লালমনিরহাটের দইখাওয়া আদর্শ কলেজের ব্যতিক্রমী গেইট, দেশজুড়ে প্রশংসার ঝড়

লালমনিরহাট প্রতিনিধি | ১৯ জুন ২০২১, ০০:৫৩

ছবিঃ সংগৃহীত
লালমনিরহাট জেলার হাতীবান্ধা উপজেলার সীমান্তবর্তী পশ্চাৎপদ এলাকা গোতামারী ইউনিয়নের দইখাওয়া আদর্শ কলেজের অধ্যক্ষ ব্যতিক্রমী গেইট তৈরি করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। দেশী-বিদেশী ইংরেজী ও বাংলা সাহিত্যের বিখ্যাত লেখকদের রচিত পুস্তকের আদলে তৈরি করা হয়েছে দইখাওয়া আদর্শ কলেজের প্রধান প্রবেশপথ।
 
২০২০ সালের জানুয়ারীর দিকে কলেজ কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কলেজের প্রধান ফটক নির্মাণের পরামর্শের পর কলেজের নিজস্ব অর্থায়নে প্রায় দশ লক্ষ টাকা ব্যয়ে বাংলা ও ইংরেজি সাহিত্যিকদের রচিত পঞ্চাশটি বই দিয়ে ফটকের দুইটি পিলার সজ্জিত করা হয়। বই পড়লেই পৃথিবীকে জানা সম্ভব, অধ্যক্ষ মোঃ মোফাজ্জল হোসেনের এই চিন্তাধারা থেকেই প্রধান ফটকের উপরে হাতের মুঠোয় পৃথিবীর মানচিত্র (গ্লোব) তৈরি করা হয়েছে।
 
প্রধান ফটকের পাশাপাশি কলেজে বইয়ের আদলে ভাষাশহীদদের স্মরণে নির্মিত হয়েছে শহীদ মিনার। দুর থেকে শহীদ মিনারে লক্ষ্য করলে মনে হয় যেন একটি বই পড়ার জন্য খুলে রাখা হয়েছে এবং সেই বইয়ে ভাষা আন্দোলনের চিত্র ফুটিয়ে তোলা হয়েছে।
 
তিন একর দশ শতাংশ জমির উপর নির্মিত এই কলেজে উচ্চ মাধ্যমিক এবং বাংলা বিভাগে স্নাতক পাস কোর্সে প্রায় ১৩ শত জন শিক্ষার্থী অধ্যয়ন করছেন। ২০০১ সালে ২৩ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে ২ জন পাশ করেছিল এবং ২০০৪ সাল থেকে কলেজের শিক্ষার হার ৯৭ শতাংশে উন্নিত হয়। যা বর্তমানেও অব্যাহত রয়েছে।
 
কলেজের প্রভাষক এবং শিক্ষার্থীদের দুপুরের টিফিনের জন্য রয়েছে দশটাকায় আহারের ব্যবস্থা। যেখানে কলেজ চলাকালীন সময়ে সকল শিক্ষার্থী এবং শিক্ষকবৃন্দ দশ টাকা দিয়ে খেতে পারেন। দইখাওয়া আদর্শ কলেজের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি লিয়াকত হোসেন বাচ্চু বলেন, প্রধান ফটকটি বইয়ের আদলে গড়ার প্রধান লক্ষ্য হলো শিক্ষার্থীসহ সকল মানুষকে বই পাঠে আগ্রহী করে তোলা।
 
প্রধান ফটক নির্মাণে সার্বিক সহযোগিতা করেছেন বুয়েটের নেভাল আর্কিটেক্চার আসাদুজ্জামান শাকিল। কলেজের অধ্যক্ষ মোঃ মোফাজ্জল হোসেনের পরিকল্পনা অনুযায়ী প্রধান ফটক নির্মাণের কাজ করেছেন সাবেক শিক্ষার্থী গৌরাঙ্গ রায়।
 
দইখাওয়া আদর্শ কলেজের অধ্যক্ষ মোঃ মোফাজ্জল হোসেন বলেন, কলেজ প্রতিষ্ঠার পর থেকেই প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষকে শিক্ষার প্রতি আগ্রহী করতে বিভিন্ন কার্যক্রম হাতে নেওয়া হয়েছিল, তারই ধারাবাহিকতায় ২০২০ সালে প্রায় দশ লক্ষ টাকা ব্যয়ে বইয়ের আদলে প্রধান ফটক নির্মাণের কাজ শুরু করা হয়। প্রায় এক বছর কাজ করে কলেজের প্রধান ফটকটি নির্মাণ সম্পন্ন হয়েছে। এখন কলেজের বেষ্টনী নির্মাণ করার প্রক্রিয়া চলছে।


আপনার মূল্যবান মতামত দিন: