খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের উৎসব বড়দিন উৎসবমুখর ও নিরাপদ পরিবেশে সম্পন্ন করতে ইতোমধ্যে সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)।
বিগত বড়দিনের উৎসবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা ও নিরাপদ পরিবেশ সৃষ্টির লক্ষ্যে ডিএমপি যেসব পদক্ষেপ গ্রহণ করে তা সর্বমহলে প্রশংসিত হয়। এরই ধারাবাহিকতায় এবারও বড়দিনের সুসংহত নিরাপত্তা পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।
অনুষ্ঠান উপলক্ষে প্রত্যেক গির্জায় স্থায়ীভাবে পুলিশ মোতায়েনের পাশাপাশি পুলিশি টহল বাড়ানোসহ শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে চেকপোস্ট স্থাপন ও গোয়েন্দা কার্যক্রম নেওয়া হয়েছে।
রোববার (২৪ ডিসেম্বর) এ তথ্য জানান ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ফারুক হোসেন।
তিনি জানান, ডিএমপি বিশ্বাস করে পুলিশের গৃহীত পদক্ষেপের পাশাপাশি সর্বস্তরে সচেতনতাবোধ তৈরি করা গেলে পুলিশ ও বড়দিন উদযাপন কমিটি/পুণ্যার্থীদের যৌথ উদ্যোগ ও অংশগ্রহণে উৎসবমুখর এবং নিরাপদ পরিবেশে বড়দিন উদযাপন করা যাবে। পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা ‘ধর্ম যার যার, উৎসব সবার’ এ বাণীকে আরও সমুন্নত করা সম্ভব হবে। সে লক্ষ্যকে সামনে রেখে বুধবার (১৩ ডিসেম্বর) ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান স্বাক্ষরিত এক বার্তায় এসব নিরাপত্তা নির্দেশনা মেনে চলার অনুরোধ করা হয়।
নির্দেশনাগুলো হলো:
১. প্রতিটি গির্জায় রাত্রিকালীন ভিডিও ধারণ ক্ষমতাসম্পন্ন পর্যাপ্ত সিসি ক্যামেরা স্থাপন এবং ক্যামেরার ফুটেজ সংরক্ষণের ব্যবস্থা করা।
২. প্রতিটি গির্জার জন্য নিজস্ব স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ এবং স্বেচ্ছাসেবকদের আলাদা পোশাক, দৃশ্যমান পরিচয়পত্র ও আর্মডব্যান্ড নির্ধারণ করে দেওয়া। স্বেচ্ছাসেবকদের নামের তালিকা স্থানীয় থানায় পাঠানো ও থানার অফিসারের উপস্থিতিতে স্বেচ্ছাসেবকদের ব্রিফিং করার ব্যবস্থা করা।
৩. গির্জায় দর্শনার্থীদের ব্যাগ/পোটলা ইত্যাদি নিয়ে প্রবেশ না করার জন্য অনুরোধ করা। তাছাড়া গির্জা এলাকায় সন্দেহজনক কোনো ব্যাগ/পোটলা পড়ে থাকতে দেখলে বা দৃষ্টিগোচর হলে নিয়োজিত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে তাৎক্ষণিক অবহিত করা।
৪. আর্চওয়ে গেট স্থাপন এবং মেটাল ডিটেক্টর ব্যবহার করে তল্লাশির ব্যবস্থা করা।
৫. প্রতিটি গির্জায় অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র স্থাপন এবং অগ্নি দুর্ঘটনা এড়ানোর জন্য প্রয়োজনীয় সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া।
৬. আলোক-সজ্জার কাজে গুনগতমান সম্পন্ন বৈদ্যুতিক তার ব্যবহার করা।
৭. আনন্দ উৎসবে মাদকের ব্যবহার, ফানুস উড়ানো ও আতশবাজি করা থেকে বিরত থাকা।
৮. প্রতিটি গির্জা ও অনুষ্ঠান এলাকায় পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা করা এবং বিকল্প আলোর (জেনারেটর) ব্যবস্থা রাখা।
৯. প্রতিটি গির্জার জন্য পরিদর্শন রেজিস্টার প্রস্তুত এবং রক্ষণাবেক্ষণের ব্যবস্থা করা।
১০. আবাসিক এলাকায় বাড়ির ছাদ, রেস্টুরেন্ট ও হোটেলে ডিজে পার্টি এবং উচ্চ শব্দে সাউন্ড সিস্টেম ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকা।
১১. ধর্মীয় সম্প্রীতি বজায় রাখা। ব্যক্তিগত পর্যায়ে উৎসব উদযাপনের ক্ষেত্রে প্রতিবেশীর যাতে কোনো অসুবিধা না হয় সে বিষয়ে সচেতন থাকা।
১২. স্থানীয় কাউন্সিলর, গণমান্য ব্যক্তি ও পুলিশ কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে শান্তি-শৃঙ্খলা কমিটি গঠন করা এবং তাদের নাম ও মোবাইল নম্বর সম্বলিত ব্যানার দৃশ্যমান স্থানে প্রদর্শনের ব্যবস্থা করা।
১৩. কোনো দুর্ঘটনা বা অপরাধ সংঘটনের আশঙ্কা হলে দ্রুত পুলিশকে জানানো এবং জরুরি প্রয়োজনে গির্জা কমিটি সংশ্লিষ্ট থানার ফোকাল পয়েন্ট অথবা ৯৯৯- নম্বরে সেবা নিতে অথবা মেসেজ-টু-কমিশনারের জরুরি নাম্বার ০১৩২০-২০২০২০ ও ০১৩২০-১০১০১০ এসএমএস করা।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: