ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় মোদিবিরোধী আন্দোলনে সহিংসতার ঘটনায় জড়িত অভিযোগে হেফাজতে ইসলামের কর্মী-সমর্থকসহ ৬০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
সোমবার পুলিশের বিশেষ অভিযানে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ ও প্রশাসন) মো. রইছ উদ্দিন গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় পুলিশের বিশেষ অভিযানে ৬০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে বিএনপি, জামায়াত ও হেফাজতের কর্মী-সমর্থকদের গুরুত্বপূর্ণ ১৬ জন আছেন।
জানা গেছে, গত ২৬ থেকে ২৮ মার্চ পর্যন্ত ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় হামলা, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগের সাথে জড়িতদের গ্রেফতার করতে অভিযান পরিচালনা করে পুলিশ। এর মধ্যে গ্রেফতার ৬০ জনের মধ্যে বিএনপি, জামায়াত ও হেফাজতের ১৬ জন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি আছেন। এসব ঘটনায় হওয়া মামলায় এখন পর্যন্ত ১৬৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এর মধ্যে হেফাজতের ১২৮ জন, বিএনপির ৩৭ জন ও জামায়াত-শিবিরের ৩ জন আছেন।
এই ১৬ জন হলেন নবীনগর উপজেলা বিএনপির সদস্য সফিউল্লাহ মিয়া (৪০), ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক আহ্বায়ক শিমরাইলকান্দির বাসিন্দা কামরুল হাসান (২৮), ছাত্রদলের সদস্য শহরের বণিকপাড়ার বাসিন্দা মো. পলাশ (২৬), হেফাজতের সমর্থক পৌর এলাকার ফুল মিয়া (৩৩), নয়নপুর এলাকার রফিকুল ইসলাম (৩০), পুনিয়াউট উত্তরপাড়া মো. মেরাজ (১৯) ও মো. আশিক (২০), পুনিয়াউটের জুনাইদ (২১), পশ্চিম মেড্ডার দুলাল মিয়া (৩৯), সদর উপজেলার বিহাইর এলাকার শাহজাহান মিয়া (৫১), সোহাতা গ্রামের রাকিবুল হাসান (২৩), বিরাসার দক্ষিণপাড়ার মো. শামীম (৩০), মো. সুজন (২২) ও রবিন মিয়া (১৮), নাসিরনগর উপজেলার ধরমণ্ডলের দুলাল মিয়া (২৯) ও শহরের মধ্যপাড়ার বাসিন্দা জামায়াত কর্মী লিয়াকত আলী (৩৫)। তাঁদের মধ্যে শাহজাহান জেলা পুলিশ লাইনসে আক্রমণ করেছিল।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় গত ২৬ থেকে ২৮ মার্চ পর্যন্ত হামলা, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও সহিংসতার ঘটনা ঘটে। জেলাজুড়েই হেফাজতের কর্মী-সমর্থকেরা ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ চালান। জেলার বিভিন্ন সরকারি–বেসরকারি স্থাপনায় ব্যাপক ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। এসব ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৪৯টি মামলা হয়েছে। এসব মামলায় ৩৮ হাজারের বেশি আসামি করা হয়েছে। এর মধ্যে মাত্র ২৮৮ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। বাকি সবাই অজ্ঞাতনামা দুষ্কৃতকারী। ৪৯টির মধ্যে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানায় ৪৩টি, আশুগঞ্জ থানায় ৩টি, সরাইল থানায় ২টি ও আখাউড়া রেলওয়ে থানায় ১টি মামলা হয়। সহিংসতার ঘটনায় পুলিশ স্থিরচিত্র ও ভিডিও ফুটেজ পর্যালোচনা করে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের শনাক্ত করা শুরু করেছে।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: