রাজনীতি থেকে অবসরের ঘোষণা দিলেন ফিলিপিন্সের প্রেসিডেন্ট

সময় ট্রিবিউন | ৩ অক্টোবর ২০২১, ০৫:৩৬

ফিলিপিন্সের প্রেসিডেন্ট রদরিগো দুতার্তে-ফাইল ছবি

রাজনীতি থেকে অবসরের ঘোষণা দিলেন ফিলিপিন্সের প্রেসিডেন্ট রদরিগো দুতার্তে। কন্যা সারা দুতের্তে-কার্পিওর জন্য রাজনৈতিক পথ পরিষ্কার করতেই সবাইকে বিস্মিত করে তিনি এ ঘোষণা দিয়েছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।

বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, শনিবার দুতার্তে বলেন, “আজ আমি রাজনীতি থেকে অবসর নেওয়ার ঘোষণা দিচ্ছি।”

ফিলিপিন্সের সংবিধান অনুযায়ী, একজন প্রেসিডেন্ট শুধু ছয় বছরের এক মেয়াদের জন্যই ক্ষমতায় থাকতে পারবেন।

২০২২ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে তিনি ভাইস প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হবেন বলে গত মাসে জানিয়েছিলেন দুতার্তে (৭৬) । কিন্তু এটি সংবিধানের চেতনা লংঘন করে মর্মে অধিকাংশ ফিলিপিনো এর বিরোধিতা করেন।

তিনি বলেন, “যারা অনেক বছর আগে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে আমাকে সমর্থন দিয়েছিলেন, তাদের ইচ্ছার প্রতি আনুগত্য দেখিয়ে আমার সেই দেশবাসীকে বলছি, আমি আপনাদের মনোভাবকেই অনুসরণ করবো।”

আসছে মে-তে ছয় কোটিরও বেশি ফিলিপিনো নতুন একজন প্রেসিডেন্ট, ভাইস প্রেসিডেন্ট ও ১৮ হাজারেরও বেশি আইনপ্রণেতা ও স্থানীয় সরকার কর্মকর্তাদের নির্বাচিত করতে ভোট দেবে।

আগামী বছরের এই নির্বাচনে নিজের কন্যা দুতার্তে-কার্পিওকে দাঁড় করিয়ে দিয়ে দুতার্তে রাজনৈতিক চমক দিতে পারেন বলে দীর্ঘ দিন ধরে অনুমান করে আসছিলেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা।

তার বাবা রাজনীতি থেকে অবসর নেওয়ার ঘোষণা দেওয়ার কিছুক্ষণ পর দাভাওয়ের মেয়র হিসেবে পুনর্নির্বাচিত হওয়ার জন্য মনোনয়ন পত্র জমা দেন কার্পিও। কিন্তু এখনও তার নজর প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হওয়ার দিকে, এ ধরনের জল্পনায় জল ঢেলে দেওয়ার মতো কোনো কিছু করেননি তিনি। 

জনমত জরিপে সম্ভাব্য প্রেসিডেন্ট প্রার্থীদের মধ্যে শীর্ষে আছেন কার্পিও। গত মাসে তিনি জানিয়েছিলেন, বাবার সঙ্গে তার সমঝোতা হয়েছে যে ২০২২ সালে জাতীয় দপ্তরের প্রার্থী হিসেবে তাদের মধ্যে যে কোনো একজন দাঁড়াবেন, তাই আগামী বছরের নির্বাচনে প্রেসিডেন্ট পদে দাঁড়াচ্ছেন না তিনি।

কিন্তু এখন দুতার্তে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের দৌঁড়ে যোগ দেবেন না বলে ঘোষণা দেওয়ায় কার্পিওর পথ পরিষ্কার হয়ে গেল। 

এ বিষয়ে আন্তেনিও ডে ম্যানিলা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন ও রাজনীতির অধ্যাপক আন্তোনিও লা ভিনা বলেন, “এতে সারা দুতার্তে নির্বাচনে দাঁড়ানোর পথ খুলে গেল। বাবার পরিকল্পনা অনুযায়ী সে চলে অথবা এটি সবাইকে বিভ্রান্ত করার একটি নাটক।”

প্রার্থীরা শুক্রবার পর্যন্ত মনোনয়ন দাখিল করতে পারবেন, কিন্তু ১৫ নভেম্বর পর্যন্ত প্রার্থীতা প্রত্যাহার ও প্রার্থী পরিবর্তনের সুযোগ থাকবে। এতে শেষ মুহূর্তে মন পরিবর্তনের সুযোগ থাকছে। ২০১৬ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনেও দুতার্তে প্রায় শেষ সময়ে প্রার্থী হয়ে বাজিমাত করেছিলেন।

রাজনৈতিক বিশ্লেষক এল পারেইনোর ধারণা, দুতার্তে ওই একই কৌশল ব্যাবহার করছেন এবং সারা কার্পিও শেষ মুহূর্তে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের দৌঁড়ে শামিল হবেন।

এসব বিষয়ে মন্তব্যের জন্য অনুরোধ করা হলেও তাতে সাড়া দেননি কার্পিও, জানিয়েছে রয়টার্স।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: