সরকারি-বেসরকারি স্কুলে প্রথম থেকে নবম শ্রেণিতে ভর্তিতে শিক্ষার্থী নির্বাচনে ডিজিটাল লটারি অনুষ্ঠিত হয়েছে। মঙ্গলবার (২৮ নভেম্বর) সফটওয়্যারের মাধ্যমে দ্বৈবচয়ন পদ্ধতিতে এ লটারি করা হয়। ভর্তির জন্য নির্বাচিত শিক্ষার্থীদের এরই মধ্যে এসএমএস পাঠিয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি)।
নির্বাচিত শিক্ষার্থীদের পাঁচদিনের মধ্যে ভর্তি সম্পন্ন করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। মাউশি জানিয়েছে, আগামী ১৪ ডিসেম্বরের মধ্যে প্রথম তালিকা, প্রথম অপেক্ষমাণ তালিকা ও দ্বিতীয় অপেক্ষমাণ তালিকা থেকে তিন ধাপে ভর্তি শেষ করতে হবে।
তবে কোন প্রতিষ্ঠান কবে থেকে ভর্তি শুরু করবে, তা স্ব স্ব প্রতিষ্ঠানই সিদ্ধান্ত নেবে। যেদিন থেকে প্রথম তালিকার শিক্ষার্থীদের ভর্তি শুরু করা হবে, সেদিন থেকে পাঁচদিনের মধ্যে প্রক্রিয়া শেষ করতে হবে।
মাউশি কর্মকর্তারা বলছেন, কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান চাইলে বুধবার (২৯ নভেম্বর) থেকেও এ ভর্তি কার্যক্রম শুরু করতে পারে। তবে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বেশিরভাগ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আগামী ১ ডিসেম্বর থেকে ভর্তি শুরু করবে।
ভর্তির সময় শিক্ষার্থীদের কোন কোন কাগজপত্র জমা দিতে হবে তা নোটিশ দিয়ে জানিয়ে দিচ্ছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো। মাউশিও ভর্তি নির্দেশনায় এ বিষয়ে বিস্তারিত জানিয়েছে।
মাউশি ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর বিজ্ঞপ্তির তথ্যমতে, ভর্তির ক্ষেত্রে নির্বাচিত শিক্ষার্থীর মূল আবেদনপত্র, লটারির ফলাফলের কপি (নিজ), শিক্ষার্থীর মূল জন্মসনদ, জন্মনিবন্ধন সনদের অনলাইন কপি, শিক্ষার্থীর বাবা-মায়ের জাতীয় পরিচয়পত্রের (এনআইডি) মূল কপি লাগবে।
কোটার ক্ষেত্রে যা যা লাগবে
ক্যাচমেন্ট এরিয়ার ক্ষেত্রে স্থানীয় কাউন্সিলর কর্তৃক অভিভাবকের নামে ইস্যুকৃত প্রত্যয়নপত্র জমা দিতে হবে। সহোদর কোটার ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট স্কুলের সহকারী প্রধান শিক্ষক কর্তৃক প্রত্যয়নপত্র। বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান বা নাতি-নাতনি, শিক্ষা মন্ত্রণালয় কোটা এবং প্রতিবন্ধী কোটার ক্ষেত্রে মাউশির ভর্তি নীতিমালা অনুযায়ী প্রয়োজনীয় প্রত্যয়নপত্রের মূল কপি দেখাতে হবে। এছাড়া এজিবি কলোনির ক্ষেত্রে বাবা অথবা মায়ের নামে ইস্যুকৃত বরাদ্দের চিঠি, পজিশন লেটার ও বেতনের আই-বাসের (i-bas) সর্বশেষ কপি জমা দিতে হবে।
নির্বাচিতরা যে কারণে বাদ পড়তে পারে
ভর্তির সময় লটারির মাধ্যমে নির্বাচিত শিক্ষার্থীদের কাগজপত্র পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে যাচাই করার নির্দেশনা দিয়েছে মাউশি। কেউ যদি মিথ্যা তথ্য দিয়ে লটারির মাধ্যমে নির্বাচিত হয়ে থাকে (যাচাই সাপেক্ষে), তাকে ভর্তি করা যাবে না। কোনো আবেদনকারী তথ্য পরিবর্তন করে একাধিকবার আবেদন করে থাকলে ডিজিটাল লটারিতে তার ভর্তির নির্বাচন বাতিল বলে গণ্য হবে।
অন্যদিকে নির্দেশনা অনুসরণ না করে বিধিবহির্ভূতভাবে কোনো শিক্ষার্থী ভর্তি করা হলে এবং পরে তা প্রমাণিত হলে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানপ্রধান দায়ী থাকবেন বলেও ভর্তি নির্দেশনায় উল্লেখ করেছে মাউশি।
লটারির ফলাফল ই-মেইলে স্কুলপ্রধানদের কাছে পাঠিয়ে দিয়েছে মাউশি। প্রকাশিত ফলাফলে দেখা যায়, দেশের ৬৫৮টি সরকারি স্কুলে প্রথম তালিকায় ১ লাখ ৩৯ জনকে ভর্তির জন্য মনোনীত করা হয়েছে। এরমধ্যে ৫৩ হাজার ১১ জন ছাত্র ও ৪৭ হাজার ২৬ জন ছাত্রী। তৃতীয় লিঙ্গের রয়েছে দুজন। অন্যদিকে ৩ হাজার ১৮৮টি বেসরকারি স্কুলে ভর্তির সুযোগ পেয়েছে ২ লাখ ৫ হাজার ৪৮৯ জন শিক্ষার্থী।
এছাড়া দুটি অপেক্ষমাণ তালিকা প্রকাশ করেছে মাউশি। তাতে ২ লাখ ৯৯ হাজার ৮৩ শিক্ষার্থীকে নির্বাচন করা হয়েছে। প্রথম অপেক্ষমাণ তালিকায় সরকারি স্কুলে সুযোগ পেয়েছে ৮০ হাজার ৪৭৯ জন এবং বেসরকারিতে ৯৬ হাজার ২১৮ জন। দ্বিতীয় অপেক্ষমাণ তালিকায় সরকারি স্কুলে সুযোগ পেয়েছে ৫৭ হাজার ৭৭৪ জন এবং বেসরকারিতে ৬৪ হাজার ৬১২ জন।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: