১২ দস্যুর নিয়ন্ত্রণে এমভি আব্দুল্লাহ, নাবিকরা অক্ষত

সময় ট্রিবিউন | ১৫ মার্চ ২০২৪, ১৪:৪৫

সংগৃহীত

ভারত মহাসাগরে ছিনতাই হওয়া বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আব্দুল্লাহতে ১২ জন জলদস্যুর উপস্থিতি নিশ্চিত হয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন নেভাল ফোর্স (ইইউএনএভিএফওআর)। সাগরের এই অঞ্চলে অপারেশন আটলান্টা নামে কার্যক্রম পরিচালনা করছে ইইউএনএভিএফওআর।

বৃহস্পতিবার (১৪ মার্চ) রাতে ওয়েবসাইটে দেওয়া এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, জলদস্যুদের হাতে জিম্মি বাংলাদেশের বাণিজ্যিক জাহাজ আব্দুল্লাহর ওপর অপারেশন আটলান্টা নজর রাখছে। জাহাজটির বর্তমান অবস্থান সোমালিয়ার মোগাদিসু থেকে ৬০০ নটিক্যাল মাইল পূর্বে। জাহাজটি বর্তমানে এখানে নোঙর করে আছে।

এতে আরও বলা হয়েছে, পর্যবেক্ষণে জাহাজটিতে ১২ জন দস্যুর উপস্থিতি নিশ্চিত হওয়া গেছে। যদিও আক্রমণের সময় দলটিতে ২০জন ছিলেন। সম্ভবত এই দস্যুদলের সদস্যরাই এ অঞ্চলে কিছুদিন আগে এমভি রুয়েন নামের আরেক জাহাজ ছিনতাই করেছিল।

সোমালি উপকূলে জলদস্যুদের সম্ভাব্য তিনটি ঘাঁটির সন্ধান পেয়েছে ইইউ নেভি। তারা মনে করছেন, এই ঘাঁটিগুলো থেকেই ছিনতাই পরিচালনা করা হচ্ছে।

বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, পরিস্থিতি এখনও অপরিবর্তিত আছে। জাহাজের ক্রুরা এখনও নিরাপদ আছেন বলেই জানা গেছে। এ ঘটনায় বাংলাদেশ ও সোমালি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে নিবিড় যোগাযোগ রাখার কথা জানিয়েছে অপারেশন আটলান্টা।

গত ৪ মার্চ বাংলাদেশের এস আর শিপিংয়ের ১৩ মিটার গভীরতার জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ মোজাম্বিকের মাপুতু বন্দর থেকে কয়লা নিয়ে সংযুক্ত আরব আমিরাতের উদ্দেশে রওনা দেয়। এরপর গত মঙ্গলবার দুপুর দেড়টার দিকে খবর আসে, ভারত মহাসাগরে জাহাজটি ছিনতাই হয়েছে।

জাহাজটিতে জিম্মি এক বাংলাদেশি নাবিক জানিয়েছেন, নৌবাহিনীর দুটি জাহাজ জিম্মিদের উদ্ধার করতে এলেও শেষ পর্যন্ত তা সম্ভব হয়নি।

ওই নাবিক বলেন, ‘কারণ তারা তখন আমাদের জিম্মি করে রাখে, মাথায় বড় বড় অস্ত্র তাক করে। দুটি বড় বড় ফ্রিগেট আসছিল। সব ইকুইপমেন্ট নিয়ে। কিন্তু তারা (জলদস্যুরা) এসবে ভয় পায় না। কারণ তারা আমাদের জিম্মি করে রাখে। আমাদের মাথায় গুলি ধরে রাখে। আমাদের তারা রেস্ট্রিকটেড করে রাখে। তবে এখন পর্যন্ত আঘাত করেনি। সবাই একটা রুমে ঘুমাচ্ছি। একটা ওয়াশরুম ব্যবহার করছি।’ 

বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকেও বলা হয়েছে, জাহাজটি উদ্ধারে তৎপরতা চালাচ্ছেন তারা।

‘ভারত মহাসাগরে সোমালিয়ার জলদস্যুর কবলে পড়া বাংলাদেশের পতাকাবাহী জাহাজ এমভি আব্দুল্লাহর ২৩ বাংলাদেশি নাবিক সুস্থ আছেন। তাদেরসহ জাহাজ ফেরত আনাই আমাদের প্রথম লক্ষ্য এবং সেই লক্ষ্য থেকে আমরা বিচ্যুত হব না’ বলেছেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মারিটাইম অ্যাফেয়ার্স ইউনিট সচিব রিয়ার অ্যাডমিরাল (অব.) মো. খুরশেদ আলম।

বৃহস্পতিবার (১৪ মার্চ) দুপুরে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এ বিষয়ে সাংবাদিকরা জানতে চাইলে তিনি এ কথা বলেন। এ সময় পূর্বে অপহৃত দেশি জাহাজ ‘জাহান মনি’ এবং মালয়েশিয়ার জাহাজ ‘আল-বেদো’তে কর্মরত সব বাংলাদেশি নাবিকদের অক্ষত উদ্ধারের কথাও সংক্ষেপে জানান সচিব।

জলদস্যুরা মুক্তিপণ চেয়েছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, গণমাধ্যমে মুক্তিপণের কথা প্রকাশিত হয়ে থাকলে তা কল্পিত। আমাদের কাছে এখনো কোনও মুক্তিপণ তারা চায়নি, মুক্তিপণের ব্যাপারে কোনও যোগাযোগও করেনি।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: