লিফট কেনাকাটা ও তদারকির নামে তুরস্ক সফরে যাচ্ছে পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (পাবিপ্রবি) সহ-উপাচার্য এস এম মোস্তফা কামাল খানসহ ৬ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল। আগামী ৭ জুন সফরে গিয়ে তাদের ফেরার কথা রয়েছে ১৪ জুন।
এ ঘটনা জানার পর শুরু হয়েছে নানা আলোচনা, সমালোচনা। তবে প্রকল্প পরিচালক ও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের দাবি, নিয়মতান্ত্রিকভাবে ঠিকাদারের সরবরাহ করার আগে লিফটের মান যাচাইয়ের অংশ হিসেবে এই সফরের আয়োজন করা হয়েছে। যা ঠিকাদারের শিডিউলে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এ জন্য আলাদাভাবে কোনো অর্থ খরচ হচ্ছে না।
জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য এস এম মোস্তফা কামাল খানের নেতৃত্বে ছয় সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল তুরস্কে যাচ্ছে লিফট কিনতে। ৯ মে এই সফরের নির্ধারিত দিন থাকলেও তারা ভ্রমণ পিছিয়ে আগামী ৬ জুন তুরস্কের উদ্দেশে যাত্রা করবে। সেখানে তারা ১০ দিন থাকবে। সফরের বিষয়টি সম্প্রতি চিঠি দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারকে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকল্প পরিচালক, যিনি নিজেও এই ভ্রমণকারীদের একজন।
পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় উন্নয়ন শীর্ষক প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, ১২ তলা বিশিষ্ট একাডেমিক ভবন দুইটি, দশতলা বিশিষ্ট শিক্ষার্থীদের আবাসিক হল দুইটি এবং দশতলা বিশিষ্ট প্রশাসনিক ভবন একটিসহ মোট পাঁচটি আধুনিক ভবন নির্মাণের কাজ চলছে। নির্মাণাধীন এসব ভবনের জন্য কেনা হবে ২৫টি লিফট। আর সেই লিফট কেনাকাটা ও তদারকির নামে তুরস্ক সফরে যাচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি প্রতিনিধি দল।
৬ সদস্যের প্রতিনিধি দলের বাকি সদস্যরা হলেন, কোষাধ্যক্ষ প্রফেসর ড. কে. এম. সালাহ্ উদ্দীন, প্রকল্প পরিচালক অবসরপ্রাপ্ত লেফটেনেন্ট কর্নেল জি এম আজিজুর রহমান, প্রকৌশলী ফরীদ আহম্মেদ, রিপন আলী, জহির মুহা: জিয়াউল আবেদীন।
তবে নিয়মতান্ত্রিকভাবে ঠিকাদারের সরবরাহ করার আগে লিফটের মান যাচাই করতে এই সফরের আয়োজন করা হয়েছে বলে দাবি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের। তারা জানান, বরং লিফটের মান যাচাইয়ে একাধিক সফরকে একসঙ্গে করে একটা সফর করায় খরচ সাশ্রয় করা হয়েছে।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় উন্নয়ন প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক অবসরপ্রাপ্ত লেফটেনেন্ট কর্নেল জি এম আজিজুর রহমান বলেন, ২০১৮ সালে যখন প্রকল্পটির কাজ পান যেসব ঠিকাদার, তখন সেই প্রকল্পের মধ্যেই সবকিছু সংযুক্ত রয়েছে। সেকারণে লিফট সরবরাহ করার জন্য আলাদা কোনো ঠিকাদার নিয়োগ করা হয়নি। সেইসঙ্গে লিফটের যে বিশদ বিবরণ টেন্ডারে উল্লেখ করা হয়েছে সেখানে মান যাচাই বাছাই করতে প্রি শিপমেন্ট ইন্সপেকশনের কথা রয়েছে। যার ব্যয় ঠিকাদারই বহন করবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো অতিরিক্ত অর্থ খরচ হবে না।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. হাফিজা খাতুন বলেন, এখানে শুধু নয়, যেকোনো জায়গায় যখন লিফট আনা হয় তখন সমস্ত জায়গা থেকে তারা ইন্সপেকশনে যান। এটা নতুন কিছু না, পুরনো প্র্যাকটিস। ২০১৮ সালে যখন প্রকল্প সাইন হয়েছিল তখনই এটা অন্তর্ভুক্ত ছিল। সেই হিসেবে এখন আমাদের টিম যাচ্ছে।
উল্লেখ্য, পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন শীর্ষক প্রকল্পের কাজ শুরু হয় ২০১৮ সালের ১ জুলাই। প্রকল্পের প্রাথমিক অনুমোদিত ডিপিপি ব্যয় ছিল ৪৮০ কোটি ৭ টাকা। প্রকল্পের মেয়াদ দু’বার বাড়িয়ে ব্যয় বাড়ানো হয়েছে ৩৯ কোটি ৮৫ লাখ টাকা। সর্বশেষ মেয়াদে প্রকল্পের কাজ শেষ হবার কথা রয়েছে এ বছরের ৩১ ডিসেম্বর।
এসটি/এসকে
এই বিভাগের অন্যান্য খবর
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: