জাতির পিতার স্বপ্নের উন্নত-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গঠন করতে হবে: শেখ হাসিনা

সময় ট্রিবিউন | ২৮ মার্চ ২০২১, ২৩:১৫

আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা-ফাইল ছবি

আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, জাতির পিতার স্বপ্নের উন্নত-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গঠন করতে হবে। বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশ হয়েছে। স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে সারাবিশ্বের রাষ্ট্রপ্রধানরা শুভেচ্ছা দিয়েছেন। এটা আমাদের সম্মানের, এটাই আমাদের সার্থকতা তবে আমাদের যাত্রা অনেক দূরের।

তিনি বলেছেন,  আমাদের অনেক দূর যেতে হবে। উন্নত-সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশ গড়ে তুলতে চাই। এটাই জাতির পিতার স্বপ্ন। তার স্বপ্নের ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত উন্নত-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ব, এটাই প্রতিজ্ঞা।

রোববার (২৮ মার্চ) বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের স্বাধীনতা দিবসের আলোচনা সভায় গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হয়ে সভাপতির বক্তব্যে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে পাঁচ দেশের প্রধান এসেছেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশ ও ২৭টি প্রতিষ্ঠান থেকে শুভেচ্ছাবার্তা আমরা পেয়েছি। এটা বাংলাদেশের জনগণের জন্য অত্যন্ত সম্মানের। এটাই আমাদের সার্থকতা।

শেখ হাসিনা বলেন, সময়ের অভাবে সব বার্তা শোনাতে পারিনি। সমস্ত বার্তা রক্ষিত আছে। তৃণমূল পর্যন্ত প্রচার করতে হবে। তাদের শুভেচ্ছাবার্তা যেন জনসাধারণ জানতে পারে। সরকারের পাশাপাশি আওয়ামী লীগও বিভিন্ন সহযোগী সংগঠনকে এগুলো প্রচারে কাজ করার নির্দেশনা দেন তিনি।

তিনি বলেন, সবুজ বাংলা আরও সবুজ করতে বৃক্ষরোপণ করতে হবে। এক ইঞ্চি জমিও যেন অনাবাদি না থাকে। কোনো জলাশয় যেন অনাবাদি না থাকে। খাদ্য উৎপাদন করে নিজেদের প্রস্তুতি রাখতে হবে। করোনা পরিস্থিতি কোন দিকে যায় বলা যায় না। যাতে অন্তত খাদ্য সংকট না হয়। আমরা নিজের খাদ্য নিজেই জোগান নিশ্চিত করে অন্যকেও দেব।

সরকারপ্রধান বলেন, ভ্যাকসিন দেয়া অব্যাহত থাকবে। তবে কেউ যাতে মাস্ক ছাড়া বাইরে না যায়। নিরাপদ দূরত্ব মেনে বসতে হবে। সভা-সেমিনার-কর্মশালা স্বাস্থ্যসুরক্ষা মেনে করতে হবে। যতদূর সম্ভব খোলা জায়গায় কর্মসূচি করতে হবে। ঘরের মধ্যে করলে করোনার প্রাদুর্ভাব আরও বেশি দেখা দেয়।

আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব বাড়ছে। সব অনুষ্ঠান সতর্কতার সঙ্গে করতে হবে। পাশাপাশি গেল বছর মানুষের পাশে যেমন দাঁড়িয়েছেন, তেমনি সামনেও মানুষের পাশে দাঁড়াতে হবে। মানুষ যেন কষ্টে না থাকে। সরকারের পক্ষ থেকে আমরা যা করার করব। কিন্তু দল হিসেবে আওয়ামী লীগও মানুষের পাশে থাকতে হবে। যে দল বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে দেশ স্বাধীন করেছে, তাদের ওপর অনেক দায়িত্ব। মানুষের জন্য খাদ্য বিতরণ, মাস্কসহ স্বাস্থ্যসুরক্ষা সামগ্রী বিতরণ ও নানা সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিতে হবে।

শেখ হাসিনা বলেন, আজ আমাদের প্রতিজ্ঞা হলো, বাংলাদেশে একটি মানুষও ভূমিহীন থাকবে না, গৃহহীন থাকবে না। আমরা সেই ব্যবস্থা করে যাচ্ছি। বঙ্গবন্ধু তার সংবিধান ও আইনে যে মৌলিক নির্দেশনা রেখে গেছেন। আমরা সে আলোকেই পথ চলছি। তার সব কাজ পূর্ণ করছি।

তিনি বলেন, গৃহহীন ও ভূমিহীন কেউ যেন বাদ না যায়, সেদিকে লক্ষ রাখতে হবে। কেউ বাদ গেলে জানাতে হবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২১ বছর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নাম মুছে ফেলা হয়েছে। ৭ মার্চের ভাষণও নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। বাংলাদেশ ভিন্নখাতে নেয়া হয়েছিল। আমরা ক্ষমতায় আসার পর নানা কর্মসূচি নিয়েছিলাম। তারপরও চক্রান্ত থামেনি। ২০০১ এ আমাদের ক্ষমতায় আসতে দেয়নি। কিন্তু ফল তো ভালো হয়নি। পাঁচবার দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। নানা খাতে পিছিয়েছে বাংলাদেশ।

তিনি বলেন, গেল ১২ বছরে বাংলাদেশের আমূল পরিবর্তন হয়েছে। বঙ্গবন্ধুর আদর্শ নিয়ে দেশ পরিচালনা করেছি। এতসব অর্জনে বঙ্গবন্ধুর আদর্শই কারণ। এটা নতুন কিছু না, কোনো ম্যাজিকও না। এদেশের মানুষ জাতির পিতা নির্দেশে মুক্তিযুদ্ধ করে। ৭ মার্চের ভাষণে যা যা করতে বলেছেন, মানুষ তাই করে। তিনিই বলেছিলেন, বাঙালিকে দাবায়ে রাখতে পারবা না। আসলেও দাবায়ে রাখা যায়নি, যাচ্ছে না। আমরা তার আদর্শে দেশ পরিচালনা করে এগিয়ে যাচ্ছি।

আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় সূচনা বক্তব্য দেন সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। আরও বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডয়াম সদস্য আবদুর রাজ্জাক, আবদুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক এসএম কামাল হোসেন, সাংস্কৃতিক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল, আন্তর্জাতিক সম্পাদক ড. শাম্মী আহমেদ প্রমুখ।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: