ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কালো দিবস আজ

সময় ট্রিবিউন | ২৩ আগষ্ট ২০২১, ০৯:৩৫

ছবি : ইন্টারনেট

আজ ২৩ আগস্ট ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি)  কালো দিবস’। ২০০৭ সালের ২০ আগস্ট ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের খেলার মাঠে সেনা সদস্যের হাতে একজন ছাত্র লাঞ্ছিত হওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে তিন থেকে চার দিন ছাত্র ও শিক্ষকদের ওপর আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর নির্যাতনের ঘটনা ঘটে। এরই প্রতিবাদে শিক্ষকরা সেবছর থেকে ২৩ আগস্টকে কালো দিবস হিসেবে পালন করে আসছেন।         

জানা যায়, ২০০৭ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ের শারীরিক শিক্ষা কেন্দ্রে সেনা সদস্যদের ক্যাম্প স্থাপন করা হয়। ফখরুদ্দিন-মইন ইউ আহমেদের তত্ত্বাবধায়ক সরকার দেশের গনতন্ত্রকে হরণ করার প্রথম ধাপ হিসেবে এটি করেছিল বলে অভিযোগ আছে। পরে সে বছরের ২০ আগস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ এবং লোকপ্রশাসন বিভাগের মধ্যকার ফুটবল খেলা নিয়ে শিক্ষার্থী ও সেনা সদস্যদের মধ্যে দ্বন্দ্ব বাধলে সেনা সদস্যরা শিক্ষার্থীদের ওপর শারীরিক নির্যাতন চালান।

পরে লোকপ্রশাসন বিভাগের অধ্যাপক মোবাশ্বের মোনেম এর প্রতিবাদ করতে গেলে সেনা সদস্যদের দ্বারা লাঞ্ছিত হন। শিক্ষার্থীর এ ঘটনার প্রতিবাদ করে সেনা সদস্যদেরকে ছাত্রদের কাছে ক্ষমা চাওয়ার দাবি জানান। কিন্তু সেনা সদস্যরা এটি ইস্টবেঙ্গল রেজিমেন্টের ক্যাম্প বলে তা প্রত্যাখান করেন।

এর পরদিন ২১ আগস্ট নির্যাতনের প্রতিবাদে পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের মাঠ থেকে সেনাক্যাম্প প্রত্যাহার এবং ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে রাস্তায় নেমে আসেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বস্তরের বিক্ষুব্দ শিক্ষার্থীরা।  তখন তাদের ওপর পুলিশ আক্রমণ চালালে নীলক্ষেত, টিএসসি, কার্জন হল এলাকাসহ সম্পূর্ণ ক্যাম্পাস রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। পুলিশের টিয়ারশেল ও রাবার বুলেটে আহত হন শত শত ছাত্র। আন্দোলনের মুখে বিশ্ববিদ্যালয়ের শারীরিক শিক্ষা কেন্দ্র থেকে ক্যাম্প সরিয়ে নিতে বাধ্য হয় সেনাবাহিনী।      

এর পরে ২২ আগস্ট দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আন্দোলন ছড়িয়ে পড়লে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে উঠ। এমতাবস্থায়  তৎকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার ২২ আগস্ট বিভাগীয় শহরগুলোতে কারফিউ জারি করে। একই সাথে সেই দিন সন্ধ্যার মধ্যেই ঢাবির আবাসিক ছাত্র-ছাত্রীদের হল ছাড়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। 

সারাদেশ আন্দোলন ছড়িয়ে পরলে ২৩ আগস্ট রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক আনোয়ার হোসেন ও অধ্যাপক হারুন-অর-রশিদকে আটক করে অজানা স্থানে নিয়ে যাওয়া হয়। এছাড়াও, শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে সংহতি প্রকাশের অভিযোগে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক আবদুল্লাহ আল মামুন, সেলিম রেজা নিউটন , সাইদুর রহমান খান, আবদুস সোবহান, মলয় কুমার ভৌমিক, দুলাল চন্দ্র বিশ্বাসকে গ্রেফতার দেখানো হয়।       

এদিকে প্রতি বছরের মতো এবারো বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ দিবসটি উপলক্ষে বেশ কিছু কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। কর্মসুচীর মধ্যে রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীবৃন্দ কালো ব্যাজ ধারণ করবেন। সকাল ১১টায় উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামানের সভাপতিত্বে প্রশাসনিক ভবনস্থ অধ্যাপক আব্দুল মতিন চৌধুরী ভার্চুয়াল ক্লাসরুমে এক ভার্চুয়াল আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে।      

 

 



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: