কুষ্টিয়ায় প্রকাশ্যে স্ত্রী আসমা খাতুন, তার ছেলে রবিন ও পরকীয়া প্রেমিক শালিক খান হত্যার ঘটনায় পুলিশের এএসআই সৌমেন রায়ের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।
সৌমেনকে একমাত্র আসামি করে রোববার রাতে কুষ্টিয়া মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা করেছেন নিহত আসমা খাতুনের মা হাসিনা বেগম। কুষ্টিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাব্বিরুল আলম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এদিকে আসমা খাতুন, তার ছেলে রবিন ও পরকীয়া প্রেমিক শালিক খানের মরদেহ ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। সোমবার (১৪ জুন) সকালে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের আরএমও তাপস কুমার সরকার এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, নিহত তিন জনের মরদেহ ময়নাতদন্ত শেষে রোববার রাত ১২টার পর স্ব স্ব পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। শাকিলের মরদেহ তার বাবা মেজবা রহমানের কাছে এবং আসমা খাতুন ও তার ছয় বছর বয়সী ছেলের মরদেহ মা হাসিনা বেগমের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
চাকরি থেকে সাময়িক বহিষ্কৃত এএসআই সৌমেনকে কুষ্টিয়া পুলিশ লাইনের ডিবি কার্যালয়ে রেখে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। এরপর বিকেলে তাকে আদালতে হাজির করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দী গ্রহণসহ রিমান্ডের আবেদন করা হতে পারে বলে জানিয়েছেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কুষ্টিয়া মডেল থানার (ওসি-তদন্ত) নিশি কান্তা সাহা।
সৌমেনকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে কুষ্টিয়া অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বিশেষ শাখা) ফরহাদ হোসেন খান জানান, তার স্ত্রী আসমার সঙ্গে শাকিলের পরকীয়া প্রেমের সম্পর্কের তিনি ক্ষুব্ধ ছিলেন। রোববার ভোরে তিনি খুলনা থেকে বাসযোগে কুষ্টিয়ায় আসেন। এ সময় তিনি সার্ভিসের জন্য পাওয়া রিভলভার ও দুটি ম্যাগজিনে ১২টি গুলি সঙ্গে নিয়ে আসেন।
পুলিশ সুপার আরও জানান, বেলা ১১টার দিকে সেখানে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে প্রথমে শাকিলকে গুলি করেন তিনি। এরপর আসমাকে গুলি করেন। এ সময় শিশু রবিন দৌড়ে পালাতে গেলে তাকেও গুলি করেন। একটি ম্যাগজিনের গুলি শেষ হয়ে গেলে আরেকটি ম্যাগজিন ব্যবহার করেন।
পুলিশ জানায়, কুষ্টিয়ার হালসা পুলিশ ক্যাম্প থেকে কিছু দিন আগে সৌমেন রায়কে খুলনার ফুলতলা থানায় বদলি করা হয়। তার বাড়ি মাগুরা সদর উপজেলার আসপা গ্রামে। সৌমেনের প্রথম পক্ষের স্ত্রী এবং দুটি সন্তান রয়েছে। তাদের কাছে গোপন রেখেই বছর দেড়েক আগে আসমাকে বিয়ে করেন তিনি।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: