আন্দোলনের মাধ্যমে জন্ম নেওয়া রাজনৈতিক এবং সাহিত্য-সাংস্কৃতিক চেতনা জাতির পিতার অবিসংবাদিত নেতৃত্বে মহান স্বাধীনতা সংগ্রাম সংগঠিত করতে বিশেষ ভুমিকা পালন করেছে।

৭৫- এ জাতির জনককে সপরিবারে নৃশংস হত্যার সঙ্গে সঙ্গে দীর্ঘ সংগ্রাম ও চর্চার মাধ্যমে অর্জিত অহিংস ও কল্যানময়ী মূল্যবোধ ও সংস্কৃতি হত্যার যাত্রা শুরু হয়। নানা কৌশলে বাংলাদেশের অভ্যুদয়কে প্রশ্নবিদ্ধ ও ব্যর্থ করবার দেশবিরোধী চক্রান্ত পরিকল্পিতভাবে পরিচালিত হচ্ছে। তারই এক জঘন্য বহিঃপ্রকাশ দেশপ্রেমহীন কতিপয় তরুন কর্তৃক স্টেডিয়ামে বাংলাদেশের জাতীয় ক্রিকেট দলের বিরুদ্ধে নরঘাতক পাকিস্তানের জার্সি অঙ্গে পরিধাণ করে সেদেশের জাতীয় পতাকা প্রদর্শন করা। এটিকে বিচ্ছিন্ন ঘটনা বলব না। নতুন প্রজন্মকে দেশ প্রেমে উদ্ধুদ্ধ করে সুনাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে না পারা আমাদের জাতীয় ব্যর্থতা।

সম্প্রতি একজন প্রতিমন্ত্রী মিডিয়ায় অর্বাচীন কথা বলেছেন এবং একজন চলচিত্র কন্যার সঙ্গে শ্রবণ অযোগ্য টেলি সংলাপ করেছেন। যা প্রকাশিত হওয়ার পর তাকে মন্ত্রীসভা থেকে অপসারণ করা হয়েছে, আওয়ামী লীগ তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নিয়েছে, চূড়ান্ত শাস্তির প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।

রাজনৈতিক নাবালক প্রতিমন্ত্রীর ভুল ও অপরাধের প্রেক্ষিতে আওয়ামী লীগ দ্রুত ব্যবস্থা নিয়েছে। প্রতিপক্ষ রাজনৈতিক দল বিএনপি, সুশীল সমাজ এবং আওয়ামী লীগের অসংখ্য নেতাকর্মী নারীর সম্মান ইস্যুতে বেশ সোচ্চার হয়েছিলেন। সরকার জনমনে সৃষ্ট ক্ষোভের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করতে কুন্ঠাবোধ করে নি। এটাই গণতন্ত্রের সৌন্দর্য। রাজনৈতিক নেতাকর্মীও মানুষ। মানুষ মাত্রই ভুল করবেন সেটি স্বাভাবিক। কোন রাজনৈতিক নেতা ভুল বা অপরাধ করলে রাজনৈতিক দল তাকে প্রতিপালন না করে শাস্তির আওতায় আনলে দল আরোও উজ্জ্বল হয় এবং গণতন্ত্র বিকশিত হয়।

অতিসম্প্রতি বিএনপি'র একজন যুগ্ম মহাসচিব ও যুবদলের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতির মহান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সম্পর্কে উচ্চারণ অযোগ্য কতিপয় কটুবাক্য সামাজিক মিডিয়ায় ভাসছে। যারা একজন অপেক্ষাকৃত কমবয়সী প্রতিমন্ত্রীর কটুবাক্যে আহত হয়ে প্রতিবাদ করেছেন তাদের সাধুবাদ জানাই। এই তারাই একজন পরিপক্ক রাজনীতিবিদ কর্তৃক জগৎ বিখ্যাত নারী সরকার প্রধান ও সিনিয়র নারী রাজনীতিবিদ সম্পর্কে আপত্তিকর বক্তব্যের প্রতি কেন ঘৃণা প্রদর্শন করছেন না ? এটি কোন নৈতিকতার পর্যায়ে পড়ে ?

এখোনো বিএনপিকে এই বিষয়ে কোন সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ বা দুঃখ প্রকাশ করতে দেখা গেল না।

যেহেতু বিএনপির রাজনৈতিক সংস্কৃতি সহনশীলতা, পরমতের প্রতি শ্রদ্ধাবোধসম্পন্ন অহিংস শ্বাশতঃ সংস্কৃতির পরিপন্থী, সেহেতু তাদের নিকট শিষ্ঠাচার আশা করাও দুস্কর। তারা বাঙালির সকল মূল্যবোধ ধ্বংসের প্রাণান্তকর চেষ্টা করে যাচ্ছেন।

কিন্তু যারা অরাজনৈতিক, যারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনাসমৃদ্ধ, যারা মুক্তবুদ্ধিসম্পন্ন তাদের বিবেক কোন সিরাপে আচ্ছন্ন হয়ে পড়ল !!!!!

লেখকঃ সাংগঠনিক সম্পাদক, বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ 



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: