প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বিনিয়োগ, শিল্পায়ন ও রপ্তানির আকর্ষণীয় গন্তব্য হিসেবে দেশকে গড়ে তোলা হয়েছে।
রোববার (১৯ নভেম্বর) ফরেন ইনভেস্টরস চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির ৬০ বছর পূর্তি উদযাপন এবং ইনভেস্টমেন্ট এক্সপোর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের সরকার বেসরকারি খাতকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছে। আমরা যখন ৯৬ সালে সরকার গঠন করি, তখন থেকেই আমাদের প্রচেষ্টা ছিল বেসরকারি খাতকে আরও উজ্জীবিত করা। তাদের জন্য সব কিছু উন্মুক্ত করে দেওয়া এবং বিদেশি বিনিয়োগ যাতে আসে সেজন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া।
তিনি বলেন, ৯৬ থেকে ২০০১ পর্যন্ত আমরা বেসরকারি খাতকে সম্পূর্ণ উন্মুক্ত করে দিয়ে বিদেশি বিনিয়োগ আসার বিভিন্ন সুযোগ সৃষ্টি করে দিই। আমাদের দেশের বিদ্যুৎ উৎপাদন এবং গ্যাস উত্তোলন থেকে শুরু করে সার্বিক ক্ষেত্রে বিনিয়োগে আকর্ষণ করার প্রচেষ্টা চালাই।
তিনি আরও বলেন, বৈদেশিক বিনিয়োগ দেশের অর্থনীতির লাইফলাইন। ১৯৬৬ সালের ৭ জুন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ঘোষিত ঐতিহাসিক ৬ দফার পঞ্চম দফা ছিল বৈদেশিক বাণিজ্য বিষয়ক ক্ষমতা। যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশের পুনর্গঠনে জাতির পিতার বড় চ্যালেঞ্জ ছিল অর্থনৈতিক ব্যবস্থার কাঠামো নির্ধারণ ও শিল্প-বাণিজ্য পুনর্জীবিত করা।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু ১৯৭২ সালে ভারত ও রাশিয়া সফর করেন, ফলে বেশকিছু বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা চুক্তি সম্পাদন সম্ভব হয়। জাতিসংঘের সদস্য হওয়ার আগেই ১৯৭২ সালে জাতির পিতা চিলির সান্তিয়াগোতে জাতিসংঘের অর্থনৈতিক ও বাণিজ্য সংস্থা আঙ্কটাডের তৃতীয় অধিবেশনে বাংলাদেশ ডেলিগেশন প্রেরণ করেন।
তিনি বলেন, শক্তিশালী সামষ্টিক অর্থনৈতিক মৌলিক বিষয়সমূহ ও বাণিজ্য সংহত করণের ফলে দেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার ৭ দশমিক ২৫ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। আমাদের মাথাপিছু আয় মাত্র এক দশকে তিনগুণ বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৭৯৩ মার্কিন ডলারে। জিডিপির আকার ৪ লক্ষ কোটি টাকা থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ৫০ লক্ষ কোটি টাকায় উন্নীত হয়েছে। এই সময়ের মধ্যে দারিদ্রের হার কমে ১৮ দশমিক ৭ শতাংশে দাঁড়িয়েছে।
তিনি আরও বলেন, সারাদেশে ১০০টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল, ৩৯টি হাই-টেক পার্ক প্রতিষ্ঠা প্রতিষ্ঠা করেছি। এগুলো বিদেশি বিনিয়োগের জন্য উন্মুক্ত রাখা হয়েছে। আমরা পাঁচটি বিনিয়োগ উন্নয়ন সংস্থা গঠন করেছি। ২০২৫ সাল নাগাদ বাংলাদেশে ক্রমবর্ধমান মধ্যবিত্ত ও ধনী শ্রেণির সংখ্যা হবে ৩ কোটি ৪০ লাখ। ২০৪০ সালের মধ্যে আনুমানিক মাথাপিছু জিডিপি দাঁড়াবে ৫ হাজার ৮৮০ মার্কিন ডলারে। ভৌগলিক অবস্থানের কারণে বাংলাদেশ ৩০০ কোটি মানুষের আঞ্চলিক বাজারের কেন্দ্রস্থল হয়ে উঠবে।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: