চলমান সংঘাত বন্ধে বিশ্ব নেতাদের প্রতি ঐক্যের আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর

সময় ট্রিবিউন | ১৭ নভেম্বর ২০২৩, ১৬:৫৮

চলমান সংঘাত বন্ধে বিশ্ব নেতাদের প্রতি ঐক্যের আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সংঘাতের অবসান ঘটাতে বিশ্ব নেতাদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, জাতিগুলোর মধ্যে আস্থার ঘাটতি এবং আন্তর্জাতিক আইনের প্রতি শ্রদ্ধার অভাব ইউরোপে চলমান যুদ্ধ এবং ফিলিস্তিনকে গণহত্যার দিকে নিয়ে যাচ্ছে।

তিনি বলেন, ‘এই যুদ্ধরত দেশগুলো এবং জড়িত আন্তর্জাতিক নেতাদের মধ্যে সত্যিকারের আস্থা এবং পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ তৈরি করা জরুরি।’

প্রধানমন্ত্রী শুক্রবার (১৭ নভেম্বর) সকালে ঢাকায় তাঁর সরকারি বাসভবন গনভবন থেকে ভার্চুয়াল প্ল্যাটফর্মে আয়োজিত ‘দ্বিতীয় ভয়েস অফ গ্লোবাল সাউথ সামিট’-এ অংশ নিয়ে দেওয়া ভাষণে একথা বলেন। ভারত ভার্চুয়াল প্ল্যাটফর্মে ১২৫টি দেশের অংশগ্রহণে এই সম্মেলনের আয়োজন করেছে। খবর বাসসের।

তিনি বলেন, আজকের শীর্ষ সম্মেলনের থিম, ‘সবার সাথে সকলের প্রবৃদ্ধির জন্য সকলের বিশ^াসের সঙ্গে’ সবচেয়ে সময়োপযোগী কারণ, আমাদের বিশ্ব আজ যে গুরুত্বপূর্ণ সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছে, তা হল ‘বিশ্বাসের ঘাটতি’।

তিনি আরো বলেন, ‘যেমনটা আছে আমাদের বিশ্বের অসহনীয় দারিদ্র্য, অবাঞ্ছিত বৈষম্য, অসহনীয় সন্ত্রাসবাদ এবং জলবায়ু পরিবর্তনের বিপর্যয়মূলক হুমকি।’

এছাড়াও, শেখ হাসিনা বলেন, গ্লোবাল সাউথের জনগণের জন্য নতুন চ্যালেঞ্জ এবং ক্রমবর্ধমান দুর্ভোগ হিসেবে এখন নিষেধাজ্ঞা এবং পাল্টা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হচ্ছে।

সরকার প্রধান বলেন, ‘এই সংকটময় মুহুর্তে বিশ্বকে অবশ্যই ঐক্যবদ্ধ হতে হবে এবং ‘প্রত্যেকের প্রবৃদ্ধি’ অর্জনের জন্য ‘প্রত্যেকের বিশ্বাস’ শক্তিশালী করতে হবে।’

প্রধানমন্ত্রী নির্মম হত্যাযজ্ঞের মুখে অসহায় ফিলিস্তিনিদের মর্মান্তিক, অমানবিক পরিস্থিতিতে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন।

‘এখন সময় আমাদের সকলের এক বিশ্ব হিসেবে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার এবং সংঘাতের অবসান দাবি করার,’ বলেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী ‘দ্বিতীয় ভয়েস অফ গ্লোবাল সাউথ সামিট-২০২৩’ আহ্বান করার জন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির প্রশংসা করেন।

তিনি বলেন, ‘জি-২০ প্রেসিডেন্সির মাধ্যমে ক্রমাগত গ্লোবাল সাউথের আওয়াজ তুলে ধরার জন্য আমি তাকে ধন্যবাদ জানাই।’

সম্মেলনের উদ্বোধনের পর ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেন: ‘এটাই সময় গ্লোবাল সাউথের দেশগুলোকে বৃহত্তর বৈশ্বিক মঙ্গলের জন্য, এক পরিবার, এক ভবিষ্যতের জন্য এক সুরে কথা বলতে হবে। আমাদেরকে একসঙ্গে এগিয়ে যেতে হবে ‘পাঁচটি সি’ এর পথপ্রদর্শক নীতি নিয়ে। যেগুলো হচ্ছে: সমাবর্তন, সহযোগিতা, যোগাযোগ, সৃজনশীলতা এবং সক্ষমতা বৃদ্ধি।’

শেখ হাসিনা তাঁর ভাষণে ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের হামাস যোদ্ধাদের মধ্যে সংঘাতে বেসামরিক মানুষের মৃত্যুর পাশাপাশি গত ৭ই অক্টোবর হামাস যোদ্ধাদের ইসরায়েলে হামলার নিন্দা জানান।
মোদি আরও বলেন, ভারত ফিলিস্তিনের মানুষের জন্য মানবিক সাহায্য পাঠিয়েছে।

শেখ হাসিনা বলেন, গ্লোবাল সাউথ আমাদের ভবিষ্যৎ গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে প্রস্তুত।
তিনি বলেন, ‘তবে, আমরা প্রায়শই বিভিন্ন আর্থ-সামাজিক চ্যালেঞ্জের ঝুঁকিতে থাকি।’

সরকার প্রধান বলেন, ‘প্রত্যেকের বিশ্বাস’ এর উপর ভিত্তি করে আরও ন্যায়সঙ্গত এবং শান্তিপূর্ণ বিশ্ব তৈরি করতে গ্লোবাল সাউথের জন্য আরও জায়গা এবং বলার অনুমতি দিয়ে এগুলোকে সমাধান করা দরকার।’

তিনি বলেন, বাংলাদেশ এ ব্যাপারে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
প্রধানমন্ত্রী প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন: ‘বাংলাদেশ খাদ্য নিরাপত্তা, বিনামূল্যে আবাসন, কমিউনিটি স্বাস্থ্যসেবা, নারীর ক্ষমতায়ন এবং জলবায়ু অভিযোজন অর্জনের বিষয়ে আমাদের অভিজ্ঞতাগুলো গ্লোবাল সাউথের সাথে ভাগ করে নিতে প্রস্তুত।’



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: