পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী মোঃ শাহাব উদ্দিন বলেছেন, দেশের ৬৪ জেলায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতিচিহ্ন অঙ্কিত স্থান নিয়ে ডকুমেন্টারি নির্মাণ করা প্রয়োজন। কারণ, যিনি আমাদের বাংলাদেশ নামক এই জাতিরাষ্ট্রের স্বপ্নদ্রষ্টা, যার সুযোগ্য ও দূরদর্শী নেতৃত্বে এক রক্তক্ষয়ী মুক্তিসংগ্রামের মাধ্যমে দেশ স্বাধীন হয়েছে তাঁর বর্ণাঢ্য জীবন ও আদর্শ বাঙালিদের জন্য অনুসরণীয়। সেই মহান নেতার সংগ্রামী জীবনের ৬৪ জেলায় স্মৃতির বিষয়ে বর্তমান ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে জানানোর জন্যই আলাদা আলাদাভাবে এই ডকুমেন্টারি নির্মাণ করতে হবে।
বুধবার (১১ আগস্ট) দুপুরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতিচিহ্ন অঙ্কিত স্থান নিয়ে মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসন নির্মিত ডকুমেন্টারি ‘খুঁজে ফিরি পিতার পদচিহ্ন’ এর মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে ভারচ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
জেলা প্রশাসক মীর নাহিদ আহসানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মৌলভীবাজার-৩ আসনের সংসদ সদস্য নেছার আহমদ, সংরক্ষিত নারী আসন-৩৬ এর সংসদ সদস্য সৈয়দা জোহরা আলাউদ্দিন, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মিছবাহুর রহমান, পৌরসভার মেয়র ফজলুর রহমান এবং সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ কামাল হোসেন প্রমুখ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে পরিবেশমন্ত্রী বলেন, সদ্যস্বাধীন দেশে ফিরে এসেই সাধারণ জনগণের জীবনমান উন্নয়নে বঙ্গবন্ধু দেশের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে ছুটে বেরিয়েছেন। বঙ্গবন্ধু পিছিয়ে পড়া চা-শ্রমিক ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর টানে হাওর, পাহাড়-চা বাগান ও সমতল ঘেরা অপূর্ব সৌন্দর্যমণ্ডিত মৌলভীবাজার জেলায় এসেছেন বার বার।
মন্ত্রী বলেন, ১৯৭০ সালের সাধারণ নির্বাচনে বঙ্গবন্ধু মৌলভীবাজার জেলার বড়লেখা রেলস্টেশন মাঠে আয়োজিত এক বিশাল নির্বাচনী জনসভায় ভাষণ দিতে এসেছিলেন। তখন আমি দশম শ্রেণির ছাত্র। তাঁর ভাষণ শুনে অধিকাংশ মানুষের মতো আমিও আওয়ামী লীগ তথা বঙ্গবন্ধুর আদর্শের অনুসারী হই।
তিনি বলেন, আজ সমগ্র জাতি গভীর শোকের সাথে বঙ্গবন্ধুর শাহাদত বার্ষিকী পালন করছে। বঙ্গবন্ধু যে অসাম্প্রদায়িক ও গণতান্ত্রিক চেতনা এবং স্বাধীন ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, আধুনিকায়ন, ঐতিহ্য, সংস্কৃতি, স্বাধীনতা ও সম্মানের মশাল প্রজ্বলন করেছিলেন তা এখন তাঁর কন্যা প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আলোকিত করছে। প্রতিটি ক্ষেত্রেই বাংলাদেশ এখন বিশ্বের বিস্ময়, রোল মডেল।
জাতির পিতার আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে তাঁর স্বপ্নের ক্ষুধা ও দারিদ্রমুক্ত, প্রগতিশীল, জঙ্গি ও সন্ত্রাসবাদবিরোধী, অসাম্প্রদায়িক এবং উন্নত-সমৃদ্ধ সোনার বাংলা বিনির্মাণে সবাই নিজ নিজ অবস্থান থেকে আন্তরিকভাবে কাজ করছি বলে উল্লেখ করেন তিনি।
ডকুমেন্টারিতে মৌলভীবাজার জেলার ৭ উপজেলায় বঙ্গবন্ধুর স্মৃতিচিহ্নের তথ্য ও ফুটেজ অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। মৌলভীবাজার সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠ, বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল, শহীদ মিনার, আনসার ফিল্ড (বর্তমান ডিসি অফিস), শাহ মোস্তফা সড়কে ওয়াপদা রেস্ট হাউস, মৌলভীবাজার ক্লাব, দেওয়ানি মসজিদ, জনমিলন কেন্দ্র, শ্রীমঙ্গলের ফুলছড়া চা-বাগানের ডাকবাংলো, নন্দরানী চা-বাগান, ডা. আলী সাহেবের বাসা, টি-রিসোর্ট, শহীদ মিনার, তৎকালীন সোনালি ব্যাংক প্রাঙ্গণ, বড়লেখা, জুড়ী, কুলাউড়া, রাজনগরের টেংরাবাজার ও কমলগঞ্জের শমসেরনগর থেকে বঙ্গবন্ধুর স্মৃতিচিহ্ন ধারণ করা হয়েছে।
বঙ্গবন্ধুকে দেখেছেন, বঙ্গবন্ধুর সাথে স্মৃতি আছে এমন ব্যক্তিবর্গের সাক্ষাৎকারও অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। জেলা তথ্য অফিসের মাধ্যমে ডকুমেন্টারিটি জেলার সাতটি উপজলার গুরুত্বপূর্ণ ও জনবহুল স্থানে প্রদর্শন করা হবে।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: