ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) ঐতিহাসিক ৭ই মার্চ উদযাপন করা হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার (৭ মার্চ) ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র (টিএসসি) মিলনায়তনে 'জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ৭ই মার্চের ভাষণের গুরুত্ব ও তাৎপর্য' শীর্ষক আলোচনা সভার আয়োজন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. মো. আখতারুজ্জামান সভাপতি হিসেবে উপস্থিত ছিএল।
সভায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মমতাজ উদ্দিন আহমেদ, শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. নিজামুল হক ভূঁইয়া, সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. জিনাত হুদা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকতসহ অফিসার্স এসোসিয়েশন, তৃতীয় শ্রেণী কর্মচারী সমিতি, কারিগরী কর্মচারী সমিতি ও ৪র্থ শ্রেণী কর্মচারী ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন। আলোচনা সভা পরিচালনা করেন রেজিস্ট্রার প্রবীর কুমার সরকার।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান বলেন, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ৭ই মার্চের ভাষণ সকল যুগে সকল জাতি, সম্প্রদায়, গণতন্ত্র ও মুক্তিকামী মানুষের কাছে অনুপ্রেরণার উৎস। এই ঐতিহাসিক ভাষণ গণমানুষকে সম্পৃক্ত করে সশস্ত্র সংগ্রামের মাধ্যমে একটি স্বাধীন জাতিরাষ্ট্র বিনির্মাণের ক্ষেত্রে বিশ্বে এক অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। তাই বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণ শুধু বাঙালির সম্পদ নয়, এখন তা বিশ্ব সম্পদে পরিণত হয়েছে।
উপাচার্য বলেন, ১৯৭১ সালের ২রা মার্চ বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলাদেশের মানচিত্র খচিত পতাকা উত্তোলন করা হয়। ৭ই মার্চের জনসভায় এই পতাকা গণমানুষের হাতে পৌঁছানোর মাধ্যমে স্বাধীনতা যুদ্ধের জন্য গণসম্পৃক্ততা তৈরির এক অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন বঙ্গবন্ধু। স্বাধীনতা বিরোধী ষড়যন্ত্রকারীরা ৭ই মার্চের ভাষণকে এদেশে নিষিদ্ধ করে বিভিন্ন সময় বিকৃত ইতিহাস তৈরির অপচেষ্টা চালায়। কিন্তু এই ভাষণ ইউনেস্কো'র 'মেমোরি অব দ্য ওয়ার্ল্ড রেজিস্টার'-এ অন্তর্ভুক্তির মাধ্যমে ঐতিহাসিক স্বীকৃতি লাভ করায় ইতিহাস বিকৃতির সকল অপচেষ্টা ব্যর্থ হয়।
উপাচার্য আরও বলেন, সভ্যতা-সংস্কৃতির বিকাশ ও সংরক্ষণ এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের মাঝে বস্তুনিষ্ঠ ও সঠিক ইতিহাস ছড়িয়ে দিতে এই ভাষণের ঐতিহাসিক তাৎপর্য রয়েছে। মহান ভাষা আন্দোলন, মহান মুক্তিযুদ্ধসহ এদেশের ইতিহাস ও ঐতিহ্য ধারণ এবং বঙ্গবন্ধুর সংগ্রামী জীবন ও আদর্শে উজ্জীবিত হয়ে মানবিক মূল্যবোধ সম্পন্ন, তথ্য ও প্রযুক্তি সমৃদ্ধ স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের জন্য উপাচার্য তরুণ প্রজন্মের প্রতি আহ্বান জানান।
প্রো-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু'র সংগ্রামী জীবনের ইতিহাসই আমাদের স্বাধীনতার ইতিহাস। ৭ই মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণকে সর্বজনীন রূপ দেয়া এবং বিশ্বদরবারে ছড়িয়ে দেয়ার জন্য বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধামন্ত্রী শেখ হাসিনার নাম স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মমতাজ উদ্দিন আহমেদ ঐতিহাসিক ৭ই মার্চের ভাষণের পটভূমি তুলে ধরে বলেন, এই ভাষণের মাধ্যমেই বিশ্ব মানচিত্রে বাংলাদেশ স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভ করে।
ঐতিহাসিক ৭ই মার্চ উপলক্ষ্যে সকালে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামানের নেতৃত্বে ধানমণ্ডি ৩২ নম্বরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়। এসময় কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মমতাজ উদ্দিন আহমেদ, শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. নিজামুল হক ভূঁইয়া, সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. জিনাত হুদাসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: