সিরিয়ায় উত্তর-পূর্বাঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্র সমর্থিত কুর্দি বাহিনী ও আইএসের মধ্যে ৩ দিনের সংঘর্ষে অন্তত ১২০ জন নিহত হয়েছেন। যুক্তরাজ্য ভিত্তিক সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটসের বরাতে রোববার এই তথ্য দিয়েছে আল-জাজিরা।
সিরিয়ার একটি কারাগারে বৃহস্পতিবারের হামলার পর থেকে দুই পক্ষের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়েছে। প্রায় তিন বছর আগে আইএসের পতনের পর এটিই সবচেয়ে বড় হামলা।
বৃহস্পতিবার হাসাকা নগরীতে কুর্দি নিয়ন্ত্রিত গোয়েরান কারাগারে বন্দি সদস্যদের মুক্ত করতে হামলা চালায় আইএস। শুক্রবার এর দায় স্বীকার করে জঙ্গি গোষ্ঠীটি। শুরু হয় কুর্দি বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষ। জঙ্গিদের ঠেকাতে আন্তর্জাতিক জোটের সহায়তায় চলছে কুর্দিদের অভিযান। সেনা ও ট্যাংক মোতায়েন করেছে তারা।
সিডিএফ মিডিয়া সেন্টারের প্রধান মার্ভেন কামিশলো জানিয়েছেন, হামলাকারীর সংখ্যা ৮০ থেকে ১০০, সর্বোচ্চ ১১০ জন ছিল। কুর্দি বাহিনী চারপাশে মোতায়েন রয়েছে। জঙ্গিরা আশপাশের ভবনে লুকিয়ে থাকতে পারে। তাই থেমে থেমে চলছে লড়াই। এলাকার বাসিন্দারা ঘরবাড়ি ছেড়ে পালাচ্ছে।
যুক্তরাজ্য ভিত্তিক সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস জানায়, সংঘাতে আইএসের অন্তত ৭৭ সদস্য এবং অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা বাহিনী, কারারক্ষী, সন্ত্রাসবিরোধী বাহিনীসহ কুর্দি বাহিনীর ৩৯ সদস্য নিহত হয়েছেন।
বিবিসি জানায়, আইএসের কয়েকজন নেতাসহ গোষ্ঠীটির সাড়ে তিন হাজার সদস্য বন্দি আছে কারাগারটিতে। কুর্দিদের দাবি, কারাগারের ছোট্ট অংশ ছাড়া আশপাশের পুরো এলাকাই তাদের নিয়ন্ত্রণে।
এসডিএফ এর মুখপাত্র ইন্তিকাম হাসাকেক জানিয়েছেন, বর্তমানে শুধু কারাগারেই আইএস সদস্যদের অস্তিত্ব আছে। তাদের ঘিরে রাখা হয়েছে। জঙ্গিদের কাছে অস্ত্রও আছে। তবে এক সময় গুলি শেষ হবে, তারা বেশি কিছু করতে পারবে না। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে।
সিরিয়ান অবজারভেটরি জানায়, শনিবার রাতভর সেখানে প্রচণ্ড সংঘর্ষ চলে। কুর্দি বাহিনী কারাগারের ওপর নিজেদের নিয়ন্ত্রণ ও আশপাশের এলাকায় থাকা আইএস সদস্যদের নিষ্ক্রিয় করার চেষ্টা করছে।
এদিকে আইএসের মুখপত্র হিসেবে পরিচিত সংবাদমাধ্যম আমাক জানিয়েছে, আইএস সদস্যরা কারাগারের এক অস্ত্রাগার দখলের পর দুটি আত্মঘাতী বোমা হামলার মধ্য দিয়ে ওই অভিযান শুরু করে। এ অভিযানে তারা তাদের কয়েক শ সদস্যকে কারাগার থেকে মুক্ত করতে সক্ষম হয়েছে।
কারা কর্তৃপক্ষ বলছে, বাইরে গাড়িবোমা বিস্ফোরণ ঘটিয়ে হামলা চালিয়েছে আইএস সদস্যরা। সংঘর্ষের সময় অনেক বন্দি পালাতে পারলেও তাদের আবারও আটক করা হয় বলে জানায় সিরিয়ান অবজারভেটরি।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: