চ্যানেল-২৪ কৃষিমন্ত্রীর পুরো বক্তব্য সঠিকভাবে উপস্থাপন করেনি বলে দাবি করেছে কৃষি মন্ত্রণালয়। সম্প্রতি মন্ত্রীর একটি আলোচিত বক্তব্যকে নিয়ে আলোচনা-সমালোচনার মুখে কৃষি মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ দাবি করা হয়।
মঙ্গলবার (১৯ ডিসেম্বর) মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র তথ্য অফিসার কামরুল ইসলাম ভূঁইয়া স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ দাবি করা হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘বিগত ১৭ ডিসেম্বর নিজ বাসভবনে চ্যানেল-২৪ কে দেওয়া কৃষিমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. মো. আবদুর রাজ্জাকের বক্তব্য নিয়ে রাজনৈতিক মহলে এবং গণমাধ্যমে নানা ধরনের প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হওয়ায় তিনি গতকাল ১৮ ডিসেম্বর তার অফিসে গণমাধ্যমকর্মীদের কাছে নিজ বক্তব্যের ব্যাখ্যা তুলে ধরেন। তিনি তার স্বভাবসুলভ যুক্তিপূর্ণ ভাষায় নিজ বক্তব্যের যে ব্যাখ্যা দিয়েছেন তা এতটাই স্পষ্ট যে সেই বক্তব্য নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়ানোর কোনো অবকাশ নেই।’
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, ‘তিনি সুস্পষ্ট ভাষায় বলেছেন— আওয়ামী লীগ এ দেশের প্রাচীনতম বৃহৎ রাজনৈতিক দল এবং ঐতিহ্যগতভাবে গণতান্ত্রিক পন্থায় বিশ্বাসী। আওয়ামী লীগ অত্যন্ত আন্তরিকভাবে সবসময় চেয়েছে বিএনপি নির্বাচনে আসুক, স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করুক। সেই লক্ষ্যে আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী মহল থেকে বিভিন্ন সময় বিএনপিকে শর্তহীন আলোচনার প্রস্তাবও দেওয়া হয়েছে। কিন্তু বিএনপি সে সুযোগ গ্রহণ না করে সাংবিধানিকভাবে নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতা পরিবর্তনের বদলে নির্মম নিষ্ঠুরভাবে পিটিয়ে মানুষ হত্যা, পুলিশ হত্যা, হাসপাতাল ও প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলার মতো জঘন্য কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করতে চেয়েছে। আগুন দিয়ে জীবন্ত মানুষকে লাশ বানানোর মতো বর্বরোচিত নাশকতার মাধ্যমে জনমনে চরম ভীতি সঞ্চার ও নির্বাচন বানচালের অপচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে। দেশের জনগণের জানমালের নিরাপত্তার স্বার্থে ও সংবিধানকে সমুন্নত রেখে নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রক্রিয়া অব্যাহত রাখার স্বার্থে এ ধরনের জঘন্য কর্মকাণ্ডে জড়িত সন্ত্রাসীদের ও সন্ত্রাসের মদতদাতাদের গ্রেফতার করা ছাড়া সরকারের কোনো গত্যন্তর ছিল না।’
‘সেই সঙ্গে তফশিল ঘোষণার পরও বিদ্যমান সংবিধানের আওতায় নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা নিয়ে নির্বাচন কমিশন বিএনপিকে বারবার আলোচনায় আসার— এমনকি নির্বাচন পিছিয়ে দিয়েও বিএনপিকে নিয়ে নির্বাচন করার প্রস্তাব দিয়েছেন। তবু বিএনপির পক্ষ থেকে কোনো ইতিবাচক সাড়া পাওয়া যায়নি। এসব উদ্যোগের সূত্র ধরেই ড. রাজ্জাক তার বক্তব্য রেখেছেন। তিনি অকপটে খোলাসা করে বলেছেন যে, নির্বাচন ভণ্ডুল করে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া এবং দেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রাকে ব্যাহত করাই বিএনপির মূল লক্ষ্য। বিএনপি যদি তাদের ভুল বুঝতে পেরে নির্বাচনে আসতে রাজি হতো, তা হলে তারা হরতাল, অবরোধ, অগ্নিসন্ত্রাস ও সন্ত্রাসমূলক কর্মকাণ্ড থেকে নিবৃত্ত হতো। তখন যথাযথ আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তাদের জামিন পাওয়া সহজ হতো।’
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, ‘কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক হলো— চ্যানেল-২৪ কৃষিমন্ত্রীর পুরো বক্তব্য সঠিকভাবে উপস্থাপন করেনি। কৃষিমন্ত্রী তার বক্তব্যে কোথাও বলেননি যে, এক রাতের মধ্যে বিএনপির সব নেতাকে ছেড়ে দেওয়া হবে। সে কারণেই কৃষিমন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাকের এমন খোলামেলা বক্তব্যকে কোনো কোনো মহল বিকৃতভাবে উপস্থাপন করে তাকে প্রশ্নবিদ্ধ করার অপচেষ্টা চালাচ্ছেন। কৃষিমন্ত্রী আশা প্রকাশ করেন— তাদের শুভবুদ্ধির উদয় হবে এবং সত্য আপন জ্যোতিতেই উদ্ভাসিত থাকবে।’
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: