আজিমপুরে চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন হাবীবুল্লাহ সিরাজী

সময় ট্রিবিউন | ২৫ মে ২০২১, ২১:৫২


রাজধানীর আজিমপুর কবরস্থানে চিরনিদ্রায় শায়িত হয়েছেন কবি হাবীবুল্লাহ সিরাজী। মঙ্গলবার (২৫ মে) সকাল ১০টার দিকে বাংলা একাডেমিতে নজরুল মঞ্চে তাকে শেষ শ্রদ্ধা জানানো হয়। এরপর এখানে প্রথম জানাজা শেষে আজিমপুর কবরস্থানে নেয়া হয়। সেখানে দ্বিতীয় জানাজা শেষে তাকে দাফন করা হয়। গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাংলা একাডেমির সচিব ও ভারপ্রাপ্ত মহাপরিচালক এ এইচ এম লোকমান।

  • এর আগে সোমবার রাত ১১টায় রাজধানীর স্পেশালাইজড হাসপাতালে বাংলা ভাষার অন্যতম কবি ও বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক কবি হাবীবুল্লাহ সিরাজী মারা যান।

বাংলা একাডেমির মহাপরিচালকের বয়স হয়েছিল ৭২ বছর। তিনি স্ত্রী, দুই মেয়ে ও এক ছেলে রেখে গেছেন। ক্যানসারে আক্রান্ত হাবীবুল্লাহ সিরাজীকে গত ২৫ এপ্রিল রাজধানীর শ্যামলীর বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

কবি হাবীবুল্লাহ সিরাজীর পারিবারিক সূত্র জানায়, রমজান মাসের মাঝামাঝি স্পেশালাইজড হাসপাতালে কবির অস্ত্রোপচার করা হয়। এর পরই তিনি গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন। কৃত্রিম শ্বাস-প্রশ্বাসের মাধ্যমে তাকে চিকিৎসকরা বাঁচিয়ে রাখার চেষ্টা করেছিলেন।

ষাট দশকের বাংলা ভাষার অন্যতম প্রধান কবি হাবীবুল্লাহ সিরাজী ভাষা ও চিন্তায় নিজস্ব কাব্যধারা তৈরি করেন। ফরিদপুরে ১৯৪৮ সালের ৩১ ডিসেম্বর তার জন্ম। তিনি বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৭০ সালে স্নাতক ডিগ্রি নেন। কবিতা ছাড়াও গুরুত্বপূর্ণ বহু গদ্যগ্রন্থের প্রণেতা তিনি। ষাটের বেশি গ্রন্থের রচয়িতা হাবীবুল্লাহ সিরাজীর প্রধান কাব্যগ্রন্থের মধ্যে রয়েছে দাও বৃক্ষ দাও দিন, মোমশিল্পের ক্ষয়ক্ষতি ও হাওয়াকলে জোড়া গাড়ি।

হাবীবুল্লাহ সিরাজীর উপন্যাসের মধ্যে রয়েছে- ‘কৃষ্ণপক্ষে অগ্নিকাণ্ড’, ‘পরাজয়’, ‘আয় রে আমার গোলাপজাম’, অনুবাদ ‘মৌলানার মন : রুমীর কবিতা’, আত্মজৈবনিক গ্রন্থ ‘আমার কুমার’, গদ্যগ্রন্থ ‘দ্বিতীয় পাঠ’, ‘মিশ্রমিল’, ‘গদ্যের গন্ধগোকুল’, শিশুসাহিত্য ‘ইল্লিবিল্লি’, ‘নাইপাই’, ‘রাজা হটপট’, ‘ফুঁ’, ‘ফুড়ুত্’, ‘মেঘভ্রমণ’, ‘ছয় লাইনের ভূত’ ও ‘ছড়াপদ্য’।

তিনি ২০১৮ সাল থেকে বাংলা একাডেমির মহাপরিচালকের দায়িত্ব পালন করছিলেন।

হাবীবুল্লাহ সিরাজী ২০১৬ সালে একুশে পদক, ২০১০ সালে রূপসী বাংলা পুরস্কার এবং কবিতালাপ সাহিত্য পুরস্কার, ২০০৭ সালে বিষ্ণু দে পুরস্কার, ১৯৯১ সালে বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার, ১৯৮৯ সালে আলাওল সাহিত্য পুরস্কার, ১৯৮৭ সালে যশোর সাহিত্য পরিষদ পুরস্কারসহ দেশি-বিদেশি নানা পুরস্কার ও সম্মাননায় ভূষিত হয়েছেন।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: