পাউরুটি কেটে বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন: দুই শিক্ষককে জাতির পিতার বই পড়ার আদেশ

সময় ট্রিবিউন | ২ ফেব্রুয়ারী ২০২২, ০৫:৩৩

দণ্ডিত দুই মাদ্রাসা শিক্ষক: চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার গোমস্তাপুর উপজেলার বৈরতলা দাখিল মাদ্রাসার সুপার মোহা. আব্দুস সালাম এবং একই মাদ্রাসার সহকারী শিক্ষক গোলাম কবির। ছবি-সংগৃহীত

জাতির পিতার জন্ম শতবার্ষিকীতে কেকের বদলে পাউরুটি কেটে ফেইসবুকে লাইভ করার ঘটনায় ‘অবমাননার’ অভিযোগে রাজশাহীর দুই মাদ্রাসা শিক্ষককে কারাদণ্ডের বদলে শাস্তি হিসেবে বঙ্গবন্ধুর তিনটি বই পড়ার আদেশ দিয়েছে আদালত।

এছাড়া তাদের দশটি বনজ এবং দশটি ফলজ গাছ রোপণেরও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে সাইবার ট্রাইব্যুনালের রায়ে।

ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা প্রমাণিত না হওয়ায় এ মামলার অপর নয় আসামিকে খালাস দিয়েছেন বিচারক।

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট ইসমত আরা জানান, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের এ মামলায় তাদের প্রবেশন মঞ্জুর করে মঙ্গলবার এ রায় দেন রাজশাহী সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. জিয়াউর রহমান।

দণ্ডিত দুজন হলেন: চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার গোমস্তাপুর উপজেলার বৈরতলা দাখিল মাদ্রাসার সুপার মোহা. আব্দুস সালাম এবং একই মাদ্রাসার সহকারী শিক্ষক গোলাম কবির।

অ্যাডভোকেট ইসমত আরা বলেন, “সাতজন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে দুই আসামির বিরুদ্ধে ২০১৮ সালের ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ২১/৩১ ধারার অপরাধ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়।তাদের সামাজিক ও পারিপার্শ্বিক অবস্থা বিবেচনায় এনে আদালত কারাদণ্ডের শাস্তির পরিবর্তে শর্তের ভিত্তিতে প্রবেশন মঞ্জুর করে তাদের মুক্তি দেন।”

দণ্ডিত দুই আসামি আদালতের নিয়োগ করা একজন প্রবেশন অফিসারের তত্ত্বাবধানে থাকবেন এক বছর। এই সময় তাদের জাতীর পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের লেখা ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’, ‘কারাগারের রোজনামচা’ এবং ‘আমার দেখা নয়াচীন’ বই তিনটি পড়তে হবে।

পাশাপাশি জাহানার ইমামের লেখা ‘একাত্তরের দিনগুলি’ এবং রণাঙ্গনের মুক্তিযোদ্ধাদের লেখা ‘একাত্তরের চিঠি’সহ পাাঁচটি বই পড়ে নিজ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের বিষয়গুলো সম্পর্কে জানাতে বলা হয়েছে দুই আসামিকে।

আইনজীবী ইসমত আরা বলেন, সাইবার ট্রাইব্যুালে আসা কোনো মামলায় এটিই প্রথম প্রবেশন। আসামিরা আপাতদৃষ্টিতে মুক্তি পেলেও আগামী এক বছর তারা আদালতের নজরদারিতে থাকবেন।

গত বছরের ১৭ মার্চ চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার গোমস্তাপুর উপজেলার বৈরতলা দাখিল মাদ্রাসায় দশ টাকা দামের একটি পাউরুটি কেটে বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন পালন করা হয়। সেই ভিডিও ভাইরাল হলে স্থানীয় আওয়ামী লীগ কর্মী ইউনুস আলী বঙ্গবন্ধুকে অবমাননার অভিযোগে মাদ্রাসা সুপারসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন।

তদন্ত করে ওই বছরের ১৬ সেপ্টেম্বর ১১ জনের বিরুদ্ধেই আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে পুলিশ।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: