বাণিজ্যমন্ত্রীর সাথে তেল-চিনি-পেঁয়াজ সিন্ডিকেটের কানামাছি খেলা কয়দিন চলবে- প্রশ্ন সুজনের

অর্ণব দাশ, চট্টগ্রাম প্রতিনিধি | ২১ মে ২০২৩, ০৮:১২

ছবি- সংগৃহীত

বাণিজ্যমন্ত্রীর সাথে তেল-চিনি-পেঁয়াজ সিন্ডিকেটের কানামাছি খেলা কয়দিন চলবে বলে প্রশ্ন রাখলেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের সাবেক প্রশাসক এবং চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি খোরশেদ আলম সুজন। আজ শনিবার (২০ মে ২০২৩ইং) এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে ভোগ্যপণ্যের উর্দ্ধগতিতে এ প্রশ্ন রাখেন তিনি।

এসময় সুজন বলেন বেশ কয়েকদিন ধরে বাজারে সয়াবিন তেল ও চিনির দাম বেড়েই চলছে। সম্প্রতি পেঁয়াজের দামও ক্রেতাদের নাগালের বাহিরে চলে গিয়েছে। পাশাপাশি আদার দামও বাড়ছে লাগামহীনভাবে। রান্নার গুরুত্বপূর্ণ উপাদানগুলোর দাম দফায় দফায় বেড়ে যাওয়ায় অস্থির সাধারণ ক্রেতা। নিত্য প্রয়োজনীয় এসব পণ্যের দাম বৃদ্ধি হওয়ায় মধ্যবিত্ত এবং নিম্ন আয়ের মানুষজন সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন। হঠাৎ করে পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধি করা হয়েছে। সিন্ডিকেট না হলে এসময় পেঁয়াজের এতো মূল্যবৃদ্ধি হতো না বলেও মত প্রকাশ করেন তিনি।

বাণিজ্যমন্ত্রী পেঁয়াজ আমদানির হুমকি দেওয়ার পরেও পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধি করা হচ্ছে। ইতিপূর্বে এভাবে চিনি ও ভোজ্য তেলের দাম বৃদ্ধি করা হয়েছে। বাজার থেকে ভোজ্য তেল উধাও করে বিভিন্ন গোডাউনে মজুদ করা হয়েছে। তাই সহসাই পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি না দিলে এর দাম আরো বাড়বে বলেও আশংকা প্রকাশ করেন তিনি। অত্যধিক দাম বৃদ্ধির ফলে হতাশ হয়ে পড়েছেন সাধারণ ক্রেতা। কৃষকের স্বার্থ বিবেচনা কিংবা দাম বৃদ্ধির কারণে প্রান্তিক কৃষক এর সুফল পাচ্ছে বলা হলেও মূলত কৃষকের হাতে কোন পেঁয়াজ নেই। সাধারণ কৃষক এর কোন সুবিধাই পাচ্ছে না। আমরা জানতে পেরেছি দেশে পেঁয়াজের বাম্পার ফলন হয়েছে। তারপরও বর্তমানে পণ্যটির দাম যেভাবে বাড়ছে, তা সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীদের কারসাজি ছাড়া আর কিছুই নয়।

বর্তমানে বাংলাদেশের কৃষি বিপণন ব্যবস্থা সম্পূর্ণভাবে কর্পোরেট সিন্ডিকেটের কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছে। দেশের ভোগ্যপণ্যের বাজারকে একচেটিয়া কর্পোরেট সিন্ডিকেটের কবল থেকে উদ্ধার করতে হবে। এজন্য পরিকল্পনা প্রণয়ন, সরবরাহ ব্যবস্থা এবং প্রয়োজনীয় পদক্ষেপই নিতে হবে বাণিজ্যমন্ত্রীকে। সামনে ঈদ উল আজহা, এ অবস্থায় পেঁয়াজ এবং আদার দাম বৃদ্ধি অশনি সংকেত বলেও মনে করেন সুজন। অতিসত্বর এসব পণ্য আমদানির মধ্য দিয়ে বাজারকে স্থিতিশীল করতে হবে। সাধারণ জনগন যাতে কোন ভাবেই কষ্ট না পায় সেদিকে নজর রাখতে হবে। মিল মালিক ও ডিলাররা সিন্ডিকেট করে প্রথমত পণ্যের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে পরে এসব পণ্যের দাম বাড়িয়ে দেয় বলে অভিযোগ ক্রেতা এবং সাধারণ ব্যবসায়ীর। এ অবস্থায় ক্রেতাদের কোন ধরণের সুখবর দিতে পারছেন না বাণিজ্যমন্ত্রী। তাই সাধারণ ভোক্তাদের মতো আমাদেরও প্রশ্ন বাণিজ্যমন্ত্রীর সাথে তেল-চিনি-পেঁয়াজ সিন্ডিকেটের কানামাছি খেলা কয়দিন চলবে? প্রতিনিয়ত আমদানিকারক এবং মিল মালিকরা সরবরাহ ঘাটতি দেখিয়ে বাড়িয়ে দেয় এসব পণ্যের দাম। সরকার বিভিন্ন পণ্যের দাম বেঁধে দিলেও আমদানিকারক কিংবা আড়তদার কেউই এসবের তোয়াক্কা করছে না। ইচ্ছেমতো তেল-চিনি-পেঁয়াজ-আদার দাম বাড়িয়ে বিক্রি করা হচ্ছে। আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশের ভোগ্যপণ্যের বাজার সবসময়ই ক্রেতাদের নাগালে রাখার জন্য প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা এবং নানা প্রকার সুযোগ সুবিধা দিয়ে থাকেন। তারপরও এক শ্রেণীর অসাধু সিন্ডিকেট ব্যবসায়ী জনগনকে জিম্মি করে তাদের ফায়দা হাসিল করতে চায়।

তাই এসব অসাধু ব্যবসায়ীদের চিহ্নিত করা আজ সময়ের দাবী। তাদের অসাধু মনোভাবের কারণে সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে। এজন্য বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কেই সর্বাগ্রে এগিয়ে আসতে হবে। বাজার যাতে সরকারের নিয়ন্ত্রণে থাকে এবং ভোক্তারা যাতে সুবিধা পায় সে ব্যবস্থাই করতে হবে। তাই কালবিলম্ব না করে আমদানির মাধ্যমে বাজারের সরবরাহ ব্যবস্থা স্থিতিশীল রাখার জন্য বাণিজ্যমন্ত্রীর নিকট সবিনয় অনুরোধ জানান নগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি খোরশেদ আলম সুজন।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: