প্রথমবার মঙ্গল গ্রহে অক্সিজেন তৈরি করল NASA

সময় ট্রিবিউন | ৩০ এপ্রিল ২০২১, ০৪:২৫

ছবি: ইন্টারনেট

তৈরি হচ্ছে একের পর এক ইতিহাস। এবার মঙ্গলের বুকে অক্সিজেন তৈরি করল নাসার রোভার পারসিভেরান্স। বুধবার এই সফল প্রয়াসের কথা জানাল মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা।

'মঙ্গলগ্রহে বিদ্যমান কার্বন-ডাই-অক্সাইড থেকে অক্সিজেন তৈরির ক্ষেত্রে এটি প্রথম ও বড় পদক্ষেপ,' জানালেন নাসার স্পেস টেকনোলজি মিশনের কর্তা জিম রয়টার। গত ২০ এপ্রিল সফলভাবে অক্সিজেন তৈরি করে পারসিভেরান্স।

ভবিষ্যতে মঙ্গলে মানুষ প্রেরণ করাই এখন নাসা, স্পেসএক্স- সংস্থাগুলির কাছে চ্যালেঞ্জ। কিন্তু মঙ্গলে দীর্ঘ সময় নভোশ্চরদের থাকার জন্য প্রয়োজন অক্সিজেনযুক্ত বাতাস। সেই কারণেই এই প্রয়াস অত্যন্ত্য গুরুত্বপূর্ণ।

এছাড়া রকেটেও জ্বালানির সুষ্ঠ দহনের জন্য অক্সিজেন প্রয়োজন। মঙ্গলের মাটিতেই যদি অক্সিজেন প্রস্তুত করা যায় সেক্ষেত্রে সুবিধা হবে। মঙ্গল থেকে ফিরতি পথে সেই অক্সিজেন ব্যবহার করা যাবে রকেটে। পৃথিবী থেকে অতিরিক্ত বয়ে নিয়ে যাওয়ার প্রয়োজন হবে না।

Mars Oxygen In-Situ Resource Utilization Experiment বা সংক্ষেপে MOXIE একটি সোনালি রঙের বাক্স। পারসিভেরান্স রোভারের সামনের ডানদিকের অংশে এটি রয়েছে।এটিকে যন্ত্র উদ্ভিদ (Mechanical Tree) বলেও অভিহিত করা হয়। কারণ উদ্ভিদের মতোই এটি কার্বন ডাই অক্সাইড থেকে অক্সিজেন উত্পাদনে সক্ষম।

প্রথম রান-এ MOXIE মোট ৫ গ্রাম অক্সিজেন উত্পাদন করে। এতে একজন নভোশ্চর প্রায় ১০ মিনিট পর্যন্ত শ্বাস নিতে পারবেন। আপাতত ঘণ্টায় ১০ গ্রাম করে অক্সিজেন প্রস্তুত করতে সক্ষম এই যন্ত্র।

MOXIE-এর নকশা তৈরি হয়েছে ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজির গবেষণাগারে। নিকেলের সংকর দিয়ে তৈরি এই যন্ত্র প্রায় ৮০০ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত উত্তাপ সহ্য করতে সক্ষম।

কার্বন ডাই অক্সাইড থেকে অক্সিজেন উৎপাদনের মূল কারণ একটাই। তা হল মঙ্গলে CO2-এর প্রতুলতা। মঙ্গলগ্রহের ৯৬%-ই কার্বন ডাই অক্সাইড। ফলে এটাই সহজতম পন্থা।

এছাড়াও থিওরিগতভাবে বলা হয় যে মঙ্গলের ভূস্তরের নিচের বরফ বের করে সেটা ইলেক্ট্রোলাইজিং করে অক্সিজেন উৎপাদন সম্ভব। কিন্তু বাস্তবে তা বেশ কঠিন, ব্যয়সাপেক্ষ ও সময়সাপেক্ষ।

প্রসঙ্গত, চলতি সপ্তাহেই মঙ্গলে সফল উড়ান হয় নাসার হেলিকপ্টার Ingenuity-র। তাতে ছিল রাইট ব্রাদার্সদের তৈরি বিশ্বের প্রথম বিমানের কাপড়। ফলে পরের পর ইতিহাসের সাক্ষী থাকছে মহাকাশ গবেষণার জগত।

নাসার রোভার পারসিভেরান্স-এর সঙ্গে ফেব্রুয়ারিতেই মঙ্গলে পৌঁছায় হেলিকপ্টারটি। প্রায় ৬ মাস যাত্রার পর নির্বিঘ্নে মঙ্গলের মাটি ছোঁয় পার্সিভিয়ারেন্স ও ইনজেনুইটি। চলতি মাসের শুরুতেই পার্সিভিয়ারেন্স-এর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে বেরিয়ে আসে হেলিকপ্টারটি। হেলিকপ্টারটির মিশন দৈর্ঘ্য মোট ৩০ দিন।


আপনার মূল্যবান মতামত দিন: