১৯৭তম ঈদের জামাতের জন্য প্রস্তুত ঐতিহাসিক শোলাকিয়া ময়দান

কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি | ৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৭:০৭

ছবিঃ সংগৃহীত
দেশের বৃহত্তম পবিত্র ঈদুল ফিতরের জামাতের জন্য প্রস্তুত কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দান।
 
এবার শোলাকিয়ায় ১৯৭তম ঈদুল ফিতরের সর্ববৃহৎ জামাত অনুষ্ঠিত হবে। এবারো নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে শোলাকিয়ার ঈদের জামাতের আয়োজন করা হয়েছে।
 
জানা যায়, সকাল ১০ টায় ঈদের জামাত শুরু হবে। এতে ইমামতি করবেন বাংলাদেশ ইসলাহুল মুসলেমিন পরিষদের চেয়ারম্যান মাওলানা ফরিদ উদ্দিন মাসউদ।
 
ঈদ জামাতে জায়নামাজ ছাড়া আর কিছু সঙ্গে না আনতে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এরই মধ্যে জামাতের জন্য ঈদগাহ মাঠের প্রস্তুতি প্রায় শেষ পর্যায়ে।
 
রবিবার (৭ এপ্রিল) সকালে র‌্যাব-১৪ অধিনায়ক অতিরিক্ত ডিআইজি মোহাম্মদ মহিবুল ইসলাম খান, বিপিএম (বার), জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রাসেল শেখ, বিপিএম-সেবা, পিপিএম (বার), র‌্যাব-১৪, সিপিসি-২ কিশোরগঞ্জ ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার, স্কোয়াড্রন লিডার মো. আশরাফুল কবির সহ জেলা প্রশাসন ও জেলা পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা শোলাকিয়া মাঠের সার্বিক পরিস্থিতি পরিদর্শন করেন।
 
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘প্রতি বছরের ন্যায় এবারো বিপুল উৎসাহ উদ্দীপনা ও ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে ১৯৭তম পবিত্র ঈদুল ফিতরের জামাত অনুষ্ঠিত হবে। মোবাইল ফোন ও ছাতা নিয়ে মাঠে প্রবেশ করা যাবে না।
 
পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রাসেল শেখ বলেন, ‘ঈদ জামাতকে ঘিরে চার স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে। নিরাপত্তা পর্যবেক্ষণ করতে ওয়াচ টাওয়ার ছাড়াও সাদা পোশাকে পুলিশের তৎপরতা অব্যাহত থাকবে। আমরা নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজাচ্ছি। মেটাল ডিটেক্টর, আর্চওয়ের মাধ্যমে চেকিং হয়ে মুসুল্লিরা মাঠে প্রবেশ করবে। কাউন্টার টেরোরিজমসহ বিভিন্ন সংস্থার সদস্যরা দায়িত্বে নিয়োজিত থাকবেন। আশা করি নিরাপদে, নির্বিঘ্নে মুসুল্লিরা নামাজ আদায় করে ঘরে ফিরতে পারবেন।
 
র‍্যাব-১৪ অধিনায়ক অতিরিক্ত ডিআইজি মোহাম্মদ মহিবুল ইসলাম খান সাংবাদিকদের বলেন, ‘ঈদ জামাতকে ঘিরে নিরাপত্তা দিতে আমরা প্রস্তুত। প্রতি বছরের ন্যায় এবারো আমরা সর্বোচ্চ নিরাপত্তা প্রদানের ব্যবস্থা করেছি। আশা করছি নির্বিঘ্নে নামাজ আদায় করে বাড়িতে ফিরে যেতে পারবেন মুসুল্লিরা।

শোলাকিয়ায় ঈদের জামাতে অংশগ্রহনের সুবিধার্থে ভৈরব-কিশোরগঞ্জ-ভৈরব ও ময়মনসিংহ-কিশোরগঞ্জ-ময়মনসিংহ লাইনে ‘শোলাকিয়া ঈদ স্পেশাল' নামে দুটি স্পেশাল ট্রেন চলাচল করবে।

শোলাকিয়া ঈদ স্পেশাল-১১ ভৈরব থেকে ছাড়বে সকাল ৬ টায় কিশোরগঞ্জ পৌঁছবে সকাল ৮ টায়, আবার শোলাকিয়া ঈদ স্পেশাল-১২ কিশোরগঞ্জ থেকে ছেড়ে যাবে দুপুর ১২ টায় ভৈরব পৌঁছবে দুপুর ২ টায়। শোলাকিয়া ঈদ স্পেশাল-১৩ ময়মনসিংহ থেকে ছাড়বে সকাল পৌনে ৬ টায় কিশোরগঞ্জ পৌঁছবে সকাল সাড়ে ৮ টায়, আবার শোলাকিয়া ঈদ স্পেশাল-১৪ কিশোরগঞ্জ থেকে ছেড়ে যাবে দুপুর ১২ টায় এবং ময়মনসিংহে পৌঁছবে বেলা ৩ টায়।

শোলাকিয়া মাঠের রেওয়াজ অনুযায়ী, জামাত শুরুর আগে শটগানের ৬টি ফাঁকা গুলি ছোড়া হবে। জামাত শুরুর ৫ মিনিট আগে ৩টি, ৩ মিনিট আগে ২টি এবং ১ মিনিট আগে ১টি গুলি ছুড়ে নামাজের জন্য মুসল্লিদের সঙ্কেত দেয়া হবে। জনশ্রুতি আছে, ১৮২৮ সালে এই মাঠে ঈদের জামাতে প্রায় সোয়া লাখ মুসল্লি এক সাথে নামাজ আদায় করেছিলেন। সেই থেকে এ মাঠের নাম হয় ‘সোয়া লাখিয়া’ যা এখন শোলাকিয়া নামেই পরিচিত।

 



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: