পৃথিবীর বয়স যত বাড়ছে, কেয়ামত ততই নিকটবর্তী হচ্ছে। রাসুলুল্লাহ (সা.) হাদিসের মাধ্যমে আমাদের কাছে কেয়ামতের অনেক নিদর্শনের কথা বর্ণনা করে গেছেন। তারমধ্যে বেশ কিছু নিদর্শন ইতোমধ্যে বাস্তবায়িত হয়ে গেছে বা হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন ইসলামি চিন্তাবিদরা।
কেয়ামতের আলামতের মধ্যে উল্লেখযোগ্য একটি হলো অতিবৃষ্টি, অনাবৃষ্টি, তীব্র ঠান্ডা ও দাবদাহসহ বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগ ব্যাপক হারে বেড়ে যাবে। এতে করে মাঠঘাট যেমন ফসলহীন হয়ে পড়বে; প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে ফসলের উৎপাদন ক্ষতিগ্রস্ত হবে। আবার মরু অঞ্চলে ঝড়-বৃষ্টির কারণে ঘটবে এর উল্টোটা। বন্যার কবলে পড়ে বিপর্যস্ত হবে আরব অঞ্চল। পানির ছোঁয়ায় শুষ্ক মরুভূমি হয়ে যাবে সবুজ অরণ্যে।
রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘কিয়ামত অনুষ্ঠিত হবে না যে পর্যন্ত সম্পদের প্রাচুর্য না আসবে। এমনকি কোনো ব্যক্তি সম্পদের জাকাত নিয়ে ঘুরবে কিন্তু নেয়ার মতো লোক পাবে না। আরবের মাঠ-ঘাট তখন চারণভূমি ও নদী-নালায় পরিণত হবে।’
এটি মুসলিম হাদিসের ২২২৯ নাম্বারে উল্লেখ করা আছে। কোরআন-হাদিসের ভাষায় আরব বলতে গোটা আরব উপদ্বীপকে বোঝায়। আরব উপদ্বীপের দেশগুলো হলো সৌদি আরব, কুয়েত, বাহরাইন, কাতার, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ইয়েমেন ও ওমান।
সম্প্রতি এই আরব দ্বীপগুলোতেই হচ্ছে ঝড়বৃষ্টি, তীব্র বন্যা, ঘূর্ণিঝড়, তুষারপাত। পানির ছোঁয়ায় বলতে গেলে শুষ্ক মরুভূমি ধীরে ধীরে রূপ নিচ্ছে সবুজ অরণ্যে। এসবের মাধ্যমে মহানবী (সা.)-এর ভবিষ্যদ্বাণী আমাদের সামনে স্পষ্ট হতে শুরু করেছে। এ ছাড়া ‘সৌদি সবুজায়ন’ ও ‘মধ্যপ্রাচ্যের সবুজায়ন’ নামে দুটি বিশাল কর্মপরিকল্পনার ঘোষণা দিয়েছে সৌদি আরব। ধারণা করা হচ্ছে এর মাধ্যমে ব্যাপক আকারে আরবদ্বীপগুলোতে সবুজায়নের ধারার সূচনা হলো। আরব অঞ্চলের এসব পরিবর্তন মূলত কিসের আলামত? এ প্রসঙ্গে ইসলামের ব্যাখ্যা কী?
মুফতি মাহমুদুল হক জালীস বলেন, কেয়ামত নিয়ে আলামতে সুগরা ও আলামতে কোবরার কথা বলা হয়েছে। কেয়ামত হয়তো সন্নিকটে তাই আরবের আবহাওয়ার এতো পরিবর্তন। এসবের মাধ্যমে আরবের মরুভূমি উর্বর হবে, চাষাবাদের উপযুক্ত হয়ে উঠবে, গাছপালায় ভরে যাবে। এসবের মাধ্যমেই হয়তো আমরা কেয়ামতের আরও নিকটে চলে যাচ্ছি। এসবের কথা হাদিসে নবীজি আমাদের বলে গেছেন।
রাসুল (সা.) যে ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন, আমরা তার মধ্য দিয়েই পার হচ্ছি বলে মন্তব্য করেছেন বিশিষ্ট আলেমরা। তাদের মতে, মরু অঞ্চলের ঝড়বৃষ্টি, বন্যা, সবুজায়ন প্রকল্প কিংবা সম্প্রতি বিজ্ঞানীদের প্রকাশ করা সময় ছোট হয়ে যাওয়ার ঘটনা সামনে এসেছে তার সবকিছুই কেয়ামতের আলামত। এ সব কিছুর কথাই আমাদের নবীজি হজরত মুহাম্মদ (সা.) ১৪০০ বছর আগেই বলে গিয়েছিলেন, যা এখন অনেকটাই প্রকাশ্যে।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: