শিক্ষার্থীর চুল কর্তন: শিক্ষক ফারহানার অপসারণের দাবিতে আমরণ অনশন

সময় ট্রিবিউন | ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২১, ০৫:৩৬

শিক্ষক ফারহানা ইয়াসমিনকে স্থায়ীভাবে অপসারণের দাবিতে ১১ শিক্ষার্থী প্রধান ফটকে আমরণ অনশন কর্মসূচি পালন করছেন। ছবি : সংগৃহীত

রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৪ শিক্ষার্থীর মাথার চুল কেটে দেওয়ার ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও বাংলাদেশ অধ্যয়ন বিভাগের শিক্ষক ফারহানা ইয়াসমিনকে স্থায়ীভাবে অপসারণের দাবিতে বুধবার সকাল থেকে ১১ শিক্ষার্থী প্রধান ফটকে আমরণ অনশন কর্মসূচি পালন করছেন।

শিক্ষার্থীদের আমরণ অনশন চলাকালে দুপুরে জাকারিয়া জিহাদ নামের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও বাংলাদেশ অধ্যয়ন বিভাগের এক শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়লে তাঁকে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়।

শিক্ষক ফারহানা ইয়াসমিনকে স্থায়ীভাবে অপসারণের দাবিতে সকাল থেকেই অস্থায়ী ক্যাম্পাসে বিক্ষুব্ধ ছাত্র-ছাত্রীরা দিনভর মিছিল ও সমাবেশ করেছেন।

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের তিন মুখপাত্র নাজমুল হাসান, শামীম হোসেন ও আবু জাফর হোসাইন বুধবার বিকেলে সংবাদ সম্মেলনে জানান, অভিযুক্ত শিক্ষক ফারহানা ইয়াসমিন রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করার যোগ্য নন। তিনি ১৪ শিক্ষার্থীর চুল কেটেই ক্ষান্ত হননি, উপরন্তু আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের নানাভাবে ভয়ভীতি ও হুমকি দিয়ে আসছেন। তাঁরা আরও বলেন, শুধু প্রশাসনিক পদ থেকে অব্যাহতি নয়, তাঁকে স্থায়ীভাবে অপসারণ না করা পর্যন্ত এই আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।

এদিকে শিক্ষার্থীদের চুল কেটে দেওয়ার ঘটনা তদন্তে পাঁচ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

ফারহানা ইয়াসমিন রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও বাংলাদেশ অধ্যয়ন বিভাগের শিক্ষক। তিনি বিভাগের চেয়ারম্যান, সহকারী প্রক্টর ও সিন্ডিকেট সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করতেন। গতকাল রাতে এই তিন পদ থেকে তিনি পদত্যাগ করেছেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের রুটিন দায়িত্বপ্রাপ্ত উপাচার্য ও ট্রেজারার আব্দুল লতিফ সাংবাদিকদের জানান, অভিযুক্ত শিক্ষককে চাকরিচ্যুত বা অপসারণ করার এখতিয়ার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের নেই। তবে বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে অবহিত করা হয়েছে।

কবে নাগাদ তদন্ত কমিটি প্রতিবেদন জমা দেবে, এমন প্রশ্নের জবাবে তদন্ত কমিটির প্রধান বিশ্ববিদ্যালয়ের রবীন্দ্র অধ্যয়ন বিভাগের চেয়ারম্যান লায়লা ফেরদৌস গণমাধ্যমকে জানান, দ্রুত তদন্ত শেষ করে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। আমরা বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বসহকারে দেখছি।

গত রোববার দুপুরের দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও বাংলাদেশ অধ্যয়ন বিভাগের প্রথম বর্ষের রাষ্ট্রবিজ্ঞান পরিচিতি বিষয়ের চূড়ান্ত পরীক্ষা ছিল। পরীক্ষার হলে প্রবেশের সময় ১৪ শিক্ষার্থীর চুল কেটে দেন ফারহানা ইয়াসমিন। চুল কেটে দেওয়ার অপমান সহ্য করতে না পেরে গত সোমবার রাতে নাজমুল হাসান নামের এক ছাত্র অতিমাত্রায় ঘুমের ওষুধ খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। তাঁকে মুমূর্ষু অবস্থায় এনায়েতপুর খাজা ইউনুস আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

এ ঘটনার প্রতিবাদে গতকাল মঙ্গলবার সকাল থেকে শিক্ষার্থীরা ক্লাস ও সব পরীক্ষা বর্জন করে একাডেমিক ও প্রশাসনিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে দেন। বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা  দুপুরে ফারহানাকে স্থায়ীভাবে অপসারণসহ দুই দফা দাবিসংবলিত একটি স্মারকলিপি রুটিন দায়িত্বপ্রাপ্ত উপাচার্যের কাছে জমা দেন।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: