সাবেক ডিসিসহ ৪ জনের পোস্টিংয়ের বৈধতা নিয়ে রিট

সময় ট্রিবিউন | ২৪ আগষ্ট ২০২১, ০৪:১৭

কুড়িগ্রামে সাবেক জেলা প্রশাসক (ডিসি) সুলতানা পারভীন, আরডিসি নাজিম উদ্দিন, সহকারী কমিশনার রিন্টু বিকাশ চাকমা ও এনডিসি এসএম রাহাতুল ইসলাম-ফাইল ছবি

কুড়িগ্রামে সাবেক জেলা প্রশাসক (ডিসি) সুলতানা পারভীনসহ প্রশাসনের চারজনের পোস্টিং নিয়ে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়েছে।

সোমবার হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় নির্যাতনের শিকার বাংলা ট্রিবিউনের কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি আরিফুল ইসলাম রিগান রিটটি দায়ের করেন।

রিটে তাদের বরখাস্ত না করে একজনকে পোস্টিং দেওয়া এবং অন্য তিনজনকে পোস্টিং দেওয়ার চেষ্টার বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছে। রিটে জনপ্রশাসন সচিব, স্বরাস্ট্র সচিব, আইন সচিবসহ সংশ্লিষ্টদের বিবাদী করা হয়েছে।

আদালতে রিট আবেদনের পক্ষে শুনানি করবেন আইনজীবী আজিজুর রহমান দুলু ও ইশরাত হাসান।

তারা রিট প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের জানান, ঘটনার সঙ্গে অভিযুক্ত চারজনের বিরুদ্ধে ফৌজদারী মামলা চলমান রয়েছে। ওই মামলায় তারা এখনও জামিন নেননি। ফলে আইনের দৃষ্টিতে তারা পলাতক। তারা ফৌজদারী মামলার আসামি হওয়া সত্ত্বেও তাদেরকে বরখাস্ত না করে একজনকে পোস্টিং দেওয়া হয়েছে এবং অন্য তিনজনকে পোস্টিংয়ের চেষ্টা চলছে, যা আইন বহির্ভূত। তাই বিষয়টি চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিটটি দায়ের করা হয়েছে।

রিটটি বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মোস্তাফিজুর রহমান সমন্বয়ে গঠিত ভার্চুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চে শুনানির জন্য উপস্থাপন করা হবে।

গত বছরের ১৩ মার্চ মধ্যরাতে বাংলা ট্রিবিউনের কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি আরিফুল ইসলাম রিগানকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের নামে বাড়ি থেকে মারধর করে তুলে নিয়ে যায় জেলা প্রশাসনের কয়েকজন কর্মকর্তা।

কুড়িগ্রামের সাবেক ডিসি সুলতানা পারভীনের নামে জেলা প্রশাসনের একটি পুকুরের নামকরণ নিয়ে সংবাদ প্রকাশের জের ধরে তাকে ধরে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে তাকে ক্রসফায়ারে দেওয়ার হুমকি দিয়ে জেলা প্রশাসনে নিয়ে বিবস্ত্র করে পাশবিক নির্যাতনের পর তার কাছে আধা বোতল মদ ও দেড়শ' গ্রাম গাঁজা উদ্ধারের কল্পিত অভিযোগ আনে স্থানীয় প্রশাসন।

এ ঘটনায় আরিফুলকে এক বছরের কারাদণ্ড দিয়ে মধ্যরাতেই জেলা হাজতে পাঠানো হয়। এরপর ঘটনাটি গণমাধ্যমগুলোতে প্রকাশ পেলে দেশজুড়ে তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃস্টি হয়।

পরে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের নির্দেশনায় পরদিন ঘটনাস্থলে যান রংপুরের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (রাজস্ব) আবু তাহের মো. মাসুদ রানার প্রতিবেদনের ওপর ভিত্তি করে জেলা প্রশাসক সুলতানা পারভীন, আরডিসি নাজিম উদ্দিন, সহকারী কমিশনার রিন্টু বিকাশ চাকমা ও এনডিসি এসএম রাহাতুল ইসলামকে প্রত্যাহার করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।

পরবর্তীতে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। যার ধারাবাহিকতায় সুলতানা পারভীনকে দুই বছরের জন্য বেতন বৃদ্ধি (ইনক্রিমেন্ট) স্থগিত, এনডিসি রাহাতুল ইসলামের তিনটি ইনক্রিমেন্ট কর্তন, আরডিসি নাজিম উদ্দিনকে নিম্ন ধাপে নামিয়ে দেওয়া এবং রিন্টু বিকাশ চাকমাকে চাকরিচ্যুত করার সিদ্ধান্ত নেয় জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।

যদিও রিন্টু বিকাশ চাকমার বিষয়টির এখনো প্রজ্ঞাপন জারি হয়নি। তবে অন্যদের প্রজ্ঞাপন জারি হয়েছে। তাদের মধ্যে এনডিসি রাহাতুল ইসলামকে বরিশাল ডিসি অফিসে পোস্টিং দেওয়া হয়। এ প্রেক্ষাপটে সোমবার হাইকোর্টে রিটটি দায়ের করা হয়েছে।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: