যথাসময়ে নির্বাচন হবে উল্লেখ করে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, যখন নির্বাচনের সিডিউল ঘোষণা করা হয় তখন সরকারের হাতে কোনো ক্ষমতা থাকে না। নির্বাচন কমিশনই নির্বাচন আয়োজন করবে। সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সেখানে সব দল অংশগ্রহণ করবে। কাউকে দাওয়াত করে হাতে পায়ে ধরে নির্বাচনে আনার দায়িত্ব সরকারের নয়। কিংবা সরকারি দলের নয়।
আজ শনিবার (৮ এপ্রিল) জাতীয় সংসদের সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে বিশেষ অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ১৪৭ বিধিতে উপস্থাপিত প্রস্তাবের ওপর আলোচনা অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
চলতি বছর ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহ বা আগামী বছর জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে জাতীয় সংসদ নির্বাচন হবে উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, নির্বাচনকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য আজকে নানা ষড়যন্ত্র হচ্ছে এবং সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করার হুমকি দেয়া হচ্ছে। নির্বাচন আয়োজক কর্তৃপক্ষ নির্বাচন কমিশন। নির্বাচনে সরকারি দল একটি পক্ষ। সমস্ত বিরোধী দলও একটি পক্ষ। সেখানে নির্বাচনে আনা না আনা, নির্বাচনে কেউ আসবে কী আসবে না সেই দায়িত্ব পালন করতে পারে নির্বাচন কমিশন। এটা সরকারি দলের দায়িত্ব নয়।
তিনি বলেন, গণতন্ত্র ও সংসদের পথচলা নিরবিচ্ছিন্ন রাখার জন্য এবং সংসদীয় গণতন্ত্র সুসংহত করার জন্য কেউ নির্বাচনে আসুক কিংবা না আসুক নির্বাচন যথাসময়ে অনুষ্ঠিত হতে হবে। এটি সরকারি দলের দায়িত্ব নয় যে সবাইকে দাওয়াত করে নির্বাচনে আনা।
নানা ধরনের ষড়যন্ত্র চলছে জানিয়ে হাছান মাহমুদ বলেন, গণতন্ত্রকে প্রতিহত ও সংসদে অবজ্ঞা করা এবং সংসদীয় গণতন্ত্র যাতে নিরবিচ্ছিন্নভাবে চলতে না পারে সেজন্য নানা ষড়যন্ত্র হচ্ছে। রাজপথের বিরোধী দল বিএনপি আজকে নানা ষড়যন্ত্র করছে। তারা ২০১৪ সালের নির্বাচন ভন্ডুল করার জন্য ৫০০ ভোট কেন্দ্র জ্বালিয়ে দিয়েছিল। কয়েক ডজন মানুষ হত্যা করে। তবে সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল। সংসদের পথ চলা অব্যাহত থেকেছে। গণতন্ত্রের পথ চলা অব্যাহত থেকেছে। আজকেও সেই ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে। সংসদকে বৃদ্ধাঙুলি দেখিয়ে এই সংসদের পথচলাকে ও সংসদীয় গণতন্ত্রকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য কয়েকদিন আগে বিএনপির সংসদ সদস্যরা যে পদত্যাগ করলেন, তারা দেশের গণতন্ত্রকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য এই পদত্যাগ করেছেন।
জাতীয় পার্টির আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বলেন, আমাদের মতের দ্বিমত থাকতে হবে। তবে সত্যিকার অর্থে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে চাইলে, সংসদকে সত্যিকার কাযর্কর করতে চাইলে এই সংসদের মধ্যে মানুষের দুঃখ-কষ্ট-সমস্যা নিয়ে আলোচনা হতে হবে। সেই আলোচনা না হলে সকলেই এখানে বললেও কেন্দ্রবিন্দু হবে না। সংসদের বাইরের কথাই কেন্দ্রবিন্দু হবে। যা বাইরে আছে তাদের কথাই গণমাধ্যমে প্রাধান্য পাবে। এটা কেবল বিরোধী দলের দায়িত্ব নয়। এটা আজকে সরকারি দলের দায়িত্ব, সকলে মিলে আমাদের জনগণের কথা বলতে হবে।
তিনি বলেন, দলের প্রতি আনুগত্য থাকতে হবে। কিন্তু দলের চেয়ে রাষ্ট্র ও জনগণ বড়। সরকারি দলের সদস্যদের বলবো- এই দেশে কী কোনো ভুল হয় না? কই আপনারা তো সেই ভুল ধরে দেন না।
আগামী নির্বাচনের প্রসঙ্গ টেনে সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, নির্বাচনকে মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্য করতে হবে। কে করবে? বলা হয়েছে এটা সরকারের দায়িত্ব নয়। এটা আমিও বিশ্বাস করি- সরকারের দায়িত্ব নয়। সব দলকে নির্বাচনে আনা- সরকারের দায়িত্ব হতে পারে না। দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনের। নির্বাচন কমিশনকে সেই পরিবেশ তৈরি করতে হবে। নির্বাচন কমিশনকে সেই আস্থা তৈরি করতে হবে। সেই আস্থা যদি তৈরি করা যায় তারপরও যদি কোনো দল না আসে, কিছু বলার নেই। কিন্তু সেই পরিবেশ আনার জন্য যে সহায়তা দরকার সরকারকে তা নির্বাচন কমিশনকে দিতে হবে। সেটাই হচ্ছে সরকারের দায়িত্ব।
এসটি/এসকে
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: