আলোচিত দর্জি মনির পুলিশের হাতে আটক

সময় ট্রিবিউন | ২ আগষ্ট ২০২১, ০৫:৪১

দর্জি মনির-ফাইল ছবি

আওয়ামী লীগের নাম ভাঙিয়ে ‘বাংলাদেশ জননেত্রী শেখ হাসিনা পরিষদ’ নামে একটি ভুঁইফোঁড় সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মো. মনির খান ওরফে দর্জি মনিরকে আটক করেছে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।

রোববার রাতে তাকে আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ডিবির যুগ্ম কমিশনার হারুন-অর-রশীদ।

তিনি বলেন, দর্জি মনিরকে আমরা আটক করে নিয়ে এসেছি। এখন জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। পরে বিস্তারিত জানানো হবে।

সম্প্রতি বাংলাদেশ চাকরীজীবী লীগ নামে সংগঠন খুলে বিতর্কের জন্য আওয়ামী লীগের মহিলা বিষয়ক উপকমিটির পদ থেকে অব্যাহতি পাওয়া ব্যবসায়ী হেলেনা জাহাঙ্গীরকে গ্রেপ্তারের মধ্য দিয়ে শুরু হয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অভিযান। হেলেনা জাহাঙ্গীরের বিষয় নিয়ে এখন দেশব্যাপী আলোচনা-সমালোচনার তুঙ্গে। এরই মধ্যে বাংলাদেশ চাকরীজীবী লীগের মত দর্জি মনিরও আরেকটি ভুঁইফোড় সংগঠন দাঁড় করিয়েছিলেন ‘বাংলাদেশ জননেত্রী শেখ হাসিনা পরিষদ’ নামে। তিনি সেই সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি।

রোববার সন্ধার পর থেকেই দর্জি মনির গ্রেপ্তার হচ্ছেন এমন সংবাদ প্রকাশ হয় সময় টিবিউনে। এর আগে দর্জি মনিরের অনৈতিক কর্মকান্ড নিয়ে একাধিক সংবাদ প্রকাশ করে সময় ট্রিবিউন।

জানা যায়, মনির তাঁর নিজ এলাকা কামরাঙ্গীরচরে দর্জি মনির নামেই পরিচিত। নিজেকে জননেত্রী শেখ হাসিনা পরিষদের সভাপতি এবং আওয়ামী লীগের উপ-কমিটির সম্পাদক দাবি করে চেষ্টা করেন এলাকায় আধিপত্য বিস্তারের। রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে এডিট করা ছবি জুড়ে দিয়ে মানুষকে বোকা বানাতে জুড়ি নেই তার।

ফেসবুকে এমডি মনির খান নামের প্রোফাইল নানা পরিচয় দিয়ে ঠাসা। তিনি ঢাকা-২ আসনের এমপি প্রার্থী। বঙ্গবন্ধুকে কটূক্তিকারী তারেক রহমানের মামলার বাদী। বাংলার রূপসী গার্মেন্টস লিমিটেডের এমডি তিনি। সেই সঙ্গে কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যানও। নিজেকে তিনি দাবি করেছেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপ কমিটির সহ-সম্পাদক ও ধর্ম বিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য হিসেবে।

তার আরেক পরিচয় তিনি জননেত্রী শেখ হাসিনা পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি। তৈরি করেছেন ওয়েবসাইট। সেখানেও তার নানা রাজনৈতিক পরিচয়ের ছড়াছড়ি। যদিও এই সংগঠনের কোনো অনুমোদনই নেই।

রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে নিজের সুপার এডিট করা ছবি জুড়ে দিয়ে নিজেকে বড় নেতা হিসেবে দাবি করেন তিনি।

মনির খান একসময় বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে অবস্থিত আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের বিপরীতে একটি দর্জির দোকানে কাজ করতেন।

আওয়ামী লীগের দপ্তর সূত্রে জানা যায়, আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন বলে দাবি করে আসা ভুঁইফোড় এই সংগঠন এবং দর্জি থেকে হটাৎ করে মনিরের নেতা হওয়ার নেপথ্য নিয়ে সময় ট্রিবিউনের করা সংবাদ প্রকাশের পর আওয়ামী লীগের নীতি নির্ধারণী ফোরামে বিষয়টি আলোচনা হয়। এমন কর্মকান্ডে ক্ষুব্ধ আওয়ামীলীগের নীতি নির্ধারণী ব্যক্তিরা। এরপর আওয়ামী লীগের নাম ভাঙ্গিয়ে দল খুলে অনৈনিক কর্মকান্ডের কারণে অনুমোদনহীন এই ভুঁইফোড় সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা দর্জি মনিরের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে বলা হয়। 

মনির খানের মতো এমন হাইব্রিড নেতা এবং নাম সর্বস্ব ভুঁইফোড় সংগঠনের বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি রাজনৈতিক অঙ্গনের।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: