পাথর অপসারণ করতে গিয়ে কিডনি রেখে দিল চিকিৎসক

সময় ট্রিবিউন | ২০ অক্টোবর ২০২১, ১৩:১৯

ছবিঃ সংগৃহীত

কিডনি থেকে পাথর অপসারণের জন্য চিকিৎসকের শরণাপন্ন হয়েছিলেন গুজরাটের বাসিন্দা দেবেন্দ্রভাই রাভাল। তবে চিকিৎসক তার শরীরে বাঁ দিকের কিডনি অপসারণ করে ফেলেন। এরই জেরে মৃত্যু হয় দেবেন্দ্রভাই রাভালের। অভিযোগটি প্রমাণিত হওয়ায় গুজরাটের মহিসাগর জেলার কেএমজি জেনারেল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে ১১ লাখ রুপি জরিমানা করে রাজ্যের কনজিউমার ডিসপিউট রিড্রেসাল কমিশন। 

ভারতীয় গণমাধ্যম জানায়, কিডনিতে পাথর ধরা পড়ার পর দেবেন্দ্রভাই রাভালকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। কিন্তু পাথর অপসারণের কথা বলে তার শরীর থেকে কিডনি বের করে ফেলেন চিকিৎসক। এ সময় চিকিৎসক দাবি করেছিলেন, কিডনি অপসারণ করা হলে ওই রোগীর সব সমস্যাই সমাধান হয়ে যাবে। কিন্তু বাস্তবে তা ঘটেনি। অপারেশনের পর মারা যান দেবেন্দ্রভাই রাভাল। এ ঘটনায় মামলা করে মৃতের পরিবার। ওই মামলায় হাসপাতালকে ১১ লাখ রুপি জরিমানা করে রাজ্যের কনজিউমার ডিসপিউট রিড্রেসাল কমিশন। 

জানা গেছে, ঘটনাটি ২০১১ সালের। গুজরাটের মহিসাগর জেলার কেএমজি জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি হন দেবেন্দ্রভাই রাভাল। কিডনিতে পাথর জমেছিল তার। তীব্র যন্ত্রণা নিয়ে ওই বছরের মে মাসে হাসপাতালে ভর্তি হন তিনি। চিকিৎসক পরীক্ষা নিরীক্ষা করে দেখেন, একটি ১৫ মিলিমিটারের স্টোন জমেছে তার কিডনিতে। এ কারণেই এমন যন্ত্রণা। জানানো হয় দ্রুত অপারেশন করতে হবে। তবেই মিলবে সুরাহা।

এরপর চিকিৎসকের পরামর্শে হাসপাতালে ভর্তি হন গুজরাটের খেড়া জেলার ওই বাসিন্দা। ২০১১ সালের ৩ সেপ্টেম্বর তার কিডনি অপারেশন হয় গুজরাটের বালাসিনোরের কেএমজি জেনারেল হাসপাতালে। ওই অপারেশন করতে গিয়ে পাথরের বদলে তার শরীরের বাঁ দিকের কিডনি বের করে নেন চিকিৎসক। এ কথা নাকি সেই চিকিৎসক নিজেই জানান রোগীর পরিবারকে। বলেন, এটাই রোগীর পক্ষে সবচেয়ে ভালো সিদ্ধান্ত। এর ফলে রোগীর প্রস্রাবের সমস্যা আর হবে না। কিন্তু সমস্যা উল্টে বেড়ে যায়। এর পর আরও তীব্র শারীরিক যন্ত্রণা নিয়ে ২০১২ সালে দেবেন্দ্রভাই রাভাল ভর্তি হন অন্য এক হাসপাতালে। পরে সেখান থেকেও তাকে স্থানান্তর করা হয় আহমেদাবাদের কিডনি ডিজিস অ্যান্ড রিসার্চ সেন্টারে। কিন্তু এতো করেও বাঁচানো যায়নি তাঁকে। ২০১২ সালের ৮ জানুয়ারি মৃত্যু হয় দেবেন্দ্রভাইর। পরিবার অভিযোগ, চিকিৎসকের ভয়ংকর ভুলের মাশুল দিতে হয়েছে দেবেন্দ্রভাইকে। এর পর আইনের দ্বারস্থ হয় তার পরিবার।

অবশেষে ৯ বছর পর সেই মামলায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের গাফিলতির প্রমাণ পায় গুজরাট রাজ্য উপভোক্তা কমিশন। এরপর বালাসিনোরের কেএমজি জেনারেল হাসপাতালকে ১১ লাখ রুপি জরিমানা করা হয়। 



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: