রোহিঙ্গা তহবিল সংকট; উদ্বিগ্ন জাতিসংঘ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | ২৪ আগষ্ট ২০২২, ০৮:১০

ইউএনএইচসিআর-এর মুখপাত্র শাবিয়া মান্টু

বাংলাদেশে আশ্রিত রোহিঙ্গাদের জন্য জাতিসংঘের গঠিত তহবিলে টান পড়েছে। বিশ্বের বিভিন্ন দাতা দেশ ও সংস্থা থেকে প্রত্যাশিত সহায়তা না আসায় এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।

জাতিসংঘের শরণার্থী নিরাপত্তা বিষয়ক সংস্থা ইউনাইটেড নেশনস রেফিউজি এজেন্সি (ইউএনএইচসিআর) মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে জানিয়েছে এ তথ্য।

ইউএনএইচসিআরের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বিশ্বের বিভিন্ন দাতা দেশ ও সংস্থার ভরসায় ২০২২ সালে বাংলাদেশে আশ্রিত রোহিঙ্গাদের জন্য ৮৮১ মিলিয়ন ডলারের তহবিল গঠনের পদক্ষেপ নিয়েছিল জাতিসংঘ। কিন্তু এখন পর্যন্ত এই তহবিলে জমা পড়েছে মাত্র ৪২৬ দশমিক ২ মিলিয়ন ডলার, শতকরা হিসেবে যা জাতিসংঘের প্রস্তাবিত অর্থের ৪৯ শতাংশ।

ইউএনএইচসিআরের বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা প্রায় ১০ লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশের শরণার্থী শিবিরে মানবেতর জীবনযাপন করছে। বাংলাদেশে তাদের কাজের কোনো সংস্থান নেই এবং খাদ্য, আশ্রয়, পয়নিষ্কাশন সামগ্রীর জন্য তারা সম্পূর্ণভাবে জাতিসংঘের ত্রাণের ওপর নির্ভরশীল।’

‘যদি (রোহিঙ্গা) তহবিলে পর্যাপ্ত অর্থ না থাকে, সেক্ষেত্রে বাংলাদেশে আশ্রিত রোহিঙ্গাদের উদ্দেশে জাতিসংঘের পরিচালিত ত্রাণ কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হবে। আর ত্রাণ সরবরাহ বাধাগ্রস্ত হওয়ার অর্থ— বিপুল সংখ্যক অসহায় মানুষকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেওয়া।’

২০১৭ সালে মিয়ানমারের আরাকান রাজ্যে কয়েকটি পুলিশ স্টেশন ও সেনা ছাউনিতে বোমা হামলা করার অভিযোগ ওঠে সশস্ত্র রোহিঙ্গাগোষ্ঠী আরাকান স্যালভেশন আর্মির (আরসা) বিরুদ্ধে। সেই হামলার জের ধরে বাংলাদেশ- মিয়ানমার সীমান্তবর্তী রোহিঙ্গা গ্রামগুলোতে দফায় দফায় হামলা চালায় মিয়ানমার সেনাবাহিনী।

সেনাবাহিনীর হত্যা, ধর্ষণ, লুটপাট, অগ্নিসংযোগের সামনে টিকতে না পেরে লাখ লাখ রোহিঙ্গা সীমান্ত পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশসহ আশপাশের বিভিন্ন দেশে পালাতে শুরু করে। বাংলাদেশ সরকারের হিসাব অনুযায়ী, প্রায় ১০ লাখ রোহিঙ্গা মিয়ানমার থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে।

জাতিসংঘের পর্যবেক্ষক দল ও বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মানবাধিকার গোষ্ঠী তাদের প্রতিবেদনে জানিয়েছে, মিয়ানমারে জাতিগতভাবে রোহিঙ্গাদের নির্মূল করতেই ২০১৭ সালে অত্যন্ত নেক্কারজনক এই গণহত্যা চালিয়েছিল দেশটির সেনাবাহিনী।

মিয়ানমারের রোহিঙ্গাদের ওপর এই নিষ্ঠুর নির্যাতনের জেরে বিশ্বজুড়ে ক্ষোভ শুরু হওয়ার পর ২০১৯ সালে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে মিয়ানমারের সরকারের বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগে মামলা করে আফ্রিকার দেশ গাম্বিয়া।

করোনা মহামরির কারণে সেই মামলার বিচার কার্যক্রমে ছেদ পড়েছিল, সম্প্রতি ফের শুরু হয়েছে মামলার কার্যক্রম।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: