গাজায় সাহায্য পাঠাতে নিরাপত্তা পরিষদে প্রস্তাব গ্রহণ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | ২৩ ডিসেম্বর ২০২৩, ১২:৩৩

সংগৃহীত ছবি

গাজা উপত্যকায় আরও সাহায্য পাঠানোর আহ্বানের মাধ্যমে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে একটি প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়েছে। তবে, এতে হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে চলমান যুদ্ধে তাৎক্ষণিক বিরতি টানার বিষয়ে কোনো কিছু উল্লেখ করা হয়নি। খবর বিবিসির।

নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্য ও ইসরায়েলের ঘনিষ্ঠ মিত্র যুক্তরাষ্ট্রের ভোটো ক্ষমতার প্রয়োগ এড়াতে গত কয়েকদিনের দর-কষাকষি করা হয়। এরপর এই ভোটাভুটি হলো।

জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস বলেন, গাজায় সাহায্য সামগ্রী বিতরণে ‘মূল সমস্যা’ হলো ইসরায়েলের অব্যাহত আক্রমণ। তা ছাড়া যুদ্ধ চলতে থাকলে গাজা দুর্ভিক্ষের ঝুঁকিতে পড়বে বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছে জাতিসংঘ।

গত ৭ অক্টোবর ফিলিস্তিনি সশস্ত্র সংগঠন হামাস ইসরায়েলের অভ্যন্তরে প্রবেশ করে হামলা চালিয়ে কমপক্ষে এক হাজার ২০০ জনকে হত্যা করে এবং ২৪০ জনেরও বেশি লোককে অপহরণ করে নিয়ে আসে। এরপর হামাসকে নির্মূল করতে পুরো ফিলিস্তিনজুড়ে ব্যাপক সামরিক অভিযান শুরু করে ইসরায়েল। হামাস পরিচালিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাব অনুযায়ী, ইসরায়েলের হামলায় গাজা উপত্যকাতেই কমপক্ষে ২০ হাজার লোক নিহত হয়েছেন, যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু।

এদিকে, ভোটাভুটি শুরু হওয়ার কিছুক্ষণ আগে নিরাপত্তা পরিষদের আরেক স্থায়ী সদস্য রাশিয়া আগের খসড়া প্রস্তাবের বিষয়ে একটি সংশোধনী উত্থাপন করে। এতে গাজায় অতিদ্রুত যুদ্ধবিরতির ডাক দেওয়া হয়। সংশোধনীতে যুক্তি উপস্থাপন করা হয়, প্রস্তাবটিতে ইসরায়েলকে গাজা উপত্যকা খালি করতে আরও ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। তবে রাশিয়ার সংশোধনী প্রস্তাব ভোটে হেরে যায়।

অন্যদিকে, ‘শত্রুতার একটি টেকসই সমাপ্তি টানতে’ পরিস্থিতি সৃষ্টির জন্য নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাবের পক্ষে ১৩টি সদস্য দেশ ভোট দেয়। এতে রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্র ভোটদানে বিরত থাকে। পাস হওয়া প্রস্তাবে গাজা উপত্যকাজুড়ে করিডোর সৃষ্টির লক্ষ্যে মানবিক যুদ্ধবিরতির ওপর জোর দেওয়া হয়েছে।

প্রস্তাবে গাজা উপত্যকায় ফিলিস্তিনি বেসামরিক লোকজনের কাছে অতিদ্রুত, নিরাপদে ও বাধাহীনভাকে মানবিক সহায়তা সামগ্রী সরাসরি পৌঁছাতে সংশিষ্ট পক্ষগুলোকে অনুমোদন দিতে এবং তা কার্যকর করতে আহ্বান জানানো হয়।

প্রস্তাবে সাহায্য সামগ্রী বিতরণের গতি বাড়াতে জাতিসংঘের তৎপরতায় একজন সমন্বয়ক নিয়োগের কথাও বলা হয়।

ওয়াশিংটন প্রথমদিকে আশঙ্কা প্রকাশ করেছিল, এই প্রস্তাব ইসরায়েলের হাত থেকে যুদ্ধবিধ্বস্ত এলাকার নিয়ন্ত্রণ কেড়ে নেবে। তবে এতে একটি বিষয় পরিষ্কার করা হয়েছে, সংশ্লিষ্ট সবপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

হামাস এক প্রতিক্রিয়ায় বলেছে, এই প্রস্তাবটিতে গাজায় মানবিক সাহায্য পৌঁছাতে ‘অপর্যাপ্ত পদক্ষেপ’ নেওয়ার কথা বলা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে প্রস্তাবটিকে মূল বিষয়শূন্য করে দেওয়ার অভিযোগ এনেছে হামাস।

অন্যদিকে, ইসরায়েলে প্রতিরক্ষা বিভাগের মুখপাত্র ডেনিয়েল হাগারি প্রস্তাবে শর্তহীনভাবে ইসরায়েলি সব পণবন্দিকে মুক্তির বিষয়ে আলোকপাত করে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ও সংগঠনকে এ বিষয়ে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: