লকডাউনের চেয়েও বেশি জরুরী জনসচেতনতা

নাহিদ হাসান রাসেল | ১৫ জুলাই ২০২১, ০০:০৩

নাহিদ হাসান রাসেল

মহামারী করোনা ভাইরাসের সংক্রমণের কারণে পুরো পৃথিবী আজ আতঙ্কিত। প্রতিনিয়ত লাখ লাখ মানুষ করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর মিছিলে শামিল হচ্ছে। করোনা ভাইরাসের কাছে আজ বিশ্বের উন্নত রাষ্ট্রগুলোও পরিস্থিতি সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছে। আক্রান্তের সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলছে। প্রতিনিয়ত করোনা ভাইরাসের ভ্যারিয়েন্ট চেঞ্জ হচ্ছে। যেহেতু করোনা ভাইরাস একটি ছোঁয়াচে রোগ তাই এ থেকে বাঁচার একমাত্র উপায় সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা।

বাংলাদেশ প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হয় ৭ই মার্চ ২০২০। তারপর থেকে করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে দেশে জাতীয়ভাবে লকডাউন ঘোষণা করা হয়। পর্যায়ক্রমে চলতে থাকে লকডাউন। তবু করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ দিন দিন বেড়েই চলেছে। দেশে এখন করোনার দ্বিতীয় ঢেউ চলছে। সবচেয়ে আশংকার কথা হচ্ছে করোনা ভাইরাসের ভ্যারিয়েন্ট প্রতিনিয়ত চেঞ্জ হচ্ছে। দেশে এ পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যা ১৬ হাজার ছাড়িয়েছে, আক্রান্তের সংখ্যা ১০ লাখের উপরে। এ সংখ্যা প্রতিনিয়ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। সংক্রমণ সামাল দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে সরকারকে। বারবার লকডাউনের মেয়াদ বাড়িয়েও সংক্রমণ রোধ করা সম্ভব হচ্ছে না। জনগণ লকডাউন উপেক্ষা করে ঘরের বাইরে বের হচ্ছে। জনসাধারণের মধ্যে মাস্ক না পরার প্রবণতাই বেশি। প্রশাসনের চোখকে ফাঁকি দিয়ে মানুষ যেখানে সেখানে ঘুরাফেরা করছে। আর্থসামাজিক দিক বিবেচনায় লকডাউন যথাযথভাবে কার্যকর করা সম্ভব হচ্ছে না। যার ফলে করোনা সংক্রমণ দিন দিন বেড়েই চলেছে। এভাবে চলতে থাকলে বাংলাদেশও পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের মত ভয়াবহ অবস্থা বিরাজ করার জোর সম্ভবনা রয়েছে । এ ব্যাপারে জনগণকেই এগিয়ে আসতে হবে। জনসাধারণ যদি নিজে থেকে সচেতন না হয়,স্বাস্থ্যবিধি মেনে না চলে তাহলে সরকারের পক্ষে থেকে শুধু শুধু লকডাউন দিয়ে করোনা ভাইরাস প্রতিরোধ করা সম্ভব না।এতে শুধু জনগণের ভোগান্তি বৃদ্ধি পাবে। কেউ যদি নিজে থেকে না খেতে চাই তাহলে তাকে জোর করে খাওয়ানে যাবে না। করোনা প্রতিরোধে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা যে নির্দেশনা দিয়েছে তা সকলকে মেনে চলতে হবে।

যেমনঃ- সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা, জনসমাগমে গেলে মাস্ক পরা, বাইরে থেকে ঘরে এসে সবান পানি দিয়ে ভাল করে হাত ধোঁয়া, কিচ্ছুক্ষণ পরপর হ্যাণ্ডস্যানিটাইজার ব্যবহার করা ইত্যাদির মাধ্যমে করোনা ভাইরাসকে নিস্ক্রিয় করা সম্ভব। জনগণ নিজে থেকে যখন এসব স্বাস্থ্যবিধি মনে চলবে তখনই লকডাউন সফল হবে। তাই এসব বিষয়ে জনসাধারণকে সচেতন হতে হবে। পরিবর্তনটা শুরু হোক আপন ঘর থেকে। আসুন নিজে সচেতন হয় অপরকে সচেতন করি। আপনি সুস্থ থাকলে সুস্থ থাকবে আপনার পরিবার, সুস্থ থাকবে আপনার দেশ। আর ভ্যাকসিন কার্যক্রম বাংলােদেশে ইদানিং বড় পরিসরে শুরু হয়েছে তাই যথাসম্ভব ভ্যাকসিন গ্রহণ করুন এবং সবাইকে এ সম্পর্কে সচেতন করুন। দিনে দিনে এভাবেই দূর হবে মহামারী, পৃথিবী হাসবে আপন মহিমায় এমনটাই প্রত্যাশা।

লেখকঃ নাহিদ হাসান রাসেল
শিক্ষার্থী, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়। 



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: