মামলা থেকে অব্যাহতি পেলেন বেরোবির ৮ শিক্ষক-কর্মকর্তা

সময় ট্রিবিউন | ১ অক্টোবর ২০২১, ০৪:৫১

বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়-ফাইল ছবি

পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক পদ থেকে পদত্যাগে চাপ প্রয়োগ ও অবরুদ্ধ করে জোরপূর্বক বিভিন্ন কাগজে স্বাক্ষর নেওয়ার অভিযোগের সত্যতা না পাওয়ায় বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) আট শিক্ষক-কর্মকর্তাকে মামলা থেকে অব্যাহতি দিয়েছেন আদালত।

গতকাল বুধবার রংপুর মেট্রোপলিটন তাজহাট আমলি আদালতের বিচারক মো: আল-মেহবুব তাদের মামলা থেকে অব্যাহতি দেন।

বৃহস্পতিবার রাতে বিবাদী পক্ষের আইনজীবী কাজী লুমুম্বা লুমু বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

এ বিষয়ে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ ইজার আলী বলেন, যেসব ধারায় অভিযুক্ত ৮ শিক্ষক-কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছিলো সেসব ধারার কোন সত্যতা পাওয়া যায়নি। এজন্য অভিযুক্তদের এই মামলা থেকে অব্যাহতি চেয়ে আদালতে চুড়ান্ত রিপোর্ট দাখিল করা হয়েছিলো।

মামলার অভিযোগে জানা যায়, গত ১৪ জানুয়ারি সকালে তৎকালীন ভিসিবিরোধী শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারিদের সংগঠন অধিকার সুরক্ষা পরিষদের আহবায়ক অধ্যাপক ড. মতিউর রহমানের নেতৃত্বে কয়েকজন শিক্ষক-কর্মকর্তা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক ড. নাজমুল হকের দপ্তরে গিয়ে দরজা বন্ধ করে পরীক্ষা তাকে দায়িত্ব থেকে পদত্যাগের জন্য চাপ দেন। সে সময় শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে মধ্যরাতে অনিয়ম করে ইংরেজি বিভাগের মাস্টার্স প্রথম সেমিস্টারের প্রকাশিত ফল বাতিল ও রসায়ন বিভাগের পুনর্গঠিত পরীক্ষা কমিটি বাতিল সংক্রান্ত একটি চিঠিতে জোর করে তার স্বাক্ষর নেন।

পরে সেদিন রাত ১টায় অধ্যাপক ড. মতিউর রহমানকে প্রধান আসামী করে রংপুর মেট্রোপলিটন তাজহাট থানায় পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক ড. নাজমুল হক বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন।

মামলায় শিক্ষক সমিতির সাবেক সভাপতি অধ্যাপক ড. গাজী মাজহারুল আনোয়ার, রসায়ন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক এইচ এম তারিকুল ইসলাম, সরকার দলীয় শিক্ষকদের সংগঠন নীল দলের সাধারণ সম্পাদক আসাদ মণ্ডল, লোক প্রশাসন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সাব্বির আহমেদ চৌধুরী, ভূগোল ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সৈয়দ আনোয়ারুল আজিম, পরিকল্পনা ও উন্নয়ন দপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক এটিজিএম গোলাম ফিরোজ এবং কলা অনুষদের সহকারী রেজিস্ট্রার মোহাম্মদ আলীর নাম দেওয়া হয়।

এদিকে ওই ঘটনার দিনই নিজের নিরাপত্তা ও হুমকির বিষয়টি উল্লেখ করে অধিকার সুরক্ষা পরিষদের আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মতিউর রহমান ও শিক্ষক সমিতির সাবেক সভাপতি অধ্যাপক ড. তুহিন ওয়াদুদের নামসহ অজ্ঞাতনামা ৮/৯ জনের নামে তাজহাট থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক সামসুল হক।

উল্লেখ্য, গত ৪ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের মাস্টার্সের শিক্ষার্থীরা ফল প্রকাশের দাবিতে মধ্যরাতে আন্দোলন শুরু করলে প্রশাসন আন্দোলন দমাতে আইন লঙ্ঘন করে পরীক্ষা কমিটির সদস্য ও পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের স্বাক্ষর ছাড়াই দুই কর্মকর্তার যোগসাজশে ফল প্রকাশ করেন বলে অভিযোগ করেন অধিকার সুরক্ষা পরিষদের নেতারা।

অধিকার সুরক্ষা পরিষদের আহ্বায়ক ড. মতিউর রহমান বলেন, ফলাফল প্রকাশের পর সেদিন রাতেই পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের দায়িত্বে থাকা অধ্যাপক ড. মোরশেদ হোসেনকে অব্যাহতি দেয় তৎকালীন উপাচার্য নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ। পরদিন সকালে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের দায়িত্বে যোগদান করেন নাজমুল হক। সেদিন সকালে অধিকার সুরক্ষা পরিষদের নেতৃবৃন্দ নাজমুল হকের দপ্তরে দেখা করে তাকে অবগত করি আইন লঙ্ঘন করে পরীক্ষা কমিটির সদস্য ও পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের স্বাক্ষর ছাড়া ফল প্রকাশ করলে শিক্ষার্থীদের সমস্যা হবে। কিন্তু নাজমুল হক বিষয়টি ভিন্নখাতে প্রবাহিত করে আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা বানোয়াট তথ্য দিয়ে থানায় মামলা করেন।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: