বিশ্ববিদ্যালয় খোলার দাবিতে হাবিপ্রবিতে মানববন্ধন, ৪৮ ঘন্টার আল্টিমেটাম

মশিউর রহমান,হাবিপ্রবিঃ | ২৪ মে ২০২১, ২১:৩৪

ছবি : সময় ট্রিবিউন

স্বাস্থ্যবিধি মেনে অবিলম্বে দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার দাবিতে মানববন্ধন করেছেন হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ( হাবিপ্রবি ) অধ্যয়নরত সাধারণ শিক্ষার্থীরা।

সোমবার ( ২৪ মে ) সকাল ১১ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে ঢাকা- দিনাজপুর মহাসড়ক ও প্রশাসনিক ভবনের সম্মুখে তারা এ মানববন্ধন করেন। মানববন্ধন শেষে সাধারণ শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক ডা. মোঃ ফজরুল হকের মাধ্যমে উপাচার্য অধ্যাপক ড. বিধান চন্দ্র হালদার ( রুটিন দায়িত্ব ) বরাবর স্বারকলিপি দেন।

স্বারকলিপিতে শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে চারটি দাবি জানানো হয়।

১. স্বাস্থ্যবিধি মেনে আটকে থাকা সকল সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষা স্ব-শরীরে গ্রহণ করা হোক।

২. অতিদ্রুত বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল আবাসিক হল খুলে দেয়া হোক।

৩. অতিদ্রুত প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে ভ্যাক্সিনেশনের আওতায় আনা হোক।

৪. সেশন জটের হাত থেকে শিক্ষার্থীদের রক্ষায় অতিদ্রুত প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হোক


বিশ্ববিদ্যালয় খোলার দাবিতে সারাদেশের ন্যায় হাবিপ্রবিতেও মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে । মানববন্ধনে উপস্থিত শিক্ষার্থীরা আগামী ৪৮ ঘন্টার মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দেবার আল্টিমেটাম দিয়েছে৷ নাহলে মানববন্ধন থেকে কঠোর আন্দোলনের হুশিয়ারি দেয়া হয়েছে। শিক্ষার্থীদের
দাবি, "যানবাহন, দোকান-হোটেল-রেস্তোরা সবকিছুই খোলা রেখে বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো শিক্ষিত জাতি গঠনের পবিত্র প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখা সত্যিই হাস্যকর"। তাঁরা আরও দাবি করেছে " অবিলম্বে বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দেবার"

মানববন্ধন সম্পর্কে জানতে চাইলে সিভিল ইন্জিনিয়ারিং বিভাগের ১৭ ব্যাচের শিক্ষার্থী মোঃমামুন বলেন,"গতবছর ১৭ মার্চ থেকে আজ অবধি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ। শিক্ষাজীবন স্থবির হয়ে পড়েছে। সেশনজট দানা বাঁধছে কঠিনভাবে। লকডাউনে যানবাহনসহ সবকিছু চললেও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ। অবিলম্বে বিশ্ববিদ্যালয় সহ সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেবার দাবি জানাচ্ছি। "

মানববন্ধনে উপস্থিত তড়িৎ ও ইলেকট্রনিক প্রকৌশল বিভাগের ২০ব্যাচের শিক্ষার্থী ফারজানা ফাইজা মুস্তারী বলেন " আমাদের অনলাইনে দুইটা সেমিস্টার শেষ হয়ে গেছে। কিন্তু কোনো পরিক্ষা হয় নি। এতে করে দুইটা সেমিস্টারের পড়া একসঙ্গে চালানো অসম্ভব এবং কষ্টদায়ক। অবিলম্বে স্বশরীরে
স্বাস্থ্যবিধি মেনে পরিক্ষা নেয়া হোক এই দাবি "।

রসায়ন বিভাগের আরেক শিক্ষার্থী মোঃ পারভেজ শরীফ বলেছেন," অবিলম্বে বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দেয়া হোক। শিক্ষাজীবন নিয়ে হতাশায় ভুগছি "

ফিনান্স এন্ড ব্যাংকিং বিভাগের শিক্ষার্থী নাইম ইসলাম অনিক বলেছেন, "শেষ কথা,বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দেয়া হোক এবং অবিলম্বে শিক্ষাজীবন স্বাভাবিক করে দিন "।


এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রুটিন উপাচার্য বলেন, " আমরা শিক্ষামন্ত্রনালয়ের দিকে তাকিয়ে আছি। তারা প্রজ্ঞাপন দিলেই আমরা অতি অল্প সময়ের মাঝে ডীন কমিটির মিটিং এ বসে পরীক্ষা নেয়ার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে পারবো। মন্ত্রনালয় যদি স্ব-শরীরে পরীক্ষা নেয়ার ব্যাপারে সুপারিশ করে তবে স্ব-শরীরে পরীক্ষা নেয়া হবে। অন্যথায় যদি অনলাইনে পরীক্ষা নেয়ার ব্যাপারে সুপারিশ করে তবে অনলাইনে পরীক্ষা নেয়া হবে। শিক্ষার্থীদের প্রতি আহ্বান থাকবে তারা যাতে লেখাপড়ার মধ্যেই থাকে। কারণ আমি ব্যক্তিগতভাবে প্রত্যাশা করছি দ্রুতই একটি সিদ্ধান্ত আসবে "।

উপস্থিত ছাত্র প্রতিনিধিরা বলেন, গত মার্চ মাসে যখন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খােলার দাবিতে সারাদেশে জোরালাে আন্দোলন শুরু হয় তখন শিক্ষামন্ত্রী বলেছিলেন, ১৭ মে হল ও ২৪ মে ক্যাম্পাস খুলে শিক্ষা-কার্যক্রম স্বাভাবিক করা হবে এবং তার আগে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ভ্যাকসিনের আওতায় নিয়ে আসা হবে। কিন্তু হাতে দু মাস সময় পেয়েও এখন পর্যন্ত শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ভ্যাকসিনের আওতায় আনেনি। আমাদের ভবিষ্যৎ জীবন অনিশ্চয়তার মুখে। কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বড় অংশই নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান। শিক্ষাজীবন শেষে পরিবারের হাল ধরতে হয়। এভাবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকার ফলে সাধারণ শিক্ষার্থীদের দুর্দশা চরমে পৌঁছেছে। দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে। আন্দোলনে যাওয়া ছাড়া সামনে কোনো পথ খোলা নেই।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: