নতুন বছর হতে যাচ্ছে বিশ্ব নির্বাচনী বছর। এ বছর শুধু দক্ষিণ এশিয়ার ৪টি দেশের প্রায় ২০০ কোটি মানুষ অংশ নেবেন ভোটে। বাংলাদেশসহ পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা ও প্রতিবেশী ভারতে হবে জাতীয় নির্বাচন। জানুয়ারী থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চলবে চার দেশের নির্বাচন।
বিরোধী দল বিএনপি ছাড়া ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের টানা চার মেয়াদ পূর্ণ করার নির্বাচন বাংলাদেশে। আর পাকিস্তানে নির্বাচনের আগে কারাবন্দী সাবেক ক্রিকেট তারকা ও প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান।
ইতিহাসের নজিরবিহীন সংকট সামলে ধীরে ধীরে ঘুরে দাঁড়ানো ভারত মহাসাগরের দ্বীপরাষ্ট্র শ্রীলঙ্কার জনগণ বেছে নেবেন তাদের নতুন রাষ্ট্রপতি।
বাংলাদেশ
প্রায় ১৭ কোটি জনসংখ্যার দেশ বাংলাদেশে ভোট হবে ৭ জানুয়ারি। এর মধ্য দিয়ে শুরু হবে বিশ্ব নির্বাচনী বছর। দেশটিতে একসময়ের বহুদলীয় গণতন্ত্র হুমকির মুখে পড়েছে। কারণ অধিকার গোষ্ঠীদের মতে, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ দল যাকে ভিন্নমতকে দমন করার প্রচারণা, প্রজাতন্ত্রকে একদলীয় রাষ্ট্রের মতো আরও ঘনিষ্ঠভাবে সাদৃশ্যপূর্ণ কিছুর দিকে ঠেলে দিচ্ছে।
বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী পার্টির সভানেত্রী শেখ হাসিনা টানা চতুর্থবারের মতো দেশের নেত্রী হিসেবে পুনর্নির্বাচিত হতে পারেন। ২০০৯ সাল থেকে ক্ষমতায় রয়েছেন তিনি। ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে শেষ নির্বাচনে জিতেছিলেন। নির্বাচনটি মারাত্মক সহিংসতা ও ভোট কারচুপির অভিযোগে পরিপূর্ণ।
বিএনপি আবারও নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। হিউম্যান রাইটস ওয়াচের সিনিয়র এশিয়া গবেষক জুলিয়া ব্লেকনার নভেম্বরে এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘সরকার কূটনৈতিক অংশীদারদের সঙ্গে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হওয়ার দাবি করছে যখন রাষ্ট্রীয় কর্তৃপক্ষ একইসঙ্গে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক বিরোধীদের দিয়ে কারাগার ভরাচ্ছে।
পাকিস্তান
স্বাধীনতার পর রাজনৈতিক বংশ পরম্পরা কিংবা সামরিক শাসনের অধীনে ৭৬ বছরের বেশি সময় কাটিয়েছে পাকিস্তান। দেশটিতে এ পর্যন্ত গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত কোনো সরকারই পাঁচ বছরের মেয়াদ পূর্ণ করতে পারেনি।
২৩ কোটির বেশি জনসংখ্যার দেশটিতে রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা ও জঙ্গি হামলার প্রবণতা সাম্প্রতিক সময়ে প্রবল হয়েছে। পাশাপাশি অর্থনৈতিক সংকট তো চলছেই। দেশটিতে বর্তমানে অন্তবর্তীকালীন সরকার বিদ্যমান।
ভারত
বিশ্বের বৃহত্তম গণতন্ত্র হিসেবে পরিচিত ভারত। ২০২৪ সালে দেশটিতে অনুষ্ঠিত হবে প্রধানমন্ত্রী নির্বাচন। ধারণা করা হচ্ছে বিজেপির নেতৃত্বে আবারও তৃতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসবেন নরেন্দ্র মোদি।
২০২৩ সালে ভারতের জনসংখ্যার হিসাব করা হয়েছিল ১৪০ কোটি। বিদায়ী বছর অস্ট্রেলিয়া ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে কূটনৈতিক সফর করেছিলেন মোদি। অচিরেই চীনকে ছাড়িয়ে বিশ্বের সবচেয়ে বেশি জনসংখ্যার দেশ হতে যাচ্ছে ভারত।
আগস্টের ২৩ তারিখ সফল চন্দ্রাভিযান করেছে ভারতের চন্দ্রযান-৩। পাশাপাশি সেপ্টম্বরে আয়োজন করেছে জি২০ শীর্ষ সম্মেলন।
শ্রীলংকা
প্রায় দুই বছর আগে নজিরবিহীন অর্থনৈতিক সংকটে গণবিক্ষোভের মুখে বাধ্য হয়ে পালিয়ে পদত্যাগ করেন দেশটির তৎকালীন প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসে। তবে দেশটি ধীরে ধীরে সংকট কাটিয়ে ঘুরে দাঁড়াচ্ছে।
নতুন বছর দেশটির নির্বাচনে পুনরায় রনি বিক্রমাসিংহে নির্বাচিত হতে পারেন বলে সম্ভাবনা দেখছেন বিশ্লেষকরা। ২০১৮ সাল থেকে শ্রীলঙ্কায় কোনো সাধারণ নির্বাচন হয়নি এবং অর্থনৈতিক সংকটের কারণে বিক্রমাসিংহে বারবার নির্বাচন বিলম্বিত করেছেন।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: