সিয়াম সাধনার যত উপকারিতা

সময় ট্রিবিউন | ৮ মে ২০২১, ১০:১১

ছবিঃ সংগৃহীত

রমজান মাস মানেই সংযম।আল্লাহ পাকের কাছাকাছি যাওয়ার এক অপূর্ব সুযোগ।এই মাসে মু'মিন ব্যাক্তি সিয়াম সাধনায় আল্লাহর ইবাদত করে থাকে।নামাজ,কোরআন পড়ার পাশপাশি মশগুল থাকে তারাবী সহ বিভিন্ন ইবাদতে।

রোজা মানে সুবহে সাদিক হতে সূর্যাস্ত পর্যন্ত পানাহার সহ যাবতীয় খারাপ কাজ থেকে নিজেকে বিরত রাখা।অনেকে ভাবেন, রোজা থাকলে শরীরের ক্ষতি হয়। প্রকৃতপক্ষে রোজা রাখার উপকারিতা অনেক। তাই ইসলাম ধর্মে অনেক বছর আগে থেকেই প্রতি বছরে একটি মাস রোযা রাখা ফরজ ইবাদত হিসেবে পালিত হয়ে আসছে। রোজা রাখার অনেক স্বাস্থ্যগত উপকারিতা আছে। নিম্নে তা দেওয়া হলো:

রোজা রাখার স্বাস্থ্যগত কিছু উপকারিতা:

১. রোযা রাখার হতে পারে ত্বকের জন্য অনেক উপকার।যারা ত্বকের যত্ন নিতে চান রোজা হতে পারে তাদের জন্য অনেক ফলপ্রুস।ক্ষতিকর টক্সিন বের করে দেওয়ার ফলে ত্বক ও চামড়া সুন্দর থাকে এবং নানা ধরনের চর্মরোগ থেকে বেচে থাকা যায়।

২. রমজানে রোজা রাখার ফলে আলঝেইমার, ডিমেনশিয়া বা স্মৃতিভ্রমের মতো বয়সজনিত রোগগুলো থেকে বেচে থাকা যায়।

৩. রোজা রাখার ফলে অনেকে অনেক ভাল ডায়েট মেনে চলতে পারে।অনেকেই এই সিয়াম সাধনার ফলে ওজন হ্রাস পায়।অনেকে এই মাসকে কাজে লাগিয়ে স্লিম হতে পারে।

৪. রমজান হতে পারে ধূমপান থেকে বেচে থাকার অন্যতম পন্থা।রমজানে রোজা রাখার ফলে একজন ধূমপায়ী ব্যাক্তি এ থেকে বেঁচে থাকতে পারে এবং কম পরিমান ধূমপান করে থাকে।।এই মাসে এইসব বদ অভ্যাস থেকে বিরত রাখতে পারে।

৫. গবেষনায় দেখা গেছে যে,বিশ্বে যত মানুষ অপুষ্টিতে মারা যায় তার চেয়ে বেশি মানুষ মারা যায় অতিরিক্ত পুষ্টির কারনে।যেসব মানুষের শরীরে অনেক বেশি ফ্যাট,চর্বি থাকে রোজা রাখার কারনে তা অনেকাংশ কমে যায়।

৬. এক মাস সিয়াম সাধনার রাখার ফলে শরীরের বিভিন্ন অঙ্গের মাঝে কিছু ভাল উপকারিতা আসে।যার কারনে শরীর আগের চেয়ে বেশি কর্মক্ষম হয়। লিভার শক্তিশালি হয়ে উঠে ও পরিপাকতন্ত্রে কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। শরীরে সঞ্চিত বিষাক্ত ও বিভিন্ম ক্ষতিকারক পদার্থগুলো শরীর হতে দূর হয়ে যায়।যার ফলে শরীর ভাল থাকে।

৭. রোজা রাখলে হৃদরোগ, উচ্চ রক্তচাপ এবং হাঁপানি রোগীদের অনেক বেশি উপকার হয়ে থাকে।ফলে রোযা রাখলে রক্তে ফ্যাটের মাত্রা কমে যায়, ফলে হৃদরোগের প্রকোপ অনেক কমে যায়। রোযা রাখলে স্ট্রেস হরমোন কম নিঃসরণ হয়, ফলে বিপাকক্রিয়া ও শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেক বেড়ে যায়।

৮. সিয়াম সাধনা উচ্চ রক্তচাপের রোগোদের জন্য মঙ্গলজনক।১ মাস সিয়াম সাধনার ফলে মস্তিষ্কের সেরিবেলাম ও লিমরিক সিস্টেমের ওপর নিয়ন্ত্রণ বেড়ে যায় তার ফলে মনের অশান্তি ও দুশ্চিন্তা দূর হয় এবং এর ফলে দেহের কর্মোদ্দীপনাও বেড়ে যায়।এছাড়াও অধিকাংশ হাঁপানি রোগীর ক্ষেত্রেই রোজা বিশেষ উপকারী ভুমিকা পালন করে।।

৯. রোজা হতে পারে ডায়াবেটিস রোগিদের অনেক উপকারি। তবে লক্ষ রাখতে হবে যেন হাইপোগ্লাইসেমিয়া না হয়ে যায়।যাদের ডায়বেটিস বেশি তারা ডাক্তারের পরামর্শ মেনে মেডিসিন গ্রহন করতে পারেন।

১০. আলসার রোগীরা এই সিয়াম সাধনারত ফলে অনেক উপকারিতা লাভ করে থাকে।রোযা যেহেতু মানসিক প্রশান্তি নিয়ে মনকে শান্ত করে তাই এসিড নিঃসরণ স্বাভাবিক থাকে। আর এজন্যই রোযায় গ্যাস্ট্রিক আলসারের রোগীরা ভাল থাকেন।

রোজা রাখার ফলে অনেক উপকার হয়ে থাকে।মানুষের শারীরিক ও মানসিক উন্নতি হয়ে।মানুষ খারাপ কাজ থেকে বিরত থাকে এবং সমাজে অনেকেই শিচাষ্টার মেনে চলে।হাসিসে এসেছে,হযরত আবু হুরায়রা (রা) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ(সো:)ইরশাদ করেন, যে ব্যক্তি ঈমান ও ইহতিসাবসহ রমজান মাসের সিয়াম পালন করবে, তার পূর্ববর্তী ও পরবর্তী গুণাহ মাফ করে দেওয়া হবে।(সহীহ বুখারী: ৩৮, সহীহ মুসলিম:৭৬০)



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: