চট্টগ্রামে মিতু হত্যায় তার স্বামী ও সাবেক পুলিশ সুপার বাবুল আকতারকে এখনো গ্রেপ্তার দেখানো হয়নি বলে দাবি করেছে ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) প্রধান ও পুলিশের উপমহাপরিদর্শক বনজ কুমার মজুমদার।
তিনি বলেন, বাবুলের বিরুদ্ধে পাঁচলাইশ থানায় নতুন আরেকটি মামলায় আজ বুধবার (১২ মে) গ্রেপ্তার দেখানো হবে। নতুন এ মামলায় বাদী হতে পারেন মিতুর বাবা মোশাররফ হোসেন।
বুধবার পিবিআইয়ের প্রধান কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এ সংক্রান্ত এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, বাবুল আক্তারকে আজ গ্রেপ্তার দেখানো হবে এবং আগের মামলা ফাইনাল রিপোর্ট দেবে পুলিশ। মিতুর বাবা বাদী হয়ে বাবুল আক্তারকে প্রধান আসামি করে মামলা করবে। এজাহার প্রস্তুত করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, মিতু হত্যায় আজ আগের মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন আদালতে জমা দেওয়া হবে, যে মামলার বাদী ছিলেন বাবুল আক্তার নিজেই। এরপর আজ পাঁচলাইশ থানায় একটি মামলা হবে। বাবুল আক্তার গ্রেপ্তার না। নতুন মামলা হলে বাবুল আক্তার এক নম্বর আসামি হবেন। তারপর তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হবে।
পিবিআই প্রধান বলেন, ওইদিন ঘটনাস্থলে মুসাকে দেখা যায়। মুসা নিয়মিত বাবুল আক্তারের বাসায় যেতেন। তার অনুপস্থিতিতে মুসা বাজারও করে দিতেন। পিবিআই জানার চেষ্টা করেছে মুসা কোনো সোর্স ছিল কিনা। এটাই পিবিআই প্রমাণের চেষ্টা করেছে।
পিবিআই প্রধান আরও বলেন, মিতু হত্যাকাণ্ডের কিছুদিন আগে বাবুল দাবি করেন যে তিনি জঙ্গি কার্যক্রমে আহত হন। মিতু হত্যার পর বাবুল যে আচরণ করেছিল, তা ছিল সবচেয়ে আপনজন হারানোর মতো। তাই তার কথা সবাই বিশ্বাস করেছিলেন।
বনজ কুমার বলেন, গত বৃহস্পতিবার (৬ মে) পিবিআই জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বাবুলকে ঢাকায় ডাকে। বাবুল বলেন, উনি সোমবার (১০ মে) ৯টায় আসবেন। তিনি আসার পর জিজ্ঞাসাবাদে বাবুল পিবিআইকে কিছু প্রশ্নের সঠিক উত্তর দিতে পারেননি। বিষয়গুলো আইজিপিকে জানানো হয়েছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকেও জানানো হয়। এ অবস্থায় ব্যাক করার সুযোগ নেই বলে জানায় পিবিআই।
বনজ কুমার আরও বলেন, আমরা পর্যবেক্ষণ করার জন্য নড়াইলে গাজী আল মামুন নামে এক লোককে নেই। আরেক বন্ধু সাইফুল হককেও পিবিআই ডাকে। দুজনই বাবুলের বন্ধু। তারা সাক্ষী হিসেবে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন। এর ভিত্তিতে পুরনো মামলাটির চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেওয়া হবে।
এর আগে মঙ্গলবার (১১ মে) সন্ধ্যায় চট্টগ্রামের বহুল আলোচিত ও চাঞ্চল্যকর মাহমুদা খানম মিতু হত্যা মামলায় স্বামী সাবেক পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারকে গ্রেপ্তার করে তদন্তকারী সংস্থা পুলিশ (পিবিআই)।
২০১৬ সালের ৫ জুন সকালে নগরীর পাঁচলাইশ থানার ও আর নিজাম রোডে ছেলেকে স্কুলবাসে তুলে দিতে যাওয়ার পথে বাসার অদূরে গুলি ও ছুরিকাঘাত করে খুন করা হয় মিতুকে। এ ঘটনায় বাবুল আক্তার বাদী হয়ে নগরীর পাঁচলাইশ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
হত্যা মামলায় ওই বছরের ৮ জুন ও ১১ জুন নগর গোয়েন্দা পুলিশ হাটহাজারী উপজেলা থেকে আবু নসুর গুন্নু ও বায়েজিদ বোস্তামী থানার শীতল ঝর্ণা থেকে শাহ জামান ওরফে রবিন নামে দুজনকে গ্রেপ্তারের খবর জানায়। পরে পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়, মিতু হত্যায় তাদের সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়নি। দীর্ঘদিন জেলে থাকার পর তারা জামিনে মুক্তি পান।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: