জলবায়ু বিপর্যয় মোকাবিলায় বাংলাদেশের ভূমিকা ও তরুণদের করণীয়

সময় ট্রিবিউন | ৩ নভেম্বর ২০২১, ০১:৫০

ছবিঃ সংগৃহীত

মানবসৃষ্ট পরিবেশ বিপর্যয়ের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর শিল্পিত ভাষায় উচ্চারণ করেছিলেন, ‘দাও ফিরে সে অরণ্য, লও এ নগর।’

বৈশ্বিক জলবায়ু বিপর্যয়ের ফলে পৃথিবীবাসী এক অনাগত ভয়াল আতঙ্কের মধ্য দিয়ে দিনাতিপাত করছে। পরিবর্তিত জলবায়ুর প্রভাবে সৌরজগতের একমাত্র বসবাসযোগ্য গ্রহ পৃথিবী তার আহ্নিক ও বার্ষিক গতিতে এনেছে অভূতপূর্ব পরিবর্তন। এ পরিবর্তন মানবজাতির জন্য যে ইতিবাচক নয় তা সহজেই অনুমেয়। প্রতিবছর বেড়ে চলছে পৃথিবীর গড় তাপমাত্রা, আর্কটিক অঞ্চলের লক্ষ-কোটি বছরের পুরাতন গ্লেসিয়ার(হিমবাহ), বরফের পাহাড় ক্রমশ গলে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বাড়ছে সলিলসমাধি ঘটছে উপকুলীয় অঞ্চল। এসব বরফের নিচে লক্ষ-কোটি বছর ধরে চাপাপড়া সুপ্রাচীন মারণঘাতি সুপ্ত অনুজীব ভাইরাস ব্যাকটেরিয়াগুলো পুনরায় প্রাণ ফিরে পেয়ে মানবজাতিসহ অন্যান্য প্রাণীকুলের প্রাণনাশের কারণ হয়ে উঠছে। যার সাম্প্রতিক পরিণতি হিসেবে বৈশ্বিক মহামারী কোভিড১৯ ভাইরাস, সার্স ভাইরাস, ইবোলা ভাইরাস, ব্ল্যাক ফাঙ্গাস সহ নাম না জানা বহু অনুজীবের ভয়াল সংক্রমণে বিশ্বব্যাপী কোটি মানুষের প্রাণহানীর দগদগে ক্ষত প্রতিনিয়ত বেড়েই চলেছে। 

বৈশ্বিক জলবায়ু বিপর্যয়ের ফলে বিশ্বব্যাপী মানুষের প্রাণহানীর পাশাপাশি সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধির সাথে সাথে উপকুলীয় অঞ্চলগুলো সমুদ্রগর্ভে বিলীন হওয়ার ভয়াবহ সংকটের দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে। এতে মানুষ বাস্তুচ্যূত হওয়ার পাশাপাশি সমুদ্রের নোনাপানি নদীতে প্রবাহিত হয়ে মিঠাপানিকে লবণাক্ত করে মানুষসহ অন্য স্থলচর প্রাণীকূলকে অস্তিত্ব সংকট ও বিলুপ্তির পথে এগিয়ে নিচ্ছে। তাই জলবায়ুর বিরূপ পরিবর্তন প্রতিরোধে বিশ্বের ধনী ও উন্নতরাষ্ট্রগুলোকে দায়িত্ব নিয়ে অনুন্নত ও উন্নয়নশীল রাষ্ট্রগুলোর সাথে দ্রুততম সময়ের মধ্যে সুপরিকল্পিত পদক্ষেপ বাস্তবায়নে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার কোন বিকল্প নেই। 
অন্যথায় নগরে আগুণ লাগলে যেমন দেবালয় রক্ষা পায়না তেমনি বৈশ্বিক জলবায়ুর বিরূপ প্রভাব থেকে উন্নত ধনী রাষ্ট্রগুলোও রক্ষা পাবেনা। কোভিড-১৯ মহামারীতে যা ইতোমধ্যে বিশ্ববাসী চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে চলছে।

শিল্পোন্নত দেশগুলোর অতিরিক্ত কার্বণ নিঃসরণ, আমেরিকা,উত্তরকোরিয়া,রাশিয়া ও চীনসহ যুদ্ধবাজ সাম্রাজ্যবাদী দেশগুলোর প্রতিবছর পারমাণবিক অস্ত্র ও তেজস্ক্রিয় অস্ত্রের বিস্ফোরণ মহড়া পরীক্ষানিরীক্ষার মত খামখেয়ালি কর্মযজ্ঞ মানবজাতির জন্য হুমকি স্বরূপ । এদিকে আমরা প্রতিনিয়তই আমাদের নাগরিক জীবনের বিপর্যস্ত প্রকৃতি ও খাদ্যের ভেজাল নিয়ে উদ্বিগ্ন । কবিগুরু বহুকাল পূর্বেই প্রাণ প্রকৃতির অতি প্রয়োজনীয় প্রসঙ্গটি উপলব্ধী করে প্রাণ-প্রকৃতির সমন্বিত ঐক্যের পক্ষে তাঁর দৃঢ় অবস্থান স্পষ্ট করে বলেছেন,

“…ইঁটের ‘পরে ইঁট, মাঝে মানুষ-কীট–
নাইকো ভালোবাসা, নাইকো খেলা।
কোথায় আছ তুমি কোথায় মা গো,
কেমনে ভুলে তুই আছিস হাঁগো।
উঠিলে নব শশী, ছাদের ‘পরে বসি
আর কি রূপকথা বলিবি না গো”!…

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গতকাল ১ নভেম্বর, বিশ্বের বৃহত্তম এবং গুরুত্বপূর্ণ জলবায়ু সংশ্লিষ্ট সম্মেলন সিওপি২৬-এ প্রদত্ত ভাষণে গুরুত্বারোপ করে বলেছেন, 'উন্নত দেশগুলোকে অবশ্যই তাদের জাতীয়ভাবে নির্ধারিত অবদান (এনডিসি) জানাতে হবে এবং জাতীয় কার্বন নিঃসরণ হ্রাস এবং জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব অভিযোজন বাস্তবায়ন করতে হবে।   

প্রধান নির্গমনকারীদের অবশ্যই তাদের অগ্রাধিকার সম্পন্ন এনডিসি পেশ এবং সেগুলি বাস্তবায়ন করতে হবে উল্লেখ করে পেন ওয়াই ফ্যান-এর প্লেনারি-২-তে জাতিসংঘের জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত ফ্রেমওয়ার্ক কনভেনশনের (ইউএনএফসিসিসি) অধীনে কনফারেন্স অব দি পার্টিস (সিওপি২৬) সম্মেলনের ২৬তম অধিবেশনে জাতীয় বিবৃতি  দেয়ার সময় তিনি চারটি প্রস্তাবের মধ্যে প্রথম প্রস্তাবটি উত্থাপন করেন।  

প্রধানমন্ত্রী কার্বন নির্গমন হ্রাস করতে বলেন, তাঁর সরকার বিভিন্ন ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে যার মধ্যে রয়েছে- 

(১) দেশের এনডিসি আপডেট, 
(২)১২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিদেশী বিনিয়োগে ১০টি কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র বাতিল এবং 
(৩)২০৪১ সালের মধ্যে নবায়নযোগ্য উৎস থেকে বাংলাদেশের শক্তির ৪০ শতাংশ নিশ্চিত করা।  

যুক্তরাজ্য রোববার থেকে ১২ নভেম্বর পর্যন্ত কোপ২৬ আয়োজন করছে। রাষ্ট্রপ্রধান, প্রতিনিধি এবং প্রচারকর্মী জলবায়ু জরুরি অবস্থা মোকাবেলায় সমন্বিত প্রতিক্রিয়া নিয়ে আলোচনায় বসছেন।  

বিশ্বের প্রায় ২০০ টি দেশ সিওপি২৬-এ অংশ নিচ্ছে এবং দেশগুলোকে তাদের এনডিসি (পরিকল্পনা) জমা দিতে বলা হচ্ছে, যা কার্বন নির্গমন হ্রাসে প্যারিস চুক্তির মূল বিষয় ছিল।  

শীর্ষ সম্মেলনে দ্বিতীয় প্রস্তাবটি উত্থাপন করে ক্লাইমেট ভালনারেবল ফোরাম (CVF) এবং V20 (দ্য ভালনারেবল২০) এর সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, উন্নত দেশগুলোর উচিত অভিযোজন এবং প্রশমনের মধ্যে ৫০:৫০ ভারসাম্য রেখে বার্ষিক ১০০ বিলিয়ন ডলার প্রদানের প্রতিশ্রুতি পূরণ করা। 

তৃতীয় প্রস্তাবে তিনি বলেন, উন্নত দেশগুলোর উচিত সবচেয়ে ঝুঁকিতে থাকা দেশগুলোতে সাশ্রয়ী মূল্যে পরিচ্ছন্ন ও পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তি(Green Technology)  ছড়িয়ে দেয়া এবং সিভিএফ দেশগুলোর উন্নয়নের প্রয়োজনীয়তাকেও বিবেচনা করা।

প্রধানমন্ত্রী তার চতুর্থ ও চূড়ান্ত প্রস্তাবে বলেন, সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি, লবণাক্ততা বৃদ্ধি, নদী ভাঙন, বন্যা এবং খরার কারণে বাস্তুচ্যুত জলবায়ু অভিবাসীদের জন্য বিশ্বব্যাপী দায়বদ্ধতা ভাগ করে নেয়াসহ লোকসান ও ক্ষয়ক্ষতির বিষয়টি অবশ্যই সমাধান করতে হবে। 

তিনি বলেন, বিশ্বব্যাপী নির্গমনের ০.৪৭ শতাংশেরও কম দায় থাকার পরেও বাংলাদেশ জলবায়ু-ঝুঁকিপূর্ণ  দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম। এই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় ২০০৯ সালে ‘বাংলাদেশ ক্লাইমেট চেইঞ্জ ট্রাস্ট ফান্ড’ প্রতিষ্ঠা করার কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, গত সাত বছরে আমরা জলবায়ু সম্পর্কিত ব্যয় দ্বিগুণ করেছি। জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় তাঁর সরকার বিভিন্ন যে সব ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে, তা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, বর্তমানে আমরা জাতীয় অভিযোজন পরিকল্পনা প্রস্তুত করছি। সম্প্রতি আমরা একটি আশা জাগানিয়া এবং যুগোপযোগী এনডিসি প্রতিবেদন জমা দিয়েছি। প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, বাংলাদেশে রয়েছে বিশ্বের অন্যতম বিস্তৃত সৌরশক্তি কার্যক্রম। আমরা আশা করি, ২০৪১ সালের মধ্যে নবায়নযোগ্য উৎস থেকে আমাদের ৪০ শতাংশ জ্বালানি থাকবে। আমরা ১২ বিলিয়ন ডলার মূল্যের ১০টি কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র বাতিল করেছি। তিনি এ প্রসঙ্গে বলেন, তাঁর সরকার ‘মুজিব জলবায়ু সমৃদ্ধি পরিকল্পনা’ বাস্তবায়ন করতে যাচ্ছে- এটি জলবায়ুর ঝুঁকি থেকে টেকসই ও জলবায়ু সমৃদ্ধির পথে যাত্রা।
কক্সবাজার এলাকার পরিবেশ বিপর্যয়ের জন্য মায়ানমার থেকে অবৈধভাবে বিতাড়িত হয়ে বাংলাদেশে আশ্রিত রোহিঙ্গা শরনার্থীদের প্রসঙ্গে যৌক্তিক কার্যকারণ উল্লেখ করে বলেন, 'জোর পূর্বক বাস্তুচ্যুত ১১ লাখ মিয়ানমারের নাগরিক বা রোহিঙ্গাদের কারণে জলবায়ু প্রভাবের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার চেষ্টা করা হচ্ছে।'

জলবায়ু ভালনারেবল ফোরাম (সিভিএফ) এবং ভি-২০-র সভাপতি হিসেবে শেখ হাসিনা বলেন, আমরা জলবায়ু-ঝুঁকিপূর্ণ ৪৮টি দেশের স্বার্থ প্রচার করছি। গ্লোবাল সেন্টার অফ অ্যাডাপ্টেশনের ঢাকার দক্ষিণ এশিয়া অফিসের মাধ্যমে আমরা আঞ্চলিকভাবে সর্বোত্তম অনুশীলন এবং অভিযোজন অভিজ্ঞতা ভাগাভাগি করে চলেছি। তিনি বলেন, সিভিএফের পক্ষ থেকে বাংলাদেশ একটি জলবায়ু জরুরি চুক্তির চেষ্টা করছে।

বৈশ্বিক জলনায়ু বিপর্যয়ের সবচেয়ে বেশি ভুক্তভোগী বিশ্বের বৃহত্তম ব-দ্বীপ অঞ্চল  লালসবুজের বাংলাদেশ।
বিপর্যস্ত জলবায়ুর বিরূপ প্রভাবে প্রতিবছর সিডর,আইলা,আম্ফানের মতো ভয়াবহ প্রাকৃতিক দুর্যোগের কবলে পড়তে হয় বাংলাদেশকে। বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিকোন থেকে দেখা যায় যে এসব প্রাকৃতিক বিপর্যয় মূলত মানবসৃষ্ট বিপর্যয় শিল্পোউন্নত ধনী দেশগুলো অতিমাত্রায় কার্বন নিঃসরণ ঘটিয়ে বাংলাদেশের মত সমুদ্র তীরবর্তী অঞ্চলগুলোকে ভয়াবহভাবে ক্ষতির সম্মুখীন করে চলছে এক্ষেত্রে সাম্প্রতিককালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কয়েকটি অঙ্গরাজ্যে ভয়াবহ বন্যার সংবাদ সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে বাইডেন প্রশাসন বাংলাদেশের মত দেশগুলোর কষ্ট উপলব্ধী করে তাদের বোধোদয় ঘটলে প্যারিস চুক্তিতে পুনরায় যুক্ত হয়ে  মার্কিন সরকার বৈশ্বিক জলবায়ু বিপর্যয় প্রতিরোধে এগিয়ে আসে। 

এক্ষেত্রে বাংলাদেশের তরুণদের অবশ্যই বাংলাদেশ তথা মানবজাতির কল্যাণে মাতৃভূমির বৃহত্তম স্বার্থে আগামী প্রজন্মের জন্য একটি বাসযোগ্য বাংলাদেশ বিনির্মানের লক্ষ্যে জলবায়ু বিপর্যয়ের সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ ২০টি দেশের জোট V20 (দ্য ভালনারেবল২০) এর সভাপতি হিসেবে বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় শেখ হাসিনা কর্তৃক বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলন-২০২১ এ বিশ্বনেতৃবৃন্দের প্রতি উপস্থাপিত দাবিসমূহ আদায়ে সোচ্চার ভূমিকায় অবস্থান নেয়া। বাংলাদেশেসহ আন্তর্জাতিক অঙ্গণে অবস্থানরত বাংলা মায়ের ভূমির সন্তানরা জোরালো প্রচারের মাধ্যমে বাংলাদেশের পক্ষে বৈশ্বিক জনমত তৈরিতে স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে কাজ করলে বাংলাদেশ তার ন্যায্য অধিকার আদায়ে সক্ষম হবে বলে দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি।

ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য একটি বাসযোগ্য প্রাণ প্রাচুর্যময় স্বাধীনতার মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণের প্রত্যাশা পূরণে তারুণ্যকে এগিয়ে আসতে হবে। জাতির পিতার রক্তের ঋণ পরিশোধে আত্মপ্রত্যয়ী হয়ে দেশ ও জাতির সর্বাঙ্গীন কল্যাণে তরুণদের আত্মনিয়োগের কোন বিকল্প নেই। 

সেক্ষেত্রে তরুণ ছাত্রসমাজকে যেসব দায়িত্ব পালনে স্বতঃপ্রণোদিত হওয়া উচিত বলে মনে করি,

১) পরিবেশ রক্ষায় অব্যাহত গণসচেতনতা কার্যক্রমে অংশগ্রহণ,পরিবেশবান্ধব শিক্ষাঙ্গন বিনির্মানে সুপরিকল্পিত উদ্যোগ গ্রহণ ও তার যথাযথ বাস্তবায়নে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা,

২) প্লাস্টিক জাতীয় পণ্য ব্যবহারের স্বাস্থ্যগত ও পরিবেশগত কুফল সম্পর্কে সামাজিক সচেতনতা তৈরির পাশাপাশি প্লাস্টিকমুক্ত সমাজিক সংস্কৃতির বিকাশ সাধনে অব্যাহত প্রাতিষ্ঠানিক ও ব্যক্তিগত ক্যাম্পেইন পরিচালনা,

৩)নবায়নযোগ্য শক্তি ব্যবহারের সংস্কৃতি তৈরিতে জনমত সৃষ্টি ও ইলেক্ট্রনিক ডিভাইসের প্রতি আসক্তির কুফল সম্পর্কে সামাজিক সচেতনতা সৃষ্টিতে ভূমিকা রাখা,

৪) প্রাণ প্রকৃতি রক্ষায় সচেতন ভূমিকা,যেখানে সেখানে ময়লা আবর্জনা ফেলার অপসংস্কৃতি দূরীকরণে উদ্যোগ গ্রহণের পাশাপাশি তা আইনত দণ্ডনীয় জরিমানাযোগ্য অপরাধ হিসেবে চিহ্নিত করতে রাষ্ট্রীয় জনমর তৈরি করা,

৭) নিয়মিত বৃক্ষরোপণ কর্মসূচী ও বৃক্ষনিধনে নিরুৎসাহিত করার পাশাপাশি বৃক্ষনিধনকে নিরুৎসাহ প্রদান,

৮)পরিবেশ বিপর্যয়ের কুফল ও পরিবেশের গুরুত্ব সম্পর্কে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে অবহিতকরণ,

৯)সমুদ্র সৈকতে ও অন্যান্য পর্যটন এলাকায় পর্যটকদের ব্যবহৃত প্লাস্টিকের পানির বোতলসহ অন্যান্য পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর বর্জ্য আবর্জনা সংরক্ষনে সুপরিকল্পিত রাষ্ট্রীয় উদ্যোগ বাস্তবায়নে ছাত্রদের দাবি দাওয়া উপস্থাপন করা। 

১০)বন্য পশু-পাখিনিধনে ব্যক্তিগত পর্যায় থেকে ছাত্রসমাজকে দায়িত্বশীল ভূমিকায় অবতীর্ণ হতে হবে।

১১) পারিপার্শ্বিক জগতের প্রাণপ্রকৃতির প্রতি সচেতন সুনাগরিকসুলভ দায়িত্বশীল আচরণ প্রদর্শন।

১২) কীটনাশকমুক্ত কৃষি উৎপাদন,পরিবেশবান্ধব শিল্প উৎপাদনসহ অন্যান্য উৎপাদনমুখী কৌশল আবিষ্কারে  শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের গুরুত্বারোপ করা। 

১৩)সকল স্তরের তরুণ সমাজকে বৈশ্বিক জলবায়ু বিপর্যয়ের সম্ভাব্য সর্বোচ্চ ঝুঁকি সম্পর্কে সম্যক ধারণা রাখা এবং উদ্ভূত পরিস্থিতি মোকাবিলার যথোপযুক্ত পরিকল্পনা বাস্তবায়নে উদ্যোগী হওয়া উচিত।

পরিশেষে, আত্মজ তথা প্রজন্মের প্রতি অকৃত্রিম অনুরাগসিঞ্চিত সত্তা ঐতিহ্যবাহী বাংলা মঙ্গলকাব্যের ঐতিহাসিক চরিত্র ঈশ্বরী পাটনীর সে প্রবল অনুরোধ উচ্চারণের মধ্য দিয়ে সমাপ্তি টানছি,
"প্রণমিয়া পাটুনী কহিছে জোর হাতে,
আমার সন্তান যেনো থাকে দুধে ভাতে।"

লেখক:
ইয়াসির আরাফাত-তূর্য
সাংগঠনিক সম্পাদক,
বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।


আপনার মূল্যবান মতামত দিন: