মিতু হত্যা: নিজের মামলায় নারাজি দিলেন বাবুল

সময় ট্রিবিউন | ১৫ অক্টোবর ২০২১, ০৬:৫৪

মাহমুদা খানম মিতু এবং স্বামী সাবেক পুলিশ সুপার বাবুল আকতার-ফাইল ছবি

বাদী থেকে আসামি এখন বাবুল আক্তার। সাবেক এই পুলিশ কর্মকর্তাকে স্ত্রী হত্যার মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে বুধবার চট্টগ্রামের আদালতে তোলেন তারই এক সময়ের সহকর্মীরা। এর মধ্য দিয়ে পাঁচ বছর আগের মাহমুদা আক্তার মিতু হত্যা মামলার তদন্ত উল্টো দিকে মোড় নিল।

স্ত্রী মাহমুদা আক্তার মিতু হত্যার ঘটনায় নিজের করা মামলায় দাখিল করা চূড়ান্ত প্রতিবেদনের বিষয়ে আদালতে নারাজি আবেদন করেছেন সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা বাবুল আক্তার।

বৃহস্পতিবার চট্টগ্রামের মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মেহনাজ রহমানের আদালতে বাবুল আক্তারের পক্ষে আবেদনটি করা হয় বলে তার আইনজীবী শেখ ইফতেখার সাইমুল চৌধুরী জানান।

তিনি বলেন, নারাজি আবেদন আদালত মঞ্জুর করেছে। ২৭ অক্টোবর বাদির উপস্থিতিতে আবেদনের শুনানি হবে।

নারাজির আবেদনের কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, “এই মামলায় (বাবুলের করা মামলায়) ৫১ জনের বেশি সাক্ষীর ১৬১ ধারায় জবানবন্দি নেওয়া হয়েছে। কোনো সাক্ষী বাবুল আক্তারের সম্পৃক্ততার বিষয়ে কোনো অভিযোগ করেননি; কোনো বক্তব্য দেয়নি।

আইনজীবী বলেন, দুজন সাক্ষী, যাদের ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি নেওয়া হয়েছে। সাড়ে চার বছর পর ওই দুজনকে ধরে এনে তার (বাবুলের) বন্ধু বানালেন। তারা বলেছে, বাবুল আক্তার একলাখ ২৫ হাজার টাকা লেনদেন করেছে। এটার উপর ভিত্তি করে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিলেন। কাদের বাঁচানোর জন্য, সেটা আমাদের দেখতে হবে।

ইফতেখার সাইমুল বলেন, বাবুল আক্তার মহলবিশেষের ষড়যন্ত্রের শিকার। ইতিপূর্বে তিনি স্বর্ণের চোরাকারবারি ও কালোবাজারিদের ধরেছেন, জঙ্গিবাদ প্রতিরোধ করেছেন। আমরা মনে করি, একটি বিশেষ মহল এবং এই সিন্ডিকেট এরা সবাই মিলে তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করেছে।

২০১৬ সালের ৫ জুন সকালে চট্টগ্রাম নগরীর জিইসি মোড়ে ছেলেকে স্কুল বাসে তুলে দিতে যাওয়ার সময় মিতুকে প্রকাশ্যে গুলি চালিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করা হয়। পদোন্নতি পেয়ে পুলিশ সদরদপ্তরে যোগ দিতে ওই সময় ঢাকায় ছিলেন তখনকার পুলিশ সুপার বাবুল। তার ঠিক আগেই চট্টগ্রাম নগর গোয়েন্দা পুলিশে ছিলেন তিনি।

হত্যাকাণ্ডের পর নগরীর পাঁচলাইশ থানায় অজ্ঞাতপরিচয় কয়েকজনকে আসামি করে একটি মামলা করেছিলেন বাবুল আক্তার নিজেই।

আদালতের আদেশে পরে মিতু হত্যা মামলা যায় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) হাতে। হত্যাকাণ্ডের প্রায় পাঁচ বছরের মাথায় গত ১১ মে বাবুল আক্তারকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য চট্টগ্রাম পিবিআই কার্যালয়ে ডেকে নেওয়া হয়।

এর পরদিন ১২ মে ঢাকায় এক সংবাদ সম্মেলনে পিবিআই প্রধান বনজ কুমার মজুমদার বলেন, মিতু হত্যার সঙ্গে তার স্বামী বাবুল আক্তারের সম্পৃক্ততার প্রমাণ পেয়েছেন তারা। এরপর বাবুলের করা মামলায় চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেয় পিবিআই। এরপর ওইদিনই পাঁচলাইশ থানায় মিতুর বাবা মোশাররফ হোসেন একটি হত্যা মামলা করেন। যাতে বাবুলকে প্রধান আসামিসহ মোট নয়জনকে আসামি করা হয়।

মিতুর বাবার করা মামলায় গ্রেপ্তার বাবুল আক্তার এখন ফেনী কারাগারে আছেন।

বাবুল ছাড়া মামলার অন্য আসামিরা হলেন- তার সোর্স কামরুল ইসলাম শিকদার ওরফে মুছা, এহতেশামুল হক ভোলা, মুছার ভাই সাইদুল আলম শিকদার ওরফে শাক্কু, মোতালেব মিয়া ওরফে ওয়াসিম, মো. আনোয়ার হোসেন, শাহজাহান ও খায়রুল ইসলাম কালু।

গত ২৯ মে বাবুল আক্তারকে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে ফেনী কারাগারে স্থানান্তর করা হয়।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: